গাজা যুদ্ধ: ইইউ-এর ভূমিকা প্রকাশ্যে, দায়িত্ববিমুখতার নতুন অজুহাত উঠে আসছে
‘তৃণমূল বিএনপির’ কমিটি ঘোষণা নাজমুল হুদার
বিএনপির সাবেক নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ‘তৃণমূল বিএনপির’ ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেছেন।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে কমিটি ঘোষণা দিয়ে তিনি বিএনপিকে বাদ দিয়ে ‘তৃণমূল বিএনপির’ সঙ্গে সংলাপে বসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
গত বছরের নভেম্বরে ঢাকার একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে তৃণমূল বিএনপির আত্মপ্রকাশ ঘটে। এরপর প্রায় ৬ মাস পর কেন্দ্রীয় কমিটির নাম ঘোষণা করা হলো।
নতুন এই কমিটিতে চেয়ারম্যান হিসাবে আছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, কো-চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা জাহানারা বেগম, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আরিফ মইনউদ্দিন, মহাসচিব ড. এস জেড এম সালেহ উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান ইসমাত জেরিন খান, আঞ্জুমান সালাউদ্দিন, হাসান ফজলুল হক, ফিরোজ উদ্দিন, রাশেদ মাকসুদ খান, নাজমুল হক পিন্টু, কে এম জাহাঙ্গীর মজুমদার, রুমা আলী, ফেবিয়ান মন্ডল, এল কে চৌধুরী, সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ, অ্যাডভোকেট আবু তালেব, অ্যাডভোকেট সোহান রহমান, বজলুর রহিম চৌধুরী, কায়সার রাইস, চৌধুরী কামালউদ্দিন আহমেদ, ইয়াসমিন হাসান, মোহাম্মাদ মনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজর (অব.) আব্দুর রাজ্জাক, মো. দীন ইসলাম, ড্যানিয়েল রশীদ, নাজিম উদ্দিন চৌধুরী আনেল, জহিরুল হক তালুকদার, যুগ্ম মহাসচিব আক্কাস আলী খান, মৌলানা মো. আবেদ আলী, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, জাহেদ করিম চৌধুরীর নাম ঘোষণা করা হয়।
এছাড়া আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে শাহনওয়াজ রহমান, কোষাধ্যক্ষ হিসাবে শামীম আহসান, দপ্তর সম্পাদক হিসাবে রুকসান আমিন সুরমা, প্রচার সম্প্রাদক হিসাবে মো. তারেক হোসেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে ড. ইকরাম আজিজুল রহমান, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন খান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে মিসেস সানজিদা রহমান, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে দেওয়ান হাবিবুর রহমান, আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে আশানুর রহমান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে শ্রী নিশীথ রঞ্জন গুহ, সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদিকা হিসাবে মিসেস মিতু রহমান, তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে মেহেদী হাসান রাজীব, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদিকা হিসাবে মিসেস রুনা লায়লা, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে শিউলী খানম, সহ-সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে মো. আরিফ হাসান, সহ-সাংগঠনিক বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম চৌধুরী, সহ-দপ্তর বিষয়ক সম্পাদক হিসাবে মিঞা মো. ইশতিয়াক, সহ-প্রচার সম্পাদক হিসাবে শ্রী সাগর মনোনীত হয়েছেন। এ সময় কেন্দ্রীয় কমিটির ২২ জন সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়।
এদিকে একই সময় তৃণমূল বিএনপির ১৯ টি জেলায় আহ্বায়ক কমিটির নামও ঘোষণা করেন নাজমুল হুদা।
জেলাগুলো হলো- ঢাকা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, মাগুরা, চূয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, পাবানা, নাটোর, টাঙ্গাইল, দিনাজপুর, চট্রগ্রাম, বাঙ্গামাটি, জয়পুরহাট, চাপাইনবাবগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, কক্সবাজার, শেরপুর, জামালপুর, ময়মনসিংহ, পিরোজপুর, লক্ষ্মীপুর, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঠাকুরগাঁও, নরসিংদী।
‘তৃণমূল বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটি ঘোষণা এবং সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির তৃণমূল বিএনপিতে যোগদান’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে নাজমুল হুদা বলেন, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর করতে হলে যদি সংলাপের প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই সংলাপ করবেন। কিন্তু যে বিএনপি নির্বাচন, গণতন্ত্র ও নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরে ‘বিশ্বাস করে না’ তাদের সঙ্গে সংলাপ নয়।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি বলেছিলেন, আমাদের ৩১ দলীয় জোটের সঙ্গে কাজ করবে আওয়ামী লীগ। তাই আসুন, দেশে অস্থিরতা দূর করতে সংলাপে বসি। দেশের সমস্যা সমাধানে আমরা আপনাদের সকল ধরনের পরামর্শ দেব।
বিএনপি থেকে বহিষ্কার
১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করলে দলটির প্রথম স্থায়ী কমিটির সর্বকনিষ্ঠ সদস্য ছিলেন নাজমুল হুদা। খালেদা জিয়ার দুই সরকারের আমলে তিনি মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।
নাজমুল হুদা ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা দেওয়ার কারণে মন্ত্রিত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ২০১০ সালের ২৩ জুন তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি তখন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান।
ভুল স্বীকার করে খালেদা জিয়ার কাছে আবেদন করার পর ২০১১ সালের ৭ সেপ্টেম্বর আবার বিএনপির সদস্যপদ ফিরে পান নাজমুল হুদা। কিন্তু ২০১৪ সালের ৬ জুন সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অভিমানের কথা তুলে ধরে বিএনপি ত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।
ঢাকার দোহারের এই সাবেক এমপি বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সে সময় তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলাও হয়েছিল।
২০১০ সালে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর নাজমুল হুদা বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে নতুন দল খোলেন। অবশ্য ওই দল থেকেও তিনি বহিষ্কৃত হন।
দ্বিতীয় দফা বিএনপি ছড়ার পর ২০১৪ সালের মে মাসে তিনি গঠন করেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স- বিএনএ। কিন্তু ওই দলের তেমন কোনো কার্যক্রম না থাকায় এক পর্যায়ে তার বিএনপিতে ফেরার গুঞ্জন ওঠে।
এরপর ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর নাজমুল হুদা ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি’ গঠনের ঘোষণা দেন। আর গত বছর জানুয়ারিতে ৩০টি দল নিয়ে ‘বাংলাদেশ জাতীয় জোট’ নামে নতুন একটি মোর্চা গঠনের ঘোষণা দেন তিনি।
সবশেষ গত নভেম্বরে ‘তৃণমূল বিএনপি’ নামে নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেন নাজমুল হুদা।
শেয়ার করুন