ভুমিকম্পের বিষয়ে কিছু সতর্কতা। নিজে জানুন, অন্যের সাথে শেয়ার করুন।
গতকাল বাংলাদেশে হয়ে গেল স্মরণকালের সবচাইতে
ভয়াবহ ভুমিকম্প। রেকর্ড বলছে ৭.৫ মাত্রার ভুমিকম্পসম্পন্ন হলো। আমরা এখনও অনেক ঝুকিপূর্ণঅবস্থানে আছি। আমরা কিছু সতর্কতা অবলম্বন করেকিছুটা ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে পারি। সেই বিষয় নিয়েআজকের লেখা। লেখাটি সবার সাথে শেয়ার করে ছড়িয়েদিন। সবাইকে সতর্ক করুন।♦ ভূমিকম্পের আগে করনীয়ঃ১/বাড়ির ভেতরে এবং বাইরে নিরাপদ স্থানগুলোচিহ্নিত করা জরুরী। যাতে ভূমিকম্পের সময় ভাবতে নাহয় কোথায় আশ্রয় নেবেন। বাসায় যারা ছোটতাদেরকে ভাল করে বুঝিয়ে দিন ।২/ভঙ্গুর জিনিস সবসময় বন্ধ শেলফে রাখা উচিত।৩/ভারি মালপত্র শেলফের নিচের দিকে রাখা ভালো।৪/লিক হওয়া গ্যাস লাইন, বৈদ্যুতিক লাইন মেরামতকরে নিন এবং নিয়মিত পরীক্ষা করুন।৫/মাঝে মাঝে মহড়া দিন যাতে সবাই আয়ত্ত করতেপারে।নিজের বাসায় সচেতন করুন, সাথে আপনারকমিউনিটিকেও।♦ভূমিকম্পের সময় ঘরের ভেতরে থাকলে করনীয়ঃ১/ভূমিকম্প শুরু হওয়ার সাথে সাথে মাটিতে হামাগুড়িদিয়ে বসে পড়ুন, শক্ত-মজবুত কোন আসবাবের নিচেঢুকে যেতে পারেন এবং সেটিকে হাত দিয়ে শক্ত করেজড়িয়ে ধরুন যাতে সরে না যায়। মনে রাখবেন, আমাদেরদেহের মধ্যে মাথা হল সবচেয়ে নমনীয় অঙ্গ, আসবাবেরআশ্রয় না পেলে হাত দিয়ে রক্ষা করুন।২/আসবাবপত্র না পেলে ঘরের ভেতরের দিকের দেয়ালেরনিচে বসে আশ্রয় নিতে পারেন। বাইরের দিকের দেয়ালবিপজ্জনক।৩/জানালার কাঁচ, আয়না,আলমারি, দেয়ালে ঝুলানোবস্তু থেকে দূরে থাকুন।৪/বহুতল ভবনের উপরের দিকে অবস্থান করলে ঘরেরভেতরে থাকাই ভাল। কারণ, নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোরপূর্বেই ভূমিকম্পের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। ৫/ভূকম্পনথেমে গেলে বের হয়ে আসুন।৬/নিচে নামতে চাইলে কোনোভাবেই লিফট ব্যবহারকরবেন না। সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে নামুন। নামার সময়মোবাইল ফোন আর ঘরের চাবিটা সম্ভব হলে হাতেনিয়ে নেবেন।৭/বিছানায় শোওয়া অবস্থায় থাকলে বেশি দূরে না গিয়েবিছানার নিচেই আশ্রয় নিন।♦ঘরের বাইরে থাকলে করনীয়ঃ১/খোলা জায়গা খুঁজে আশ্রয় নিন।২/লাইট পোস্ট, বিল্ডিং,গাছ অথবা বৈদ্যুতিক পোলেরনিচে দাঁড়াবেন না।৩/রাস্তায় ছোটাছুটি করবেন না। মাথার উপর কাঁচেরটুকরা, ল্যাম্পপোস্ট অথবা বৈদ্যুতিক তাঁর ছিঁড়ে পড়েদুর্ঘটনা ঘটতে পারে।♦চলমান গাড়িতে থাকলে করনীয়ঃ১/গাড়ি থামিয়ে খোলা জায়গায় পার্ক করে ভেতরেইআশ্রয় নিন।২/কখনই ব্রিজ, ফ্লাইওভারে থামবেন না।৩/ভূমিকম্প না থামা পর্যন্ত গাড়ির ভেতরেই অপেক্ষাকরুন।♦ভূমিকম্পের পরে করনীয়ঃ১/ভূমিকম্প শেষ হলেও আরও একটি-দুটি মৃদু কম্পনেরজন্য প্রস্তুত থাকুন। এই আফটার শকের কোননির্দিষ্ট সময় নেই। এবারের আফটার শক এক ঘণ্টারমধ্যেই দু’বার হয়ে যায়। কখনও এক মাসের মধ্যেও হতেপারে।২/যথাসম্ভব শান্ত থাকুন। কম্পন থেমে গেলেওজিনিসপত্র পড়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, তারপরবের হন।৩/নিজে আহত কিনা পরীক্ষা করুন, অপরকে সাহায্যকরুন।বাড়িঘরের ক্ষতি পরবেক্ষণ করুন। নিরাপদ না হলেসবাইকে নিয়ে বের হয়ে যান।৪/গ্যাসের সামান্যতম গন্ধ পেলে জানালা খুলে বের হয়েযান এবং দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করুন।৫/কোথাও বৈদ্যুতিক স্পার্ক চোখে পড়লে মেইনফিউজ বন্ধ করে দিন।ক্ষতিগ্রস্ত বিল্ডিং থেকে দূরে থাকুন।♦ধ্বংসস্তুপে আটকে পড়লে করনীয়ঃ১/আগুন জ্বালাবেন না। বাড়িটিতে গ্যাসের লাইন লিকথাকলে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।২/হাত অথবা রুমাল দিয়ে নাক মুখ ঢেকে নিন।৩/ধীরে নড়াচড়া করুন এবং উদ্ধারের অপেক্ষায় থাকুন।৪/উদ্ধার কাজের সময় নিজের অস্তিত্ব জানান দিতেপাইপ অথবা দেয়ালে আস্তে আস্তে টোকা দিয়ে শব্দকরতে পারেন, চিৎকার না করাটাই শ্রেয়, এতে প্রচুরপরিমাণে ধূলা নিঃশ্বাসের সাথে ঢুকে যেতে পারে।উপরের “করনীয়” গুলো আমরা সবাই ই মোটামুটিজানি। জাপানের উদাহরণটা টেনে আনতেই হয়। ওদেরস্কুলে স্কুলে ভূমিকম্প সম্পর্কে বাচ্চাদের শেখানোহয়, বাসায়ও তাই। আমার বিশ্বাস এবারের পরআপনারা নিজেরাও সচেতন হবেন এবং সাথে আপনাদেরবাচ্চারাও।
শেয়ার করুন