পদ্মা সেতু বিষয়ে বিশ্ব ব্যাংকের কাছে দুর্নীতির প্রমাণ চায় কানাডার আদালত
বাংলাদেশের পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগের ব্যাপারে বিশ্ব ব্যাংকের কাছে প্রমাণ চেয়েছে কানাডার একটি আদালত। অন্টারিওর সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসের আদালত পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে বিশ্ব ব্যাংকের নিজস্ব তদন্তের নথিপত্র আদালতে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের নির্দেশ ঠেকাতে বিশ্ব ব্যাংক কানাডার সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বিশ্ব ব্যাংকের আবেদন গ্রহণ করলেও শুনানির কোনো দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি। অন্টারিওর সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসের বিচারক আয়ান নেইমারের আদালতে বাংলাদেশের পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগের মামলা চলছে।
পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ ওঠার পর বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব ব্যাংকের কাছে অভিযোগের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ চেয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের সেই দাবির প্রতি কর্ণপাত করেনি। এবার অন্টারিওর সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসের আদালতের নির্দেশকে ঠেকাতে আইনি লড়াইয়ের পথ বেছে নিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। উন্নয়ন সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে ২০১০ সালে নিজেরা তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ সম্পর্কে নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশকে (আরসিএমপি) অনুরোধ জানায়।
বিশ্ব ব্যাংক নিজেদের তদন্তে পাওয়া তথ্য ছাড়াও চারজন বেনামি তথ্যদাতার দেওয়া তথ্যাদি আরসিএমপির কাছে দেয়। এরই ভিত্তিতে আরসিএমপি কানাডিয়ান নির্মাণ প্রতিষ্ঠান এসএনসি লাভালিনের কিছু কর্মকর্তার টেলিফোন সংলাপ রেকর্ড করার অনুমতি নেয়। পরে তারা এসএনসি লাভালিনের কার্যালয়ে তল্লাশি চালায়। ২০১২ সালে মোহাম্মদ ইসমাইল এবং রমেশ শাহকে অভিযুক্ত করে। পরে কেভিন ওয়ালেস ও বাংলাদেশি কানাডিয়ান ব্যবসায়ী জুলফিকার ভূইয়াকে এই মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।
দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের এই পর্যায়ে এসে জুলফিকার ভূইয়ার আইনজীবী বিশ্ব ব্যাংকের তদন্তে পাওয়া তথ্যাদির নথিপত্র আদালতে উপস্থাপনের দাবি জানান। অন্টারিওর সুপিরিয়র কোর্ট অব জাস্টিসের বিচারক আদেশে বলেছেন, আরসিএমপির তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে বিশ্ব ব্যাংক নিজেই তার দায়মুক্তির লঙ্ঘন ঘটিয়েছে। বিচারক বলেন, কানাডার আইন এমনিতেই পুলিশের স্পর্শকাতর সোর্সের গোপনীয়তার সুরক্ষা দেয়। বিশ্ব ব্যাংকের চারজন তথ্যদাতার মধ্যে দুজনকে ইতিমধ্যে আদালত গোপনীয় তথ্যদাতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
শেয়ার করুন