বাংলাদেশে ঢাকার পল্লবীতে ফ্ল্যাটে দিন দুপুরে মামাসহ গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা
রাজধানীর পল্লবীর একটি ফ্ল্যাটে গতকাল বুধবার দিনে দুপুরে গৃহবধূ ও তার
মামাকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহতরা হলেন, গৃহবধূ সুইটি আক্তার (২৫) এবং তার মামা
আমিনুল ইসলাম (৪০)। এ ঘটনায় আহত হয়েছে গৃহবধূর ৫ বছরের শিশু পুত্র। হত্যাকা-ের কারণ
ও ঘাতকদের সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে কিছুই জানাতে পারে নি পুলিশ কিংবা নিহতের পরিবার। খবর
পেয়ে পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিআইডি’র
ক্রাইমসিন ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে। এ ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ
করছে। পল্লবী থানার ওসি জিয়াউজ্জামান জানান, পল্লবী আবাসিক এলাকার ইষ্টার্ণ হাউজিংয়ের ২০
নম্বর রোডের ৯ নং হোল্ডিংস্থ ‘ক্রিস্টাল ডি আমিন’ নামে ৭ তলা ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় স্ত্রী সুইটি
আক্তার ও একমাত্র শিশু পুত্রকে নিয়ে বসবাস করতেন জাহিদুল ইসলাম। জাহিদুল ইসলাম ঢাকা
বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) রুপনগর অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী। তার স্ত্রী
নিহত সুইটি ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার নামের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানের
চেয়ারম্যান ছিলেন। গতকাল বেলা দুইটার দিকে মোটর সাইকেলযোগে ২ যুবক ওই বাসার সামনে
যায়। তারা নিজেদেরকে জাহিদুল ইসলামের আত্মীয় পরিচয় দিলে দারোয়ান তাদের ভেতরে ঢুকতে
দেয়। তারা সোজা চলে যায় জাহিদুলের ফ্ল্যাটে। কলিং বেল টিপতেই সুইটি এসে দরজা খোলেন। এ
সময় দুর্বৃত্তরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। সুইটির চিৎকার শুনে মামা
আমিনুল দুর্বৃত্তদের বাধা দেয়। এ সময় দুর্বৃত্তরা তাকেও কোপাতে থাকে। সুইটি-জাহিদুল দম্পতির
পাঁচ বছরের ছেলে সাদ চিৎকার শুনে দৌড়ে আসে। দুর্বৃত্তরা তাকেও আঘাত করে। এতে শিশুটি ভয়ে
বাথরুমে লুকিয়ে পড়ে। সুইটি ও তার মামার মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। আনুমানিক
আধা ঘন্টা অবস্থান করার পর দুর্বৃত্তরা নিচে নেমে আসে। নিয়ে আসা মোটর সাইকেলযোগেই তারা
পালিয়ে যায়। বেলা ৩টার দিকে সুইটির স্বামী জাহিদুল দুপুরে ভাত খেতে বাসায় এসে মামা শ্বশুর ও
স্ত্রীর রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। পরে লাশ দু’টি
ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশের পল্লবী জোনের
সহকারী কমিশনার কামাল হোসেন জানান, ওই বাসা জাহিদের। তার মামা শ্বশুর সেখানে বেড়াতে
এসেছিলেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী আবদুল খালেক এবং নিহত
সুইটির ব্যবসায়িক অংশীদার শাহীনকে আটক করা হয়েছে। ঘাতকদের ধরতে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে
অভিযান চালাচ্ছে। এদিকে জাহিদুলের বন্ধু সুমনের দাবি, পূর্ব শত্রুতা কিংবা চাঁদা না দেয়ার জের
ধরে এ হত্যাকা- ঘটেছে। চাঁদার দাবিতে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা এর আগে জাহিদুল ইসলামের পরিবারকে
কয়েক দফা হুমকি দিয়েছিল বলে জানান সুমন।
শেয়ার করুন