নারীদের ধর্ষণ করত-শিশুদের ফেলে দিত সাগরে
সমুদ্রপথে অবৈধ বিদেশযাত্রার নির্মম কাহিনী
সুন্দর জীবনের আশায় সমুদ্রপথে অবৈধ বিদেশযাত্রার নির্মম কাহিনী উঠে এসেছে মিয়ানমার ফেরত পাঁচ কিশোরের বর্ণনায়। সোমবার মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরে আসা ১৫৯ বাংলাদেশী নাগরিকের মধ্যে ছিল নারায়ণগঞ্জের এই পাঁচ কিশোর।
বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি নারায়ণগঞ্জের মাধ্যমে এ পাঁচজনকে তাদের পরিবারের কাছে তুলে দেয়া হয়। এরা হল- আড়াইহাজার থানার পাঁচরুখি সিংরাটি গ্রামের আবু কালামের ছেলে নাইম মিয়া (১৬), রূপগঞ্জ থানার ভুরুটিয়া সরদার গ্রামের জামান মিয়ার ছেলে সুমন (১৭), আড়াইহাজারের বাগদি গ্রামের মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে স্বপন (১৬), আড়াইহাজার কেটিয়া গ্রামের মৃত আমিন মিয়ার ছেলে আবু হানিফা (১৪), নরসিংদী মাধুবদী নকটেউ কাদি গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে সেলিম (১৭)।
কিশোর আবু হানিফা জানায়, আমাদের এক দালালের কাছে বিক্রি করে দিল আর আমরা হাটের পশুর মতো চেয়ে রইলাম, কিছু করার ছিল না। সে জানায়, আমাদের তিন মাস সাগরের মধ্যে ভাসমান রেখেছে, বোটের উপরতলায় বাচ্চাসহ ১৮ জন বাঙালি নারী ও ৪০ জন মিয়ানমারের নারী ছিল। অত্যাচার সইতে না পেরে তাদের গগনবিদারী চিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠত।
পরে জানতে পেরেছি, জাহাজের লোকজন ওইসব নারীকে ধর্ষণ করত। অনেক শিশুকে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছে পাষণ্ডরা।
কিশোর নাঈম জানায়, প্রতিদিন আমাদের একমুঠো ভাত, তিনটা শুকনা মরিচ আর দুইটা কাঁচা শুঁটকি দিয়ে দিনে একবার ভাত খেতে দিত। না খেলে বেল্ট নতুবা চাবুক দিয়ে মারত। কিশোর সুমন জানায়, জাহাজে আমাদের সঙ্গে থাকা নরসিংদীর এক লোক অসুস্থ হয়ে মারা যায়। পরে পলিথিনে পেঁচিয়ে পেট কেটে তার লাশ নদীতে ফেলে দেয়া হয়।
শেয়ার করুন