১৬ জুন পালিত হল সংবাদপত্রের কালো দিবস
সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই গণমাধ্যমে একের পর এক কালো দিবস উপহার দিয়েছে জাতিকে । সংবাদপত্র সাংবাদিক দলন আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য। এখন বাংলাদেশের গণমাধ্যমে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাতে প্রতিটি দিনই গণমাধ্যমের জন্য কালো দিবস। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইউনিয়ন কার্যালয়ে বিএফইউজে এবং ডিইউজের উদ্যোগে ১৬ই জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সাংবাদিক নেতারা একথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিইউজের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার। বিএফইউজে’র সহকারি মহাসচিব মোদাব্বের হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বিএফইউজের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, বিএফইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি নুরুল আমিন রোকন, ইনকিলাব এর সহকারী সম্পাদক আবদুল আউয়াল ঠাকুর, ডিইউজের সহ-সভাপতি খুরশীদ আলম ও সৈয়দ আলী আসফার, কোষাধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, বিএফইউজের নেতা আবু ইউসুফ, জাকির হোসেন, সাংবাদিক নেতা শেখ রকিবউদ্দিন, বাছির জামাল, খন্দকার গোলাম আজাদ, সামসুল হক বসুনিয়া, শহিদুল ইসলাম, সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী, সরদার সাহাদাত হোসেন, এইচ এম আল-আমিন প্রমুখ।
রুহুল আমিন গাজী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই মিডিয়া বন্ধ করে। দেশে এখনও এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা চলছে। ভিন্নমত সহ্য করতে পারছে না। ভিন্নমত পোষনকারীদের গুলিকরে হত্যা করা হচ্ছে। দেশ থেকে নির্বাচনকে হত্যা করা হয়েছে। এ সবের মাধ্যমে দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করার অপচেষ্টা চলছে। দেশে কথা বলার স্বাধীনতা নেই। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এর মোকাবেলা করতে হবে।
এম আবদুল্লাহ বলেন, আমরা চল্লিশ বছর আগের একটি কালো দিবস পালন করছি। অথচ আওয়ামী লীগ এদেশের গণমাধ্যমে অসংখ্য কালো দিবস সৃষ্টি করেছে। দেশে এখন প্রতিটি দিনই গণমাধ্যমের কালো দিবস। আওয়ামী লীগ যখনি ক্ষমতায় এসেছে অনেক কালো দিবস উপহার দিয়েছে। ছিয়ানব্বই সালে এসে দৈনিক বাংলাসহ রাষ্ট্রীয় চার সংবাদপত্র বন্ধ কওে কালো দিবস উপহার দিয়েছে। এবার আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে, মাহমুদুর রহমান, শওকত মাহমুদ, শফিক রেহমান, আবদুস সালামকে গ্রেফতার করে, সাগর-রুনীসহ ২৭ জন সাংবাদিক হত্যা করে গণমাধ্যমে বহু কালো দিবসের জন্ম দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য বিএফইউজে ও ডিইউজের আন্দোলন চলছে এবং চলবে। আরও কালো দিবস থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহŸান জানান তিনি।
আবদুল হাই শিকদার বলেন, দেশে গণমাধ্যমের পরিস্থিতি ভয়াবহ। বাংলাদেশের গণমাধ্যমের যে পরিস্থিতি তাতে প্রতিটি দিন গণমাধ্যমের জন্য কালো দিবস। আওয়ামী লীগ এবং গণতন্ত্র একসাথে চলে না। আওয়ামী লীগ এবং নির্বাচন পরস্পরের প্রতিপক্ষ, আওয়ামী লীগ এবং গণমাধ্যম পরস্পরের প্রতিপক্ষ, আওয়ামী লীগ এবং বাক-ব্যক্তি স্বাধীনতা পরস্পরের প্রতিপক্ষ। তাই এই অবস্থা থেকে মুক্তিপেতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোল চালিয়ে যেতে হবে।
এমএ আজিজ বলেন, সংবাদপত্র মানেই বহুমত। ১৬ই জুন ১৯৭৫ সালে এই বহুমতকে টুটি চেপে হত্যা করা হয়েছিল। দেশে বর্তমানে জঙ্গি দমনের নামে ১৭ হাজার লোককে গ্রেফতার করেছে। সর্বোপরি সরকার গণতন্ত্রের নামে একদলের শাসন কায়েম করেছে।
জাহাঙ্গীর আলম প্রধান বলেন, পরিকল্পিত ভাবেই একটি সম্প্রদায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চায়। যে কয়টি সংবাদপত্র এখনো টিকে আছে সেখানেও নিবর্তমূলক আচরণ করা হচ্ছে। তিনি আটক সকল সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে অবিলম্বে মুক্তি দাবি এবং বেকার সাংবাদিকদের সরকারী কোষাগার থেকে বেকার ভাতা দাবি করেন।
আব্দুল আওয়াল ঠাকুর বলেন, আজ গোটা দেশে দলন নিপিড়ন চলছে। সরকার একটি সেবাদাসে পরিনত হয়েছে। ফলে দেশে একটি বিস্ফোরণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যে কোন সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। সে জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
শেয়ার করুন