যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে “নো কিংস” বিক্ষোভের আগে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন
হোসেনি দালানে মধ্যরাতে বোমা হামলায় নিহত ১, আহত শতাধিক
রাজধানীর পুরান ঢাকার হোসেনি
দালানের সামনে পরপর তিনটি বোমা
বিস্ফোরণে সানজু (১৮) নামে এক যুবক নিহত
হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ১০০ জনেরও
বেশি। এদের মধ্যে ৫৭ জন ঢাকা মেডিক্যাল
কলেজ হাসপাতালে, ১৭ জন মিটফোর্ড
হাসপাতালে ও ১৬ জন একটি বেসরকারি
হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শুক্রবার
রাত দেড়টার দিকে এ বোমা বিস্ফোরণের
ঘটনা ঘটে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা
জানিয়েছেন, হাসপাতালে ৫৭ জন
চিকিৎসাধীন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল
জিয়াউল আহসান বলেন, ককটেল জাতীয়
হাতে তৈরি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো
হয়েছে। এগুলো বাইরে থেকে ছুড়ে মারা
হয়েছে।
গুরুতর আহতরা হলেন : আবদুর রহিম (৩০), নাঈম
হোসেন (৩৫), লাবনী আকতার (১৪), আয়শা
আকতার (১২), সালাউদ্দিন (৪৫), তুহিন (১২),
সুদীপ (২১), মাহবুবুর রহমান (২৬), রাকিব
হোসেন (২৬) ও আয়াত উদ্দিন (২৬)। বোমার
স্পিন্টারে গলা ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন
স্থানে জখম হন তাঁরা। এদিকে মিটফোর্ড
হাসপাতালে আহত ১৭ জনকে নেওয়া হয় বলে
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক
মাসুদুর রহমান জানান। তিনি বলেন, আহতদের
মধ্যে কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়। তবে
তিনজনের বেশ জখম হয়েছে।
পুলিশ জানায়, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে
তাজিয়া মিছিল বের করার প্রস্তুতি
নিচ্ছিল ভক্তরা। এ সময় হঠাৎ করে কয়েকটি
বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে
যায়। তাদের শনাক্ত করা যায়নি। তবে
তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।
আশপাশে অভিযান চালানো হয়। চকবাজার
থানার ডিউটি অফিসার এসআই মো.
জাহাঙ্গীর জানান. নাশকতা ঘটানোর জন্যই
এ বোমা হামলা করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই
পুলিশ পাঠানো হয়। আশপাশে অভিযান
চালায় পুলিশ। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা
যায়নি। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ
ছাড়া হামলায় জড়িত সন্দেহে দুজনকে আটক
করা হয়েছে বলে চকবাজার থানার এসআই
জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাজিয়া
মিছিল উপলক্ষে হোসেনি দালানের সামনে
রাতে সবাই জড়ো হয়। রাত দেড়টার দিকে
হঠাৎ পরপর তিনটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এ
সময় শতাধিক লোক আহত হয়।
তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের উদ্ধার করে
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল,
মিটফোর্ড হাসপাতাল এবং একটি
বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক)
হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ক্যাম্প ইনচার্জ
মোজাম্মেল হক জানান, আহতদের মধ্যে
সানজু নামে এক যুবক রাত ৩টার দিকে মারা
যায়। এ ছাড়া ১০ জনের অবস্থা গুরুতর।
তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্প্লিন্টার
বিদ্ধ হয়েছে। সবার চিকিৎসা চলছে।
আজ পবিত্র আশুরা। শিয়া মতাবলম্বীরা
প্রতিবছর যেসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে
দিবসটি পালন করে থাকে তাজিয়া মিছিল
তার মধ্যে অন্যতম। প্রতিবছর রাজধানীর
মোহাম্মদপুর, মিরপুর, মগবাজার, পল্টন এবং
হোসেনি দালান থেকে তাজিয়া মিছিল
বের করেন শিয়া মতাবলম্বীরা। প্রতিবছরের
মতো তাজিয়া মিছিল বের করার উদ্দেশ্যে
শনিবার ভোররাতে শিয়া ধর্মাবলম্বীরা
হোসেনি দালানে সমবেত হন। প্রত্যক্ষদর্শী
একজন জানান, মিছিল শুরুর আগে পুলিশ ও
র্যাব সদস্যরা হোসেনি দালানের চারপাশ
পরিদর্শন করেন নিরাপত্তা পরিস্থিতি
খতিয়ে দেখার জন্য। ঠিক তার পরপর
বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
শেয়ার করুন