দীপিকা-রণবীরের বেবি দুয়া: মায়ের চোখ নিয়ে ইন্টারনেটে ভাইরাল হচ্ছে ছবি
বাংলাদেশে জঙ্গিবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেফতার দেড় হাজার
সারা দেশে জঙ্গিবিরোধী বিশেষ যৌথ অভিযান ও পুলিশের চলমান অভিযানে ১১শ’ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের ১৬, জেএমবির ৩ ও ছাত্রীগের এক জনসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মামলার পরোয়ানভুক্ত আসামি রয়েছে। পুলিশ সদর দফতরের তদারকিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে সাতদিনের জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এছাড়া পুলিশ সদর দফতরের তদারকিতে ৬ জুন থেকে চলছে বিশেষ অভিযান। কিছু এলাকায় কম্বিং (চিরুনি) ও কম্বাইন্ড অপারেশনও চলছে।
পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড প্লানিং) একেএম শহীদুর রহমান শুক্রবার সন্ধ্যায় বলেন, অভিযান জোরদারভাবে চলছে। ঠিক কতজন গ্রেফতার করা হয়েছে সেটা আজ শনিবার হিসাব করা হবে।
দেশজুড়ে জঙ্গিদের অপ্রতিরোধ্য টার্গেট কিলিংয়ের প্রতিরোধ ব্যবস্থা হিসেবে এ অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অভিযান শুরুর মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যেই পাবনায় খুন হন মন্দিরের সেবায়েত নিত্যারঞ্জ পাণ্ডে। এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে জঙ্গিরা অভিযানকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে কিনা জানতে চাইলে শহীদুর রহমান বলেন, অভিযানের মধ্যেই সেবক নিত্যারঞ্জের হত্যার বিষয়টি দুঃখজনক। তবে অভিযান চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়টি ঠিক নয়। পুলিশি অভিযান জোরদারভাবে চলছে এবং সেটি অব্যাহত থাকবে।
পুলিশ সদর দফতরের অপর একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ঠিক কতজন জঙ্গি সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোন জেলা বা রেঞ্জে কতজন গ্রেফতার হয়েছে সেটা হিসাব করে আজ জানাবেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দফরে বিশেষ বৈঠক ডেকে এ অভিযানের নির্দেশ দেন আইজিপি একেএম শহীদুল হক। এতে দেশব্যাপী জঙ্গিদের তালিকা হালনাগাদ করার নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর নজরদারি বাড়াতে বলা হয়। বিভিন্নস্থানে আগন্তক ও ভাড়াটিয়াদের ওপর নজরদারি বাড়ানোর এবং বিদেশী নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়াতে বলা হয়।
জঙ্গিবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা, সব বিভাগীয় শহর, জেলা ও থানাগুলোতে একযোগে বিশেষ অভিযান চলছে। এতে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, আদালতের পরোয়ানা তামিল, অবৈধ অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য উদ্ধারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। অভিযানে খাদ্যে ভেজালকারী, ফরমালিন ও রাসায়নিক উপাদান মিশ্রিত ফলের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে পুলিশ।
বিভিন্ন জেলার খবর-
সিলেট : সিলেট জেলায় ৩০, মৌলভীবাজারে ৪১, হবিগঞ্জে ৪৮ ও সুনামগঞ্জ জেলায় ৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অধিকাংশই বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি। এছাড়া সিলেট নগরী থেকেও আরও ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম : জেলার ১৬ থানা এলাকা থেকে ১৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এতে জঙ্গি বা তালিকাভুক্ত সুনির্দিষ্ট কোনো অপরাধী ধরা পড়েনি।
নওগাঁ : জেলার সদর উপজেলায় ২৯, মান্দায় ১১, মহাদেবপুরে ৭, নিয়ামতপুরে ৭, পোরশায় ২, সাপাহারে ৬, রানীনগরে ১২, আত্রাইয়ে ১০, বদলগাছীতে ৮, পত্নীতলায় ১২ এবং ধামুইরহাটে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
খুলনা : মহানগরীর আট থানায় ৩১ ও জেলার বিভিন্ন থানায় আরও ৭১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাসী নেই।
দিনাজপুর : জেলার ১৩ উপজেলা থেকে একশ’ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন চিরিরবন্দর উপজেলা জামায়াত-শিবির কর্মী।
টাঙ্গাইল : জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে সদর উপজেলার হুগড়া থেকে চরমপন্থীদলের নেতা খোকা ও মুকুল রয়েছে।
নড়াইল : জেলার সদর উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ওহিদুজ্জামান ও কর্মী আজিজুল ইসলামসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া লোহাগড়ায় ১৩, কালিয়ায় ৮ ও নড়াগাতী থানায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
বাগেরহাট : জেলার নয় থানা এলাকা থেকে ৭২ জনকে আটক করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া : জামায়াত-শিবিরের ৬ নেতাকর্মীসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৬৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নবীনগর ও আখাউড়া : নবীনগর থেকে জেলা জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমীর গোলাম ফারুক ও আখাউড়ার শিবির নেতা মাহমুদকে দুই ভাইসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা : চাঁদাবাজি ও ইয়াবা সেবনের অভিযোগে শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাফিজুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে জামায়াত ও শিবিরের দু’জনসহ আরও ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রাজশাহী : মহানগরীর চার থানা এলাকা থেকে ৩১ জনকে আটক করা হয়েছে।
নাটোর : জেলার ২৭ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া মোটরসাইকেলে অতিরিক্ত যাত্রী, বৈধ কাগজপত্র না থাকা ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলাচল করার অভিযোগে প্রায় ৪০টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
বরিশাল : গৌরনদী উপজেলায় ১, মুলাদীতে ১, আগৈলঝাড়ায় ৪, মেহেন্দিগঞ্জে ৭, হিজলায় ৩, বাকেরগঞ্জে ৪, বাবুগঞ্জে ২ ও বানারীপাড়ায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গাইবান্ধা : সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের পূর্ব বেলকা গ্রামের জামায়াত কর্মী ওসমান আলীসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ২৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) : কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) : ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ৫ জনকে আটক করা হয়েছে।
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) : চিলমারী উপজেলায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শেরপুর : সদর থানা পুলিশ মারুফ হাসান রনি নামে জেএমবির এক সদস্যকে আটক করেছে। মারুফ নওহাটা মহল্লার মনসুর আলীর ছেলে।
কাপাসিয়া (গাজীপুর) : কাপাসিয়ায় আলমগীর নামে এক শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া গ্রামে।
রাজবাড়ী : জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মদন (নেত্রকোনা) : মদন উপজেলার জামায়াতের সাবেক আমীর ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আমীনকে নিজ বাসা থেকে আটক করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ : জেলার সদর, বেলকুচি ও উল্লাপাড়া থেকে বিএনপি-জামায়াতের ৪ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বান্দরবান : আলীকদম উপজেলা শিবির সভাপতি মোহাম্মদ সোয়েরকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ : ফুলবাড়ীয়া উপজেলা সদর থেকে জেএমবির সক্রিয় সদস্য মো. টুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বগুড়া : শেরপুরের বাগানবাড়ি এলাকায় একটি বাসায় গোপন বৈঠককালে সাগর আহমেদ রনি নামে এক জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। রনি রাজশাহীর মতিহার থানার ডাসমাড়ি গ্রামের কামরুজ্জামান ওরফে লাল চাঁনের ছেলে।
শেয়ার করুন