দুর্বিষহ জীবনের কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চান সাঈদীর মামলার বাদী
যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে করা মামলার বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের এক নম্বর সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদার পরিবার নিয়ে অর্থকষ্টে দুঃসহ জীবন কাটাচ্ছেন। নিজের কষ্টের কথা প্রধানমন্ত্রীকে বলার জন্য তিনি ১৩ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেলে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক অবস্থা তাঁকে অবহিত করতে চান মাহবুবুল।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) একটি জাতীয় দৈনিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে মাহবুবুল এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে গণভবনের সামনে আছি।’
মাহবুবুল আলম হাওলাদারের করা মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা হয়।
মাহবুবুল আলম গণমাধ্যমকে বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াতে ইসলামীর নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলা করে তিনি প্রধান সাক্ষী হয়েছিলেন। সে মামলায় সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড হয়। কিন্তু এখন তাঁর নিজের জীবনই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে অর্থকষ্টে। গত চার বছরে প্রায় আট লাখ টাকা তাঁর ধারদেনা হয়ে গেছে।
মাহবুবুল আলম বর্তমানে হার্টের রোগী। একই সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগেও ভুগছেন তিনি। কিন্তু তার মাসে আয় মাত্র ১২ হাজার টাকা; যা মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা হিসেবে পেয়ে থাকেন। ওই টাকায় তার ঔষধ কেনা, সংসার চালানো এবং সন্তানদের পড়ালেখা চলছে না। নিজের এই অসহায়ত্বের কথা লজ্জায় কাউকে বলতেও পারেন না তিনি।
এদিকে ২০১৩ সালে তার বাড়িতে জামাত-শিবিরের হামলার পর থেকে নিরাপত্তায় পুলিশ প্রহরা রয়েছে। কিন্তু পুলিশনির্ভরতায় তাঁর স্বাভাবিক জীবনও পাল্টে গেছে।
তিনি বলেন, বলেন, ‘প্রায় পাঁচ-ছয় বছর ধরে আমার বসতঘরের সামনের রুমটি পুলিশ ক্যাম্প। আমার নিরাপত্তার জন্য চারজন পুলিশ থাকে। ঘরের লোকদের গোপনীয়তা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা বলতে কিছু আর নেই। পুলিশ ছাড়া কোথাও বের হওয়া যায় না। সামান্য বাজার করতে গেলেও সঙ্গে পুলিশ নিতে হয়। যেখানে হেঁটে যাওয়া যায়, সেখানে দুইটা রিকশা নিতে হয়। তাতে মাসে যাতায়াত খরচ হয় অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। আমার এই যন্ত্রণা কে দেখবে?’
বিষয়টি নিয়ে মাহবুবুল স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে গেলেও সন্তোষজনক কোনো সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
তিনি জানান, গেল পাঁচ-ছয় বছরে স্থানীয় সাংসদ, মন্ত্রী, আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে বারে বারে গেছেন। কিন্তু কারও সহযোগিতা পাননি, সবাই কেবল আশ্বাস দিয়েছেন।
শেয়ার করুন