‘সম্প্রতি কালবেলা পত্রিকা একটি বড় ধরনের গুজব ছড়িয়েছে
তিন কোটি টাকার চেক দিয়ে ডিসির পদায়নের খবরটি ভুয়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন জনপ্রশাসন সচিব মো. মোখলেস উর রহমান। ‘৩ কোটি টাকার চেক দিয়ে ডিসির পদায়ন’ নিয়ে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সিনিয়র সচিব এ কথা জানান।
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘সম্প্রতি কালবেলা পত্রিকা একটি বড় ধরনের গুজব ছড়িয়েছে। ছবি দিয়ে একেবারে ভাইরাল নিউজ করেছে। এ ব্যাপারে আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, একটা খবর দেওয়ার আগে ভেরিফিকেশন করা। এটা কিছুই ছিল না। একটা ভুয়া খবর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এই ধরনের একটা খবর ছাপিয়ে আপনাদের সম্পর্কে একটি প্রশ্নবোধক এসে যায়।’
মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘এখানে কী ছিল? একজন, উনার নাম মির্জা সাবেদ আলী। একটা ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন পদ্মা ব্যাংকে। ২০০০ টাকা দিয়ে অ্যাকাউন্টটি খুলেছিলেন ২০২৩ সালে। যেদিন তদন্ত করা হয় সেই অ্যাকাউন্টে ব্যালান্স ছিল জিরো টাকা। কোনো টাকাই নেই।’
‘এই ধরনের নিউজ করে জাতিকে বিভ্রান্ত করে কী লাভ? এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট পাওয়া গেছে। ব্যাংকের যিনি ম্যানেজার ছিলেন ফর্ম পূরণ না করে তার অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়েছিল। যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছিল সে ঠিকানায় সে আদৌ থাকে না। সেই লোকের ওইদিন থেকে মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। যে তিন কোটি টাকার চেক দিতে পারে সে কি এত হালকা হবে?’
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘এককথায় বলে দিতে পারি, ভুয়া একটি বিষয়কে জাতীয় পর্যায়ে এনে মানুষকে বিব্রত করা হয়েছে। এতে কেউ ছোট হয় না, দিন শেষে যারা এটা করেছে তারাই ছোট হয়েছে।’
মোখলেস উর রহমান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংককে আমরা অনুরোধ করবো সব ব্যাংকে যেন নির্দেশনা দেয়, এটা আছে তবু আবার নতুন করে অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে কী কী নিয়ম মানা হবে। এ ধরনের একটা ফেক লোক এত বড় একটি ঘটনা ঘটিয়ে পালিয়ে গেছে, এ ব্যাপারে তার বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ বিভাগকে অনুরোধ করছি।’
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আমরা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে রিকোয়েস্ট লেটার দেবো, এই মন্ত্রণালয় যাতে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়।’
গত ২৪ সেপ্টেম্বর দৈনিক কালবেলায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদের কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি চেক উদ্ধার করা হয়েছে। নওগাঁর ডিসি হিসেবে পদায়ন হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মো. আব্দুল আউয়ালের পক্ষে ওই যুগ্মসচিবকে চেকটি দেন মো. মীর্জা সবেদ আলী নামের এক ব্যবসায়ী। কাঙ্ক্ষিত জেলায় পদায়ন না হওয়ায় চেকের বিপরীতে টাকা জমা দেওয়া হয়নি।
সংবাদ প্রকাশের পর অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ২৪ সেপ্টেম্বরই অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে চেকের সত্যতা যাচাই করে তিনদিনের মধ্যে সুস্পষ্ট মতামতসহ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন