ফাইনালে বার্সা, চোখ ট্রেবলে
সেমিফাইনালের প্রধম লেগে নিজেদের মাঠ ক্যাম্প ন্যুতে বায়ার্ন মিউনিখকে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত করে
চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে এক পা দিয়েই রেখেছিলো বার্সেলোনা। তবে গেলপরশু রাতে তাদের মাঠ
আলিয়েঞ্জ অ্যারেনাতে গিয়ে যদিও ৩-২ গোলে হেরেছে, তারপরও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ৫-৩
গোলে জিতে ফাইনালে উঠে গেছে লুইস এনরিকের দল। বার্লিনের ফাইনালে খেলতে হলে জার্মান
চ্যাম্পিয়নদের প্রয়োজন ছিল চার গোলের ব্যবধানে জয়। প্রাণপণ খেলে ম্যাচটি জিতলেও হতাশা
নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় পেপ গার্দিওলার শিষ্যদের। মেহদি বেনাতিয়ার গোলে পিছিয়ে পড়া
বার্সেলোনাকে জোড়া গোল করে ফাইনালে নেয়াটা প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন নেইমার। দ্বিতীয়ার্ধে
রবের্ত লেভানদোভস্কি আর থমাস মুলারের গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়া বায়ার্নের সঙ্গী হয় শুধুই
হতাশা। এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠল বার্সা। দ্বিতীয়বারের মতো ট্রেবল
জয়ের লক্ষ্যটা আর খুব দূরে মনে হচ্ছে না কাতালান জায়ান্টদের জন্য। লা লিগার শিরোপা প্রায়
নিশ্চিত করা দলটি স্প্যানিশ কাপের ফাইনালেও উঠে আছে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল নিশ্চিত
হওয়ার পর একটি স্বপ্নের কথা সরাসরি জানিয়েছেন লুইস এনরিকে। লা লিগা, স্প্যানিশ লিগ,
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-এ মৌসুমে তিনটি শিরোপাই জিততে চান বার্সেলোনা কোচ। ম্যাচ শেষের সংবাদ
সম্মেলনে ফাইনালে ওঠার সন্তুষ্টির কথা বলার সঙ্গে নিজেদের চাওয়া-পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন
এনরিকে, ‘আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হচ্ছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন হওয়া। তিনটি প্রতিযোগিতাই
জিততে একটি করে ম্যাচ জয় দূরে আছি আমরা। এটা আমাদের লক্ষ্য।’ আগেই স্প্যানিশ কাপের
ফাইনালে উঠে আছে বার্সেলোনা। আর লা লিগায় পরের ম্যাচটি জিতলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে শিরোপা।
এনরিকে এটিকে দারুণ এক মুহূর্ত বলে উল্লেখ করলেও এখনও কাজ বাকি আছে বলে শিষ্যদের
সতর্ক করে দেন। ফিরতি লেগে বায়ার্নের কাছে হেরে গেলেও মন খারাপ করছেন না এনরিকে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠার দিনে মন খারাপ করার কোনো কারণও দেখছেন না তিনি, ‘আমরা
খুব খুশি। ফাইনালে জায়গা পাওয়াটা আমাদের প্রাপ্য। এটা উপভোগের মুহূর্ত।’ সেমিফাইনালের
প্রথম পর্বে বার্সেলোনার মাঠ থেকে ৩-০ গোলে হেরে আসা জার্মান চ্যাম্পিয়নদের প্রয়োজন ছিল চার
গোলের ব্যবধানে জয়। প্রাণপণ খেলে দ্বিতীয় পর্বের ম্যাচটি ৩-২ গোলে জিতলেও তাই হতাশা নিয়ে
মাঠ ছাড়তে হয় পেপ গার্দিওলার দলকে। বায়ার্নের মাঠে দ্বিতীয় পর্বে গোল পাননি মেসি। তবে জোড়া
গোল করা নেইমারের প্রথম গোলটিতে অবদান আছে তার। প্রথম পর্বে অবশ্য একা মেসির কাছেই
উড়ে যায় বায়ার্ন। নিজে দুটি গোল করেন, আর ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে করা নেইমারের গোলে
অবদান রাখেন তিনি। বার্সেলোনার কোচ থাকার সময় মেসি-বন্দনা অনেক করেছেন গার্দিওলা।
নিজের সেই সময়ের শিষ্যকে ‘অন্য গ্রহের’ ফুটবলার বলেও আখ্যা দেন তিনি। এবার প্রতিপক্ষ
মেসিকে তিনি বিশ্ব সেরার আসনে বসিয়ে দিলেন, ‘সে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়। আমি তাকে
পেলের সঙ্গে তুলনা করি।’ শুধু মেসি বন্দনাতেই থেমে থাকেন নি পেপ, এ মৌসুমের শিরোপা জয়ে
বার্সেলোনাকেই ফেভারিট মানছেন হেরে যাওয়া বায়ার্ন কোচ, ‘আমি আশা করছি, বার্সা তাদের পঞ্চম
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল জিতবে।’ বার্সেলোনাকে গার্দিওলা কেন এগিয়ে রাখছেন, সেটা বোঝা যায়
বায়ার্নের অধিনায়ক ফিলিপ লামের কথায়ও। বার্সেলোনাকে রোখার সাধ্য কারও নেই বলেই মনে
করেন তিনি, ‘পুরো ৯০ মিনিট ওই খেলোয়াড়দের (বার্সেলোনার খেলোয়াড়) থামিয়ে রাখা অসম্ভব।
আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল আজ (গেলপরশু) হারিনি, হেরেছি প্রথম পর্বে।’
শেয়ার করুন