আপডেট :

        লস এঞ্জেলেসে ‘নো কিংস ডে’র প্রতিবাদে ১৪ জন গ্রেপ্তার

        হান্টিংটন বিচে গাড়িচাপায় এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু, দুইজন আহত

        বন্যা আগুন রোধে গৃহহীনদের গ্রেপ্তারের প্রস্তাব মালিবুর

        মাঝ আকাশে বিমানের কাঁচ ভাঙল, আহত পাইলট

        অরেঞ্জ কাউন্টিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিন অপ্রাপ্তবয়স্কসহ চারজন হাসপাতালে

        অবৈধ মাদকসেবীদের অস্ত্র রাখায় নিষেধাজ্ঞা সংবিধানবিরোধী কি না—বিবেচনায় নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

        ক্যালিফোর্নিয়ায় মেরিন কর্পস উদযাপনের সময় আর্টিলারির ধাতব টুকরো হাইওয়েতে, ভাইস প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা টিমের গাড়িতে আঘাত

        হামাস হামলায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এক মার্কিন নাগরিক গ্রেফতার

        দুবাই থেকে আসা ইমিরেটস কার্গো বিমান হংকংয়ে সাগরে পড়ল, ২ নিহত

        জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণ: স্কুল পাঠ্যক্রমে যুক্ত হবে 'জুলাই সনদ'

        নরওয়াকে পালশালার বাইরে গুলি বর্ষণের ঘটনায় দুইজন আহত, বন্দুকধারীকে খুঁজছে পুলিশ

        লস এঞ্জেলসের ‘No Kings’ প্রতিবাদে সমাবেশ ভাঙার নির্দেশ, অন্তত একজন গ্রেপ্তার

        ২০২৬ সালে বাড়ছে মেডিকেয়ার খরচ: ওপেন এনরলমেন্টে যেভাবে সাশ্রয় করা যায়

        প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যৌনবিষয়ক কনটেন্ট চালুর ঘোষণা দিল OpenAI

        রিভারসাইড কাউন্টির শেরিফ ডেপুটি গাড়ি চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার

        বারব্যাঙ্কে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, বন্ধ ৫ ফ্রিওয়ের উত্তরমুখী লেন

        কলম্বিয়ার জলসীমায় মার্কিন হামলা: ‘খুনের অভিযোগ’ তুললেন প্রেসিডেন্ট পেত্রো

        গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের’ অভিযোগে ইসরায়েলের বিমান হামলা

        যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্পবিরোধী ‘নো কিংস’ আন্দোলনে লাখো মানুষের অংশগ্রহণ

        ‘রাজা চাই না, গণতন্ত্র চাই’ স্লোগানে তোলপাড় যুক্তরাষ্ট্র

বিএনপির প্রস্তাবে সাড়া দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ কেন ?

বিএনপির প্রস্তাবে সাড়া দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ কেন ?

নতুন সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঠিক
করতে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপির সংলাপ
প্রস্তাবে কোনো সাড়া দিচ্ছে না আওয়ামী
লীগ। সুষ্ঠু ভোটের নিশ্চয়তায় কিছুটা ছাড় দিয়ে
হলেও আলোচনার টেবিলে বসতে চায় বিএনপি।
রাজপথের আন্দোলন ছেড়ে বিএনপি সংলাপের
মাধ্যমে সমাধান খুঁজলেও; আওয়ামী লীগ নেতারা
বলছেন, এখনই সংলাপে বসার মতো কোনো
কারণ নেই।
বিএনপি নেতারা বলছেন, বিদ্যমান সমস্যা আলোচনার
টেবিলেই সমাধান সম্ভব। এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন
দল আওয়ামী লীগকে কিছুটা ছাড় দিতেও রাজি
আছে বিএনপি। নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে সংবিধানের
পঞ্চদশ সংশোধনে বাতিল হওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকার
ব্যবস্থার পরিবর্তে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু ভোটের
নিশ্চয়তায় যে কোনো ফর্মুলাকে তারা গ্রহণ
করতে রাজি। দলের স্থায়ী কমিটির এক সদস্য
 বলেন, প্রধানমন্ত্রী আর এই
নির্বাচন কমিশনকে বহাল রেখে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে
না। তাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনাকে বাদ দিয়ে অন্য কোনো ব্যবস্থায়
নির্দলীয় লোককে সরকারপ্রধান করে
নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে
পারে।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রি. জেনারেল (অব.)
আ স ম হান্নান শাহ বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের
লক্ষ্যে এমন একটি সরকার ব্যবস্থা চাই, যারা
নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। তা যে
নামেই হোক। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা
নিয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়ে উদাহরণ দিয়ে
বলেন, ২০১৪ সালের বিতর্কিত দশম জাতীয়
নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার অধীনে তাদের
শরিক দলের নেতাদের সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা
হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়। এ
সময়ে এটাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘জাতীয়
সরকার’ গঠন করেছেন বলে ঘোষণাও দেন।
এখানে তো সংবিধানকে গ্রাহ্য করা হয়নি। কিংবা
সংবিধানিক ব্যবস্থা নিয়েও সমালোচনা হয়নি। এ রকম
ছাড়াও ভিন্ন উপায়ে জাতীয় নির্বাচনের উপায় বের
করা যেতে পারে। তবে তা আলোচনার
টেবিলেই উভয় দলের সম্মতিতে হলে বিতর্ক
সৃষ্টি হবে না।
আলোচনার টেবিলে বিএনপি কোন কোন
বিষয়ে গুরুত্ব দেবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি
বলেন, আলোচনা তো আর বললেই হয় না। এর
জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব
আসতে হবে। এরপর উভয় দলের লিয়াজোঁ কমিটি
করে প্রাক-আলোচনায় এজেন্ডা নির্ধারণ করা
হবে। তারপর শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে
আলোচনার দিন-ক্ষণ নির্ধারণ করা হবে।
আলোচনার টেবিলে নির্বাচনী সরকার ব্যবস্থা
ছাড়াও দেশের চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা, জঙ্গিবাদ
ইস্যু, জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন
চুক্তির গ্রহণযোগ্যতা ও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়ে এজেন্ডা হতে পারে। আর নির্বাচনী
ব্যবস্থায় নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী,
প্রশাসনসহ অন্য সব বিষয়ে সমাধানের উপায় নিয়ে
সংলাপ হতে পারে বলে তিনি জানান।
৫ জানুয়ারি বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে খালেদা
জিয়াও স্পষ্ট করে বলেছেন, আসুন গণতন্ত্র
রক্ষার জন্য সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু
সমস্যার সমাধান বের করি। বর্তমান সরকার জোর
করে ক্ষমতায় রয়েছে। তাদেরই সমাধানের
ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেছেন, আমরা
ভিনদেশি নই। আমরা সবাই বাংলাদেশি। আসুন আলাপ-
আলোচনা করে একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ
করি।
বিএনপি দলীয় সূত্র জানায়, বিগত উপজেলা নির্বাচন,
ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন আর
সর্বশেষ দেশের পৌরসভা নির্বাচনে সরকারদলীয়
প্রার্থীদের ব্যাপক ভোট জালিয়াতি, প্রশাসনের
হস্তক্ষেপ আর নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক
আচরণের কারণে বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক
দলগুলোও এই সরকার ও বর্তমান নির্বাচন কমিশনের
অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলে
মনে করছে। এর আগে ভোলা উপনির্বাচনসহ
অন্যান্য নির্বাচনকেও তারা উদাহরণ হিসেবে
টানছেন। এসব নির্বাচনের পরিবেশ বিরোধী
রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সম্পূর্ণ প্রতিকূলে ছিল
বলেই বিএনপি জাতীয় নির্বাচন ব্যবস্থায় সুষ্ঠু
পরিবেশের নিশ্চয়তা চাইছে।
এদিকে বিএনপি আগ বাড়িয়ে বারবার সমঝোতার কথা
বলে এলেও তাতে পাত্তা দিচ্ছে না শাসক দল
আওয়ামী লীগ। মাঠের বক্তৃতায়ও তারা বলে
আসছেন মেয়াদ পূর্তির পর আগামী জাতীয়
নির্বাচন হবে। দলটির বিভিন্ন সূত্র জানায়, এ বছর তারা
দলীয় সম্মেলন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, আরো
দুই ধাপের পৌরসভা নির্বাচন নিয়েই কাটাতে চান। তাই
আপাতত বিএনপির সংলাপ আহ্বানের দিকে তাদের মন
নেই। দলের নেতারা বলছেন, বিএনপি আরো
দুর্বল হবে। আরো ছাড় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী
২০১৩ সালে যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের কথা
বলেছিলেন সেভাবেই রাজি হবে। তাই এখনই
খালেদা জিয়ার সংলাপ প্রস্তাবে সাড়া দেয়ার কোনো
চিন্তা শাসক দলের মাথায় নেই। এজন্য কৌশলও
নিয়েছে শাসক দল। জনগণকে নিজেদের
পক্ষে রাখতে দলটির নেতারা সংলাপের জন্য বিভিন্ন
শর্ত দিচ্ছেন। নাশকতার জন্য ক্ষমা, জামায়াত ত্যাগ,
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সমর্থন, ১৫ আগস্ট জš§দিন
পালন না করাসহ অন্যান্য শর্ত। এসবের মধ্য দিয়ে
শাসক দলের নেতারা জনগণকে নিজেদের
পক্ষে রাখতে চাচ্ছেন। যেন সংলাপের দাবি
জোরালো না হয়।
দলীয় সূত্র জানায়, দলের হাইকমান্ড মনে করছে,
নাশকতার জন্য ক্ষমা চাইলে খালেদা জিয়ার নৈতিক
পরাজয় হবে। আর ক্ষমা না চাইলেও এ
শর্তারোপের মাধ্যমে দেশের জনগণকেও
বারবার বীভৎস নাশকতার কথা মনে করিয়ে দেয়া
হবে। অবরোধের নাশকতায় ক্ষতিগ্রস্ত
পরিবারগুলোও আস্থা পাবে সরকারের ওপর। আর
অন্য শর্তগুলোর মধ্য দিয়ে দেশের
মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের বিশাল জনগোষ্ঠীকে
সরকার নিজেদের পক্ষে রাখতে পারবে।
দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার
সঙ্গে আলাপকালে নেতারা বলেন, দেশের
উন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও
সরকারের নিয়ন্ত্রণে, সরকার এখন অনেক
শক্তিশালী। তাই এ সময়ে কেন বিএনপির সংলাপের
ডাকে সাড়া দিতে হবে। এ ছাড়া বিএনপি রাজনৈতিকভাবে
এখন মৃত। মৃত দলের আহ্বানে সাড়া দিলে আওয়ামী
লীগ জনগণের কাছে দুর্বল দল হিসেবে
প্রমাণিত হবে।
কোনো প্রয়োজন ছাড়া সংলাপ-সমঝোতার
উদ্যোগ আওয়ামী লীগের জন্য আত্মঘাতী
হবে বলে মনে করছেন দলের নেতারা। তাদের
মতে, বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনে
নির্বিচারে মানুষ খুন, জনগণের সম্পদহানির মধ্য দিয়ে
আওয়ামী লীগ দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায়
এসেছে। এগুলোর বিচার ছাড়া বিএনপির ডাকে সাড়া
দিলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিও জনগণের
কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তারা বলেন, বিএনপিকে
আগে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করতে হবে,
জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তারপর
বিবেচনা করা হবে, তাদের প্রস্তাব বা আহ্বানে সাড়া
দেয়া হবে কিনা। অপরাধ স্বীকারের পরই বোঝা
যাবে বিএনপির প্রকৃত অবস্থান।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সংলাপ আহ্বানের
বিষয়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের
সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন
করে কোনো সংলাপ আওয়ামী লীগ করতে
পারবে না। সংবিধান সংশোধন করেও কোনো
আলাপ-আলোচনা হবে না। খালেদা জিয়ার সংলাপের
প্রস্তাবকে ‘পৌষ মাসের ওয়াজ আষাঢ় মাসে’ বলে
মন্তব্য করেন সুরঞ্জিত। তিনি বলেন, সংলাপের
সময় প্রধানমন্ত্রী যখন ডাকলেন, বললেন
আসেন চা খেয়ে যান। তখন বললেন, না আমি হরতাল
করব। সুরঞ্জিত বলেন, বিপদ হইছে খালেদা
জিয়াকে নিয়ে। এখন দেশ, গণতন্ত্র সবই
সঠিকভাবে চলছে। দুই বছর আগের কথা, তিনি দুই
বছর পরে এসে বলছেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ
চৌধুরী বলেন, সংলাপ আহ্বানের মধ্য দিয়ে খালেদা
জিয়ার দম্ভিকতা ও সন্ত্রাসী মনোভাবের পরাজয়
হয়েছে। সংবিধান রক্ষা ও নির্বাচন নিয়ে
প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তার কাছে তিনি পরাজিত
হয়েছেন। তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রীর
আহ্বানে সাড়া না দিয়ে, সব লজ্জা ভেঙে খালেদা
জিয়া এখন আত্মসমর্পণ করছেন। কিন্তু; এত দিনে
সংলাপের ট্রেন চলে গেছে বহু দূরে। সংবিধান
অনুযায়ী আবার জাতীয় নির্বাচনের সময় এলে সব
বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হতে পারে।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত