পদত্যাগ করলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর
অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে এগারটার দিকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে আতিউর পদত্যাগপত্র জমা দেন বলে জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এহসানুল করিম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮০০ কোটি টাকার বেশি লোপাটের তথ্য এক মাসের বেশি গোপন রেখে তীব্র সমালোচনার মধ্যে থাকা আতিউর আজ সকালেই জানান যে তিনি পদত্যাগপত্র লিখে বসে আছেন। প্রধানমন্ত্রী বললেই তিনি পদত্যাগ করবেন।
তিনি জানান, গতকাল বিকেলে ভারত থেকে দেশে ফেরার পর অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে মুহিত তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।
এরপর আজ বেলা পৌনে এগারটার দিকে তিনি গুলশানের বাসভবন থেকে গণভবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।
দুপুর সোয়া একটার দিকে তিনি গণভবন থেকে বেরিয়ে যান।
গণভবনের গেটে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের আতিউর বলেন, বিকেলে তিনি এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন।
ফিলিপাইনের ডেইলি ইনকোয়ারারে ২৯ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮১ মিলিয়ন ডলার লোপাটের খবর এলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচনার ঝড় ওঠে।
খবরে বলা হয়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সুইফট মেসেজিং সিস্টেমে হ্যাংকিংয়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই অর্থ ফিলিপাইনের একটি ব্যাংকে সরিয়ে ফেলা হয়।
শ্রীলঙ্কার একটি ব্যাংকে আরো ২০ মিলিয়ন ডলার সরানো হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক শুরুতেই বিষয়টি টের পেলেও কর্মকর্তারা তা গোপন রাখেন। পরে তা স্বীকার করলেও অর্থের পরিমাণ নিয়ে লুকোচুরি করা হয়।
অর্থ লোপাটের বিষয়টি চেপে গিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেভাবে তা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাকে ‘অযোগ্যতা’ আখ্যায়িত করে ক্ষুব্ধ মুহিত রবিবার বলেছিলেন, এই ‘স্পর্ধার’ জন্য ‘অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ব্যাংক হ্যাকিংয়ের এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা/দের যোগসাজশ থাকতে পারে।
আর যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্ভার থেকেই অর্থ স্থানান্তরের এই আদেশ গিয়েছিল।
শেয়ার করুন