গাজা যুদ্ধ: ইইউ-এর ভূমিকা প্রকাশ্যে, দায়িত্ববিমুখতার নতুন অজুহাত উঠে আসছে
পাটশিল্প উন্নয়নে ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
পহেলা বৈশাখে উপলক্ষে পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক নিয়মিত বৈঠকের এক অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে নিজের দপ্তরে বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৈঠক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পহেলা বৈশাখে বোনাস পেয়ে সারা দেশের মানুষ আনন্দ উৎসব করবে, আর আমার পাট শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা না পেয়ে থালা-বাসন নিয়ে বসে থাকবে- এটা মানতে পারছি না।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে পাট শিল্পের উন্নয়ন, পাট ক্রয় ও পাট শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাবদ ১০০০ কোটি টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন। এর মধ্যে ৬০০ কোটি টাকা শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা বাবদ, ২০০ কোটি টাকা পাট ক্রয় এবং ২০০ কোটি টাকা পাটশিল্পের উন্নয়ন বাবদ।
শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা বাবদ ৬০০ কোটি টাকার মধ্যে ৩০০ কোটি টাকা পহেলা বৈশাখের আগেই শ্রমিকদের দিতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী।
একইসঙ্গে পাটশিল্পের উন্নয়নের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারা পাটশিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য পাট মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রমিকদের সকল বকেয়া পরিশোধ এবং পাট কেনার জন্য প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিজেএমসির নামে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার কথা বলেন।
এ বরাদ্দ পাওয়ায় বিজেএমসি-এর দীর্ঘ দিনের অচলবস্থার নিরসন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এগুলো দীর্ঘ দিনের পাওনা। ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০ সালের কিছু পাওনা আছে। গত তিন বছরের পাওনা বেশি। এর মধ্যে গ্র্যাচুইটির টাকা পাওনা আছে পৌনে তিনশ কোটি টাকা, প্রভিডেন্ট ফান্ডের আছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। শ্রমিকদের গত ৮ সপ্তাহের মজুরি পাওনা আছে ৪৮ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয় বরাদ্দের টাকা ছাড় করলেই সব পাওনা পরিশোধ করা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, শুধু খুলনা এলাকার শ্রমিকরা নয়, দেশের সব মিলের শ্রমিকদের বকেয়া দিয়ে দেওয়া হবে।
বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ পাঁচ দফা দাবিতে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর শ্রমিকরা গত বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। সোমবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে তাদের সকাল-সন্ধ্যা রাজপথ-রেলপথ অবরোধ, যা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকরা।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বিজেএমসির আওতাধীন ২৭টি পাটকলের সবগুলোই এখন চালু। এসব পাটকলের ৭০ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ৩২ হাজার স্থায়ী।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, টাকা ছাড় দিতে প্রক্রিয়াগত সময় বেশি লাগে বলে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় নিজস্ব তহবিল থেকে ৪৮ কোটি টাকা মজুরি পরিশোধ করে দেবে। এর মধ্যে আট কোটি টাকা গত সপ্তাহেই দেওয়া হয়েছে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব এম কাদের সরকারসহ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
News Desk
শেয়ার করুন