জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হল দেশের প্রধান ঈদ জামাত।
বৃষ্টি হবে, এমন আভাস ছিল, তার মধ্যেই জাতীয় ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হল দেশের প্রধান ঈদ জামাত। নামাজ শেষে শান্তি কামনায় মোনাজাতে শামিল হল হাজার মানুষ।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ঈদুল আজহা উদযাপন হচ্ছে। ঈদের নামাজ শেষে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে পশু কোরবানি দিচ্ছে মুসলমান সম্প্রদায়।
তবে আষাঢ়ের মাঝামাঝিতে অনুষ্ঠিত ঈদে নামাজ আদায় এবং পশু কোরবানি দুটোর ক্ষেত্রেই বিড়ম্বনা তৈরি করেছে বৃষ্টি।
ভোররাত থেকে প্রবল বর্ষণ চলছে রাজধানীতে, তবে বৃষ্টির বেগ কিছুটা কমে এলে নির্ধারিত সময় সকাল সাড়ে ৭টায়ই হাই কোর্ট সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
নামাজে ইমামতি করেন ঢাকার তেজগাঁও রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সম্পাদক ড. মাওলানা মুশতাক আহমেদ।
নামাজের পরে দোয়ায় মাওলানা মুশতাক মুসল্লিদের নিয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনায় বলেন, “আমাদের সবার কোরবানি, ইবাদত ও নামাজ কবুল করে নেন। দেশটাতে শান্তি দেন। বাংলাদেশকে শান্তির স্বর্গরাজ্য বানিয়ে দেন।
“দেশের স্বাধীনতার জন্য যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, জীবন কোরবানি দিয়েছেন, তাদের সকলকে কবুল করেন।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে তার পরিবারের নিহতদের শহীদ হিসেবে কবুলের ফরিয়াদ জানান তিনি।
মোনাজাতে মাওলানা মুশতাক করেন, “বাংলাদেশের মানুষ যেন খেয়ে-পড়ে বাঁচতে পারে, এজন্য সরকার যে চেষ্টা করছে, তা যেন আল্লাহ কবুল করেন।”
নামাজের আগে বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা সবাই ভাই ভাই। আমরা একে অপরের সঙ্গে বুকে বুক মিলিয়ে থাকব। কোরবানির ঈদ আমাদের ত্যাগের শিক্ষা দেয়। এই ত্যাগ অপরের জন্য, প্রতিবেশীর জন্য, সব মানুষের জন্য।”
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, উত্তরের মেয়র আতিকুল ইসলাম, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রধান জামাতে অংশ নেন।
সাধারণত রাষ্ট্রপতিও জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের নামাজ পড়েন। তবে এবার তিনি হজ করতে সপরিবারে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।
ঈদ জামাত শুরুর সময়ও হালকা বৃষ্টি ছিল। তার মধ্যেই দলে দলে মানুষ আসেন নামাজ পড়তে। তবে অন্য বারের তুলনায় উপস্থিত এবার ছিল বেশ কম।
জাতীয় ঈদগাহর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র তাপস বলেন, “মানুষ কম এসেছে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে। তুমুল বৃষ্টি হয়েছে ঢাকায়। এরমধ্যেও যারা আসতে পেরেছেন, তাদের নামাজ পড়তে কোনো সমস্যা হয়নি।”
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের পাঁচটি জামাত হচ্ছে। প্রথমটি হয় সকাল ৭টায়।
দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায়। এরপর সকাল ৯টা, ১০টায় ও বেলা পৌনে ১১টায় আরও তিনটি জামাত হবে।
আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে সবাইকে জাতীয় ঈদহাহে ঢুকতে হয়েছে। ছাতা, জায়নামাজ ও মোবাইল ফোন ছাড়া ঢুকতে নিষেধ করছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
জাতীয় এ ঈদগাহ ময়দানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের নামাজের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রাখা ছিল। ছিল মেডিকেল ক্যাম্প ও অজু খানা।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন