আমেরিকা আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে বেশি নাক গলাচ্ছে : তোফায়েল
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে
আমেরিকা কোনো ভুমিকাই রাখছে না দাবি
করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদ
বলেছেন, অর্থনীতির চেয়ে তারা আমাদের
দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেই বেশি
নাক গলাচ্ছে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের
সময় যা হয়েছে, পরবর্তীতে তা ভুলে গিয়ে
আমরা সবসময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে
চেয়েছি। সে সময় নিক্সন বলেছিলেন,
বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুঁড়ি। তবে এখন আর
বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুঁড়ি নয়।
আজ সোমবার রাজধানীর রেডিসন হোটেলে
দুই দিনব্যাপি ‘বাংলাদেশ ডেনিম
এক্সপো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান
অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
বক্তব্য রাখেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের
ডেলিগেঁস প্রধান ও অ্যাম্বাসেডর পিয়্যার
মাইয়াদোন, ঢাকায় নিযুক্ত কানাডিয়ান
হাইকমিশনার বিনোইট পিয়্যার লারামি,
বিজেএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলাম,
এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশন অব
বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আব্দুস
সালাম মুর্শেদী, বাংলাদেশ ডেনিম
এক্সপো’র প্রতিষ্ঠাতা মোস্তাফিজ উদ্দিন
প্রমূখ।
দু’দিনব্যাপি এ প্রদর্শনীতে আয়োজক
বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন,
জাপান, ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড,
তুরস্ক, চীন, সান মারিনোর ২৫টি ডেনিম
ও জিনস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অংশ
নিচ্ছে। যোগ দিয়েছে ইউরোপ, আমেরিকা ও
যুক্তরাজ্যের প্রতিষ্ঠিত গার্মেন্ট
উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ি ও ফ্যাশন
পেশাজীবী। এ উপলক্ষে বিভিন্ন বিষয়ের
ওপর চারটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়,
বর্তমানে ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ
দ্বিতীয় বৃহত্তম ডেনিম রফতানিকারী দেশ
এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৃতীয়।
বিশ্বের ৪০০ টি ডেনিম উৎপাদনকারী
প্রতিষ্ঠান বছরে ১৮০ মিলিয়ন পিছ
ডেনিম জিনস তৈরি করে। বাংলাদেশের
২৫টি ডেনিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে
বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ৮৩৪ মিলিয়ন
ইউএস ডলার। চলতি বছরের ১১ থেকে ১২
নভেম্বর পরবর্তি বাংলাদেশ ডেনিম
এক্সপোর আয়োজন করা হবে বলে আয়োজক
প্রতিষ্ঠান সূত্র জানায়।
তোফায়েল আহমদ বলেন, ঢাকায় ইউরোপীয়
ইউনিয়নের ডেলিগেটস প্রধান ও
অ্যাম্বাসেডর রয়েছেন, কানাডিয়ান
হাইকমিশনার রয়েছেন। তারা
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য
পরামর্শ দেন। কিন্তু কখনোই বাংলাদেশের
অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামান
না। অন্যদিকে, সবকিছু নিয়ে কথা বললেও
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আসলে বাংলাদেশকে
কিছুই দিচ্ছে না। আমাদের ৯৭ শতাংশ পণ্য
সেখানে শুল্ক দিয়ে প্রবেশ করতে হয়, যার
পরিমাণ ২৪ বিলিয়ন ডলার। কানাডা,
নেদারল্যান্ডস, জাপান, ভারত সব দেশেই
আমরা দু’একটি পণ্য বাদে অন্যান্য পণ্যে
শুল্ক মুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকি। একমাত্র
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদেরকে কোনো
ধরনের বাণিজ্যিক সুবিধা দিচ্ছে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রানা প্লাজা
ট্রাজেডির পর আমাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া
হয়েছিল, ১৬টি বিষয় নিশ্চিত করতে
পারলে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেয়া
হবে। গত বছরের এপ্রিলেই আমরা তা
অর্জন করি। আফ্রিকা এবং সাহারা
অঞ্চলের দেশগুলোকে এ সুবিধা দেয়া
হয়েছে। কিন্তু আমাদের জিএসপি দেয়া
হয়নি। তিনি বলেন, আমাকে বলা হয়েছে
শ্রমিকদের অধিকারে ট্রেড ইউনিয়ন
প্রতিষ্ঠার কথা। আমি বলেছিলাম, সব
শর্তই আমরা পূরণ করেছি, তোমরা আমাদের
জিএসপি ফিরিয়ে দাও। কিন্তু আমেরিকা
জানায়, এটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার
(ডব্লিওটিও) বিষয়। তখন আমিও তাদের
বলি, শ্রমিক অধিকারের বিষয়টি তো
তাহলে আইএলও ইস্যু।
শেয়ার করুন