ঢাকার বাড্ডায় গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩
রাজধানীর বাড্ডায় গুলির ঘটনায় আহত আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাহবুবুর রহমান গামাও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বাড্ডা থানার ওসি এম আবদুল জলিল জানান, গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে গামার (৪০) মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার রাতের ওই ঘটনায় এ নিয়ে মোট তিনজনের মৃত্যু হলো। আব্দুস সালাম নামে গুলিবিদ্ধ আরেকজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সালাম যুবলীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতা।
উল্লেখ্য, রাজধানীর মধ্যবাড্ডায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো দুজন। এ ঘটনায় প্রথমে নিহত দুজন হলেন ঢাকা উত্তর সিটির ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শামছু মোল্লা (৫২) এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগকর্মী মানিক (৪০)। মানিক উত্তর বাড্ডার একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মকর্তা ছিলেন। আহতদের মধ্যে গামা নামের একজনকে গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সাহিত্য সম্পাদক। আব্দুস সালাম (৪০) নামে গুলিবিদ্ধ এক যুবলীগ নেতাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
পুলিশ, সহকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে মধ্যবাড্ডার আদর্শনগর পানির ট্যাংকি এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। একদল সন্ত্রাসী চারজনকে হঠাৎ গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন গামাও আজ সকাল পৌনে ১০টার সময় মারা যান। তার মাথায় গুলি লেগেছিল।
বাড্ডা থানার ওসি আবদুল জলিল বলেন, পূর্ববিরোধের জের ধরে এই হত্যা ও গুলির ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়েছে।
রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বাড্ডা জোনের সহকারী কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, গুলির ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। কেন, কারা এই গুলি করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি হওয়া গুলিবিদ্ধ আব্দুস সালাম জানান, তিনি বাড্ডা থানা যুবলীগের সহসভাপতি। আদর্শনগরে তাঁর একটি রিকশার গ্যারেজও আছে। গত রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁরা চারজন মধ্যবাড্ডার লিংক রোডে আদর্শনগর পানির ট্যাংকি ও কমার্স কলেজের কাছে মেডিলিংক হাসপাতালের সামনে চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। কথা বলার সময় কয়েকজন যুবক এসে হঠাৎ সাত-আট রাউন্ড গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। পিঠে গুলিবিদ্ধ সালাম আর কিছুই বলতে পারেননি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার অবস্থাও সংকটাপন্ন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থলে বাড্ডা থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যালয়। সেখানে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচির প্রস্তুতি চলছে। তৈরি করা হচ্ছে একটি অস্থায়ী মঞ্চ। ওই মঞ্চের কাছে বসেই চা পান করছিলেন চারজন। ওই সময় গুলির ঘটনাটি ঘটে।
৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, ১৫ আগস্ট উদযাপন নিয়ে গত রাতে তাদের একটি বৈঠক হয়। সেখানে অংশগ্রহণকারী সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সদস্য। বৈঠকে অংশ নিয়ে হারুনুর রশিদ আদর্শনগরে বাসায় ফিরে যান। এর পরই গুলির ঘটনা ঘটে। খবর শুনে তিনি সেখানে যান। নিহত ও গুলিবিদ্ধরাও আদর্শনগরের বাসিন্দা।
শেয়ার করুন