কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিতের আহ্বান করে জাতিসঙ্ঘ
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর
সহকারী সেক্রেটারি
জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসঙ্ঘ। জাতিসঙ্ঘ
মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনারের অফিসের মুখপাত্র
রাভিনা শামদাসানি এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামীর নেতা মুহাম্মদ
কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর স্থগিত করতে আমরা
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
কামারুজ্জামানের বিচারকার্যে উল্লেখযোগ্যভাবে অনিয়ম
হয়েছে উল্লেখ করা এতে বলা হয়, বিচার কার্যক্রমে
স্বচ্ছতার আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মানা হয়নি। জাতিসঙ্ঘ
মানবাধিকার অফিস দীর্ঘদিন ধরে ট্রাইব্যুনালের
বিচার কার্যক্রমের স্বচ্ছতার ব্যাপারে সতর্ক করে
আসছে। বাংলাদেশ সরকারের এসব মৃতদণ্ড কার্যকর করা
উচিত হবে না। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল
২০১০ সালে এ পর্যন্ত ১৬টি রায় দিয়েছে। যার মধ্যে
১৪টিতে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা
বিরোধীদল জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাদী দলের সদস্য। তাদের সবার বিরুদ্ধে ১৯৭১
সালে মানবতাবিরোধী অপরাধ সঙ্ঘটনের অভিযোগ আনা
হয়েছে। ২০১৩ সালের তাদের একজন আব্দুল কাদের
মোল্লার দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। কামারুজ্জামানকে
২০১৩ সালের মে মাসে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
এরপর ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে আপিলের রায়েও তার
মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। গত ৫ মার্চ আপিলের রায়ের
ব্যাপারে তিনি স্বাধীন রিভিউ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের
আপিল বিভাগে আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনের মেরিটের
ওপর শুনানি ছাড়াই সংক্ষিপ্তভাবে তা খারিজ করে
দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বাংলাদেশ অনুমোদিত নাগরিক ও
রাজনৈতিক অধিকার সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির
ব্যাখ্যাদাতা জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিটি জোর
দিয়ে বলছে, মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে এমন বিচারের
ক্ষেত্রে যথাযথ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এবং অস্বচ্ছ বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেয়া জীবনের
অধিকারের লঙ্ঘন। বিবৃতি বলা হয়, যেসব ক্ষেত্রে
পরিপূর্ণ স্বচ্ছতা রক্ষা করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায়
রেখে বিচার করা হয়, সেক্ষেত্রেও জাতিসঙ্ঘ মৃত্যুদণ্ডের
বিরোধী। আমরা মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করতে এবং অমানবিক
শাস্তি বাতিলকারী রাষ্ট্রের কাতারে যোগ দিতে
বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
শেয়ার করুন