নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে বন্ধ করা হলো নাট্যোৎসব: ফারুকী
সকল প্রস্তুতি শেষ হলেও নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে বন্ধ করা হয়েছিল ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব। আয়োজকেরা জানিয়েছেন ‘একদল ব্যক্তির হুমকির মুখে’ স্থগিত করা হয়েছে এই উৎসব। তবে কে বা কারা এই হুমকি দিয়েছিল তা স্পষ্ট করেননি তারা।
সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে ‘তৌহিদি জনতার’ বিরোধীতায় কয়েকটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত হয়। সেকারনে জনমনে একটা ধারনা হয়েছিল এমনই কোনো কারণে এই নাট্যোৎসব স্থগিত হয়েছে। কিন্ত না, এই উৎসব স্থগিতের পেছেনে রয়েছে নাট্যকর্মীদের একটা অংশ। আজ ফেসবুকে এক পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
নাট্য উৎসব বন্ধের খবরটা দেখে আমরা কাল সন্ধ্যা থেকেই খোঁজ খবর নেয়া শুরু করি। কারন সরকার শিল্পকলার মাধ্যমে সারাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছড়িয়ে দিতে উৎসাহ দিচ্ছে, গতকালও শিল্পকলায় তিনটা প্রদর্শনী হলো। আজকেও প্রাচ্যনাটের শো আছে শিল্পকলায়। তাহলে এখানে কেনো পুলিশ উৎসব বন্ধ করতে বলবে?
পুলিশ এইরকম কিছুই বলেনি। কালকে রাতেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে তারা কাউকে উৎসব বন্ধ করতে বলেনি। বরং তারা নিরাপত্তা দিতে প্রস্তুত।
তাহলে?
আমাদের দ্রুত অনুসন্ধান থেকে জানা গেলো, নাট্যকর্মীদের মধ্যেই একটা অংশ এই উৎসবের বিরোধিতা করে মহিলা সমিতি কর্তৃপক্ষের কাছে হল বরাদ্দ বাতিলের জন্য জোর দাবী জানিয়ে আসছে বেশ কিছুদিন ধরে। সংক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীদের দাবি, এই উৎসবের আড়ালে জুলাই আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতা হত্যায় বিবৃতি দিয়ে উস্কানী দেয়া কিছু ব্যক্তি বা তাদের গোত্রীয় কিছু মানুষ সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। তারা দাবী জানায় জুলাইয়ে তাদের ভুমিকার জন্য বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আগে কোনো পূনর্বাসন চলবে না। অবশেষে কালকে মহিলা সমিতি বরাদ্দ বাতিল করে (যারা ওয়াকেবহাল না তাদের জন্য বলা দরকার- মহিলা সমিতি বরাদ্দ দেয়া এবং বাতিল করা কোনোটাই সরকারের এখতিয়ার না)।
বিবৃতিতে তারা এইসব কিছু না বলে কৌশলে প্রথমে পুলিশের কাঁধে দোষ চাপানোর চেষ্টা করলো। এবং বিবৃতির শেষে বললো- মবের কারনে উৎসব বাতিল করতে হলো। তারা তো জানেই কারা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। তাদের পরিচয় না লিখে মব বলে চালিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য কি একটা বিশেষ ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠা করা? বা কেনো ঐ বিক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীরা প্রতিবাদ করছে তারা জানে। কিন্তু সেটাও তারা বিবৃতিতে উল্লেখ না করা কি ঐ বিশেষ ন্যারেটিভ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা কিনা সেটা সবাই ভেবে দেখতে পারেন।
পাশাপাশি আরেকটা প্রশ্নও আসে, জুলাইয়ে তাদের ভুমিকার জন্য জাতির কাছে এখনো কি একবারও ক্ষমার চাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেছে তারা?
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন