তৃণমূলে যাচ্ছে খালেদা জিয়ার নির্দেশনা
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বার্তা যাচ্ছে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে এই সপ্তাহেই। বার্তায় গুম, খুন, অপহরণসহ হামলা-মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি তার সমবেদনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সরকারের অব্যাহত জুলুম, নির্যাতনের মধ্যে যারা আদর্শচ্যুত হননি তাদের জন্য পুরস্কার স্বরূপ সংগঠন পুনর্গঠনের গুরুত্ব দিয়ে অঙ্গীকার রয়েছে। একই সাথে স্থানীয় নিষ্ক্রিয় এবং আদর্শচ্যুত নেতাকর্মীদের প্রতি কড়া সতর্কবাতাও থাকছে।অতীতের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার কথা স্মরণ করিয়ে বলা হয়েছেÑ যারা দলের দুর্দিনে কর্মীদের ফেলে ব্যক্তি স্বার্থ চিন্তা করে দলচ্যুত হচ্ছে; ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ কর্মীদের দ্বারা কোন নেতিবাচক ঘটনার শিকার হন, তার দায় ব্যক্তিগতভাবেই নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দলের কাউন্সিল বা বড় ধরনের কোন সভা-সমাবেশ সহসাই নেই, তাই সতর্কতা ও পরামর্শমূলক দীর্ঘ বার্তা সারা দেশের নেতা ও কর্মীদের কাছে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শীর্ষ নেতা। দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের অনুপস্থিতিতে ওই পর্যায়ের নেতার মাধ্যমে বার্তাটি পৌঁছানো হবে তৃণমূলে। ইউনিয়ন, থানা-উপজেলা ও জেলার নেতাদের কাছে যাচ্ছে এ বার্তা।দীর্ঘ প্রায় আট বছরে বিএনপির ১২ শত নেতাকর্মী গুম, খুন ও অপহরণের শিকার হয়েছে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৩০ হাজার মামলা রয়েছে। তাতে আসামি সাত লাখের বেশি। লক্ষাধিক নেতাকর্মী এখনো ঘরেই ফিরতে পারেনি। নেতাদের অবর্তমানে প্রতিনিয়ত বাসা-বাড়ী ও প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছে পুলিশ। সরকারদলীয় নেতাদের কব্জায় চলে যাচ্ছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও। জুলুম-নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে দল ত্যাগের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তালিকাভুক্ত নেতাদের কেউই দলত্যাগ না করলেও কর্মী পর্যায়ের একটি সংখ্যা আত্মরক্ষায় বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেছে। দলের ব্যানারে যারা শত শত কোটি টাকা, ব্যাংক-বীমা, স্কুল-কলেজ, কারখানার মালিক হয়েছেন তাদের কেউ কেউ আত্মগোপনের নামে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। এদিকে স্থানীয় পর্যায়ের বিশেষ করে থানা ও জেলার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা নেতা, দলের সাবেক এমপি-মন্ত্রীদের অনেকেই মধ্যসারির নেতা ও কর্মীদের কোন খবর রাখছেন না। আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে নিজেকে গুঁটিয়ে রেখেছেন। আইনপেশায় নিয়োজিত বিএনপিপন্থীরা আইনি সহায়তা দিচ্ছেন না। বিপর্যস্ত নেতাকর্মীরা এখন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছেন। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেই মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পেয়েছেন। ২০০৭ সালে খালেদা জিয়া বন্দি থাকাকালে দলের সাবেক ১৩৪ এমপি সংস্কারপন্থী হিসেবে দল ভাঙ্গার চেষ্টা করেছিল। খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার চেষ্টা করেছিল। তৎকালীন ওই প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত দলীয় এমপিদের প্রতি চরমক্ষুব্ধ ছিলেন কর্মীরা। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ করেছেনও। ওই সময় সাবেক সেনাপ্রধান ও দলের নীতি-নির্ধারকদের একজনকে লাঞ্ছিত করেছিল। যাতে ওই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই বার্তাই যাচ্ছে নেতাদের কাছে।
শেয়ার করুন