শর্ত পূরণ হলে জিএসপি -মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট
শ্রম অধিকার, নিরাপত্তাসহ অন্যান্য শর্ত পূরণ হলে যুক্তরাষ্ট্র তাদের দেশে বাংলাদেশের পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধার (জিএসপি) বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া ব্লুম বার্নিকাট। অন্যদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জিএসপি ফিরে পেতে বাংলাদেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ পাঁচ দেশের রাষ্ট্রদূতরা সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা নিয়ে আলাপকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেন, জিএসপি পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে শ্রমিকের অধিকার, কাজের পরিবেশ, শ্রমিকের নিরাপত্তা, লেবার ল’ বাস্তবায়নসহ অন্যান্য শর্ত পূরণ হওয়া জরুরি। এ সব শর্ত পূরণ হলে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপির বিষয়টি বিবেচনা করবে। জিএসপিসহ বাণিজ্যিক সুবিধা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।রাষ্ট্রদূতদের সাথে সাক্ষাতের পর বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ১৬ শর্ত অনুযায়ী শ্রম অধিকার, কাজের পরিবেশ, শ্রমিকের নিরাপত্তা, ট্রেড ইউনিয়ন সবকিছুই হয়ে গেছে। বাকি আছে শুধুমাত্র শ্রম আইন। এটি আইন মন্ত্রণালয়ে পেন্ডিং রয়েছে। আইনটি জারি হয়ে গেলে আমাদের সব শর্তই পূরণ হয়ে যাবে। আশা করি তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেবে।পাঁচ দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তোফায়েল আহমেদ বলেন, জিএসপি, কোটামুক্ত-শুল্কমুক্ত বাণিজ্যসুবিধা নিয়ে ভাল আলোচনা হয়েছে। এসব নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কানাডা কারো সঙ্গে বাংলাদেশের সমস্যা নেই।তিনি বলেন, ১২২টি দেশ জিএসপি পেত। আমরাসহ ১২৩টি দেশ জিএসপি পেয়েছিলাম। রানা প্লাজার ঘটনার পর আমাদের জিএসপি স্থগিত করা হয়েছে। বাতিল করা হয়নি। আমাদের অ্যাকশন প্ল্যানে ১৬টি শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছিল। আজকের বৈঠকে আমরা সেই শর্তগুলো পূরণ করার কথা তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, শ্রমিকরা কাজের পরিবেশ, বেতন ভাতা নিয়ে সন্তুষ্ট। ট্রেড ইউনিয়ন হয়েছে। লেবার ল পেন্ডিং রয়েছে। আইনমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। আইনটি জারি হয়ে গেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই বিবেচনা করবে। আশা করি, জিএসপি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেবে।বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। শর্ত অনুযায়ী ইতোমধ্যে আমরা শিল্প কারখানায় ২১৯% বেতন ভাতা বাড়িয়েছি। তাদের কাছে একটি প্রশ্ন আছে ৩০% শিল্পপ্রতিষ্ঠানে সময়মতো বেতন ভাতা দেয়া হয় না। একথা যে ঠিক না তাও আমরা তাদের কাছে তুলে ধরেছি। আলোচনা খুব ভাল হয়েছে। আমার সঙ্গে আলোচনার পর তিন সচিবসহ যৌথ আলোচনা শেষে বাংলাদেশে অবস্থান নিয়ে পাঁচ দেশের প্রতিনিধি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।এক প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের দ্বিমত হবার কোনো কারণ নেই। একটি দেশ আমাদের জিএসপি দেয়নি, কেন দেয়নি তারা তাদের বক্তব্য বলবে। কিন্তু জিএসপি বাদ দেয়ার কোনো কারণ নেই। এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত ধারণা নয়, এদেশের রিসার্স পার্সন রেহমান সোবহানসহ সবার ধারণা একই। বাংলাদেশের কন্ডিশন পৃথিবীর যে কোনো দেশ থেকে ভাল। সুতরাং জিএসপি বাদ দেয়ার কোনো কারণ নেই।
শেয়ার করুন