ফেসবুকে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছবি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা
বাংলাদেশে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ফেসবুক পাতায় পোস্ট করা একটি ছবি তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
'ওবায়দুল কাদের' নামে একটি ফেসবুক ফ্যান পেজে সোমবার পোস্ট করা ছবিটিতে দেখা যায়, লুঙ্গি এবং শাট পরিহিত এক ব্যক্তি কান ধরে ওঠবসের ভঙ্গিতে রয়েছেন।
পাশেই পুলিশের এক কর্মকর্তা এমনভাবে লোকটির ঘাড়ে হাত দিয়ে রয়েছেন, যাতে মনে হচ্ছে তিনিই ব্যক্তিটিকে ওঠবস করাচ্ছেন। আর অদূরেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ছবির নিচে অনেকেই নানা সমালোচনামূলক মন্তব্য করেছেন।
এমডি জুবায়ের নামে একজন লিখেছেন, "আমরা মানুষ, এই ছবিটা না শেয়ার করলেই ভালো হতো"।
ছন্নছাড়া হিমু (সম্ভবত ছদ্মনাম) নামে একজন লিখেছেন, "মাননীয় মন্ত্রী, এরা চোর না। খেটে খাওয়া মানুষ। আপনার যেমন একটা সম্মান আছে তাদেরও সম্মান আছে। হয়তো কিঞ্চিত কম। তাই বলে এভাবে অপমান করা ঠিক নয়। তার জায়গায় নিজেকে দাঁড় করিয়ে দেখুন"।
খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, মি. কাদের গত শনিবার একটি মহাসড়ক পরিস্থিতি দেখতে যান। সেখানে তার কর্মসূচীর বিভিন্ন ছবি ওই দিনই তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে 'রোড সেফটি প্রোগ্রাম মাওয়া ০৯-০৮-২০১৫' নামে একটি অ্যালবামে পোস্ট করেন।
ওই অ্যালবামে আরো কয়েকটি ছবি রয়েছে, যেগুলোতে মন্ত্রী বিভিন্ন যানবাহনের চালকদের আঙ্গুল তুলে শাসাচ্ছেন বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। আর ফ্যান পেজে ছবিটি আসে এর একদিন পর।
এদিকে, সড়ক যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা আবু নাসের বলছেন, 'আমরা সেখানে ছিলাম। ওই ব্যক্তি নিজ থেকেই কান ধরেছে'।
'পাশেই মোবাইল কোর্ট চলছিল। লোকটির কাগজপত্র ছিল না। তখন সে পুলিশকে দেখে ভয়ে নিজে থেকেই কান ধরে ওঠবস শুরু করে। তখন স্যার তা দেখে পাশের পুলিশের কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে। কর্মকর্তা বললেন, লোকটির কাগজপত্র নেই তাই দুঃখ প্রকাশ করছে। স্যার তখন তাকে ছেড়ে দিতে বললেন'।
এই ছবি নিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি হবার বিষয়টি এখনো মন্ত্রীর নজরে আসেনি উল্লেখ করে মি. নাসের বলেন, 'স্যার একনেক মিটিংয়ে আছেন। তাকে আসা মাত্রই আমরা অবহিত করব'।
মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজের ফেসবুক পাতা নিজেই চালান বলেও কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন।
ওবায়দুল কাদের এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেবার পর থেকেই নিয়মিত সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সড়ক-মহাসড়কে সশরীরে যাচ্ছেন এবং নিজেই বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়ে অনতিবিলম্বে কার্যকর করে আসছেন।
তার এ ধরণের কর্মপদ্ধতি যেমন অনেক প্রশংসা কুড়িয়েছে তেমনি সমালোচনাও কম হয়নি।
শেয়ার করুন