স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে ভারত গেলেন সালাহ উদ্দিনের স্ত্রী
ভারতের শিলংয়ে অবস্থানরত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রোববার রাতে রওনা হয়েছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ।
এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে কলকাতার উদ্দেশে হাসিনা আহমেদ রোববার রাতে ঢাকা ছাড়েন। কলকাতায় পৌঁছার পর সোমবার সকালে সেখান থেকে আরেকটি ফ্লাইটে শিলং যাবেন তিনি। শিলংয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
বিমানে ওঠার আগে হাসিনা আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার স্বামী খুবই অসুস্থ। তার জন্য দোয়া করবেন।'
এর আগে তিনি ভারতে যাওয়ার ভিসা পান। ভিসা পাওয়ার পরপরই মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন হাসিনা আহমেদ।
বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক শামিমুর রহমান সমকালকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি তখন সমকালকে জানান, রোববার ভারতে যাওয়ার ভিসা পেয়েছেন সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্ত্রী। রাতেই তিনি শিলং যেতে পারেন।
সালাহ উদ্দিন আহমেদের পরিবার ও বিএনপির দাবি, গত ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরার একটি বাসা থেকে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিবকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ দাবি অস্বীকার করা হয়।
দুই মাস ধরে নিখোঁজ থাকা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদের খোঁজ পাওয়া যায় গত ১১ মার্চ ভারতের মেঘালয় রাজ্যে।
এর একদিন পর ১২ মার্চ মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সালাহ উদ্দিন নিজে ফোন করে তার অবস্থানের কথা স্ত্রী হাসিনা আহমদকে জানান। পরে সংবাদ সম্মেলন করে হাসিনা আহমদ সে কথা সাংবাদিকদের জানান।
শিলংয়ের পুলিশ জানিয়েছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদকে আটক করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সালাহ উদ্দিনের খোঁজ পাওয়ার পর তার সঙ্গে দেখা করেছেন তার এক স্বজন ও বিএনপির এক নেতা। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়ালও রোববার সালাহ উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাত করতে ভারতে গেছেন।
এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, আদালতের নির্দেশ পেলে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে বিএসএফ এর মাধ্যমে বিজিবি’র হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন মেঘালয় পুলিশের মহাপরিচালক রাজিব মেহেতা।
রোববার টাইস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সালাহ উদ্দিন আহমেদকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হতে পারে। প্রতিবেদনে মেঘালয় পুলিশের মহাপরিচালক রাজিব মেহতাকে উদ্বৃত করে বলা হয়, আদালত আদেশ দিলে সালাহ উদ্দিন আহমেদকে ডাউকি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজিবি’র কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে।
রাজিব মেহেতা টাইস অব ইন্ডিয়াকে আরও বলেন, তিনি (সালাহ উদ্দিন) অসুস্থ থাকার কারনে পুলিশও তাকে এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি। কিভাবে তিনি কাগজপত্র ছাড়া শিলং এলেন, কারা তাকে এখানে নিয়ে এল, এ বিষয়ে জানার জন্য তাকে পুলিশ হেফাজতেও নেওয়া হতে পারে। তবে এখন অপেক্ষা তার সুস্থ হওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে তাকে আদালতে নেওয়া হবে। আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে ভারতের শিলংয়ে অবস্থানরত বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদের স্মৃতিভ্রম দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির দফতর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি।
রোববার স্থানীয় সাংবাদিকদের আব্দুল লতিফ জনি জানান, তিনি (সালাহ উদ্দিন) একটা কথা বলে কিছুক্ষণ পরই তা ভুলে যাচ্ছেন। তাকে মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত মনে হচ্ছে।
শেয়ার করুন