জিএসপি নিয়ে সব শর্ত পূরণ করেছি: তোফায়েল আহমেদ
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি পুনর্বহালের বিষয়ে নতুন করে কোনো উদ্যোগ নিতে রাজি নই। তাদের সব শর্ত আমরা পূরণ করেছি। আর কিছু করার নেই।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী একথা বলেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশে নিযুক্ত স্লোভেনিয়ার রাষ্ট্রদূত দারজা বাভদাজ কুরেতের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ১২২টি দেশের জন্য তাদের জিএসপি কর্মসূচি নবায়ন করেছে। নবায়নের আগে বাংলাদেশের জিএসপি পুনর্বহাল হবে বলে প্রত্যাশা ছিল। অবশ্য নবায়ন একটি আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়। এর সঙ্গে বাংলাদেশের জিএসপি পুনর্বহালের কোনো সম্পর্ক নেই।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ জিএসপি ফিরে পাক তা দেশি-বিদেশি একটি পক্ষ চাচ্ছে না । বিশ্বব্যাংকের টাকায় পদ্মা সেতু হওয়াটা যেমন অনেকে চায়নি,তেমনি বাংলাদেশ জিএসপিও ফিরে পাক, তারা তা চাচ্ছে না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণে তারা জিএসপি ফেরত দিচ্ছে না। যেখানে বারাক ওবামা নাইরোবিতে বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন, সেখানে সামান্য জিএসপি সুবিধা না পাওয়ার কোনো কারণ নেই।
মন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, শর্তের চেয়েও যদি বেশি কিছু করা হয়, তারপরও তারা স্থ’গিতাদেশ প্রত্যাহার করবে কি-না তা নিয়ে তিনি সন্দিহান। তিনি অবশ্য বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের টিকফা চুক্তি রয়েছে। টিকফার কারণে জিএসপির ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করবে বলে আশা করেন মন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন বা শ্রমিকদের অধিকারের বিষয়টি বারবার বলছে তারা। ভিয়েতনামের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, সে দেশে কি শ্রমিকদের স্বাধীনতা আছে? সেখানে তো এক পার্টি। সেখানে শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের দুরবস্থা সবার জানা আছে। পাকিস্তানের অবস্থা সবাই জানেন। সেখানে নিত্যনতুন জঙ্গি তৎপরতা হচ্ছে। বাংলাদেশের অবস্থা তাদের চেয়ে অনেক ভালো।
এক প্রশেুর জবাবে তোফায়েল আহমেদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি প্রোগ্রামে তৈরি পোশাক ছিল না। কিন্তু তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে তারা কথা বলছে। প্লাস্টিক ও সিরামিকে জিএসপি ছিল। এসব খাতের কারখানা নিয়ে তাদের প্রশ্ন নেই। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া প্রায় সব দেশ তৈরি পোশাকে শুল্ক সুবিধা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে না দিয়ে আফ্রিকান কতগুলো দেশকে তৈরি পোশাকে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে। সে সব দেশ তেমন রফতানি করতে পারে না।
মন্ত্রী বলেন, দেশের কিছু শ্রমিক নেতা আছেন যারা কারখানায় কাজ করেন না। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। তারা দেশের অনেক ক্ষতি করছেন। ইউএসটিআর ও কংগ্রেসম্যানদের চিঠি দিয়ে অসত্য তথ্য দিচ্ছেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লা আল মামুন নিত্যপণ্যের চড়া দামের বিষয়ে বলেন,বেশিরভাগ পণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের দর পাঁচগুণ বেড়ে যাওয়ায় দেশে ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে সবজির দাম চড়া।
মন্ত্রী বলেন, কোরবানির আগে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তখন বাজার স্বাভাবিক রাখতে শিগগিরই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
শেয়ার করুন