আপডেট :

        ধর্ষকের শাস্তি সবার সামনে হোক: সোহম

        বায়ার্নের দাপটে বিদায় ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গো, পিএসজির মুখোমুখি কোয়ার্টারে

        ধর্ষণ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুরাদনগরে রাজনৈতিক উত্তেজনা: কে দায়ী?

        ইরানের কঠোর হুঁশিয়ারি: ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি

        এশিয়া কাপের সম্ভাব্য সূচি জুলাইয়ে প্রকাশিত হবে

        সরকারের প্রতিশ্রুতি ব্যর্থ: জুলাই সনদ প্রকাশ করবে এনসিপি - নাহিদ ইসলাম

        রথযাত্রার উৎসবে বিপর্যয়: উড়িষ্যায় ভিড়ে পিষ্ট হয়ে ৩ মৃত, ১০ জন আহত

        মনু মিয়ার শেষ বিদায়ে অভিনেতা খায়রুল বাসারের মানবিকতার জয়

        মেসি-রোনালদো: সময় পেরিয়েও অপ্রতিরোধ্য ফুটবলের দুই কিংবদন্তি

        মুরাদনগরের অশান্তির জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয়দাতারা দায়ী: আসিফ মাহমুদ

        ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্পে পাকিস্তানে দুইবার কাঁপল ধরিত্রী

        হিরো আলমের যত্নে রিয়া মনি, প্রকাশ করলেন তার শারীরিক অবস্থা

        হাছিনা নয় শেখ হাসিনা নয়, তবুও বারবার বদলাচ্ছে স্কুলের নাম

        জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন বাজেট: ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩২৩ কোটি টাকা

        কোকেন উৎপাদনে ঐতিহাসিক উচ্চতা, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উদ্বেগ

        ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ক জোরদারে প্রস্তুত পুতিন, নতুন যোগাযোগের আভাস

        স্বর্ণের বাজারে ধস: এক মাসে সর্বনিম্ন দামে পৌঁছাল হলুদ ধাতু

        সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, আমদানি-রপ্তানি বন্ধ, ৩০০ গাড়ি অপেক্ষায়

        ট্রাম্পের দাবি: খামেনির প্রাণ বাঁচিয়েছি, ধন্যবাদ পাইনি

        এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য জরুরি নির্দেশনা: কেন্দ্রে প্রবেশ নিয়ে নতুন নিয়ম

নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়া ‘অন্তর্বতী সরকারের রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতার ফল’

নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়া ‘অন্তর্বতী সরকারের রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতার ফল’

নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়াকে ‘অন্তর্বতী সরকারের রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতার ফল’ হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নির্বাচনের রোডম্যাপ দিলে রাজনৈতিক সংকটগুলো ‘অনেকাংশে কমে যাবে’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এক আলাপচারিতায় বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।


বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরা, দেশের ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থানের শঙ্কা, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড ও সংস্কার বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমার কাছে যেটা মনে হয়, সুনির্দিষ্টভাবে রোডম্যাপ না দেওয়াটা এটা উনাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) কিছুটা, এটা অনেকটা রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা থেকে আসছে।”

“কারণ, এই সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিলেই কিন্তু রাজনৈতিক সংকট যেগুলো আছে সেগুলো অনেকাংশে কমে যাবে। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের দিকে ঝুঁকে যাবে, অন্য যে বিষয়গুলো তৈরি হচ্ছে সেগুলো কম তৈরি হবে। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।”


মির্জা ফখরুল বলেন, “এতো বেশি কথা হচ্ছে কেন? কারণ আওয়ামী লীগ এখন দৃশ্যমান না। বিএনপি দৃশ্যমান বড় দল হিসেবে, তার পরের দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী আছে, তারাও দৃশ্যমান। অন্যান্য দল, ছাত্রদের যে নতুন দল সেটা উঠে আসছে, ভালো হয় যদি, ভালো।”

‘উগ্রপন্থার উত্থানের শঙ্কা আছে’

মির্জা ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ উদার গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ করা জাতি। বাংলাদেশের মানুষ উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, এ দেশের মানুষ ধর্ম মানে, ভীষণ ধর্মভীরু। কিন্তু ধর্মান্ধ নয়।

“তাকে দিয়ে ধর্মের নামে কিছু করাতে পারবেন না। আজ পর্যন্ত, ৫৪ বছর হয়েছে, ধর্ম নিয়ে কোনো উন্মাদনা এখানে হয়নি।”

তবে তিনি মনে করেন, “আওয়ামী লীগ তার নিজের স্বার্থে ছাপ লাগানোর চেষ্টা করেছে যে জঙ্গিবাদ বাড়ছে, অমুক বাড়ছে, তমুক বাড়ছে। তবে হ্যাঁ ভয় আছে। আজকে যদি লিবারেল পার্টিগুলোকে সুযোগ কম দেওয়া হয়, তাদের যদি আটকে দেওয়া হয় তাহলে কিন্তু জঙ্গিবাদের উত্থানের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।”

২০২৩ সালের ৩১ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর- ফাইল ছবি।
২০২৩ সালের ৩১ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর- ফাইল ছবি।


‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কিনা জনগণ ঠিক করবে’

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা রাজনীতি করি, আমাদের রাজনীতিতে নিশ্চয়ই কৌশল থাকবে, আমাদের রাজনীতি ও কথার মধ্যে ডিপ্লোমেসি থাকবে…এটা বাস্তবতা। আমরা সুস্পষ্টভাবে যেটা কথা বলার চেষ্টা করেছি যে, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করবে কি করবে না, এই সিদ্ধান্তটা নেবে জনগণ।”

“কীভাবে নেবে, না নেবে সেই সিদ্ধান্ত পরের। তবে এই ব্যাপারে আমাদের কোনো সন্দেহ নাই, আমাদের কোনো দ্বিমত নাই যে, যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে অবিলম্বে, আরও দ্রুততার সঙ্গে বিচার হওয়া উচিত এবং শাস্তি হওয়া উচিত।”

জনগণ কিভাবে সিদ্ধান্ত নেবে জানতে চাইলে ‘অনেক পথ আছে, এটা এখন সুস্পষ্টভাবে বলা যাবে না’, বলেন বিএনপি মহাসচিব।

‘কোনো কোনো মহল নির্বাচন বিলম্ব করতে চান’

মির্জা ফখরুল বলেন, “কালকে (শনিবার) আমি একটা অনুষ্ঠানে বলেছি যে, আমার কাছে গত কয়েকদিনের ঘটনা থেকে মনে হয়েছে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার একটা প্রবণতা আছে। সচেতনভাবে কোনো কোনো মহল নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চায়। এতে তাদের নিজেদের স্বার্থ থাকতে পারে, বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে সেজন্য তারা নির্বাচনকে কিছুটা পিছিয়ে দিতে চান।”

সংস্কারের কারণে নির্বাচন পেছানোর কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পান না তুলে ধরে তিনি বলেন, “সংস্কার সংস্কারের মত চলবে, নির্বাচন নির্বাচনের মত চলবে। তারপরও তো আমরা বলেছি যে, একটা অর্থবহ নির্বাচনের জন্য, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যে টুকু ন্যূনতম সংস্কার করা দরকার, বিশেষ করে নির্বাচন ব্যবস্থার, বিচার ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা ব্যাপার, এটা দ্রুত করতে হবে।”

‘নির্বাচন নিয়ে সমস্যা হলে রাস্তায় নামব’

নির্বাচন নিয়ে সংকট হওয়ার শঙ্কা দেখছেন কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যদি দেখা যায় যে, নির্বাচনের ব্যাপারে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। নির্বাচনটা দরকার জনগণের স্বার্থে।”

“সেই কারণে আমরা মনে করি যে, ইন দ্যাট কেইস আমাদেরকে আবার রাস্তায় নামতে হতে পারে।”

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ২৯ অগাস্ট প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-ফাইল ছবি।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ২৯ অগাস্ট প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর-ফাইল ছবি।


‘আদালতের রায়ে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে’

আওয়ামী লীগের আমলে নির্বাচন যে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হয়নি তা আদালতের রায়ে প্রমাণিত হয়েছে বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, “এটা আমি মনে করি, সত্যের জয় হয়েছে। নির্বাচন যে সঠিক ছিল না আওয়ামী লীগের আমলে, তা প্রমাণিত হয়েছে এবং এই রায়ে ন্যায়ের বিজয় হয়েছে।”

“এখন ইশরাকের বিষয়টি ইশরাক ডিসাইড করবেন, পার্টি ডিসাইড করবে। এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”

‘বিএনপিকে ভারতপন্থি বলা উদ্দেশ্যেমূলক’

আওয়ামী লীগের আমলে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে দীর্ঘদিন বিএনপির হাল ধরে রাখা মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা বলছি যে, আমরা কোনো দেশের পক্ষে নই। আমরা কোনো দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে চাই না। আমরা যেটা করতে চাই, আমাদের স্বার্থে করতে চাই।

“আমাদের পানি সমস্যার সমধান যদি হয়, আমাদের সীমান্তে যদি হত্যা বন্ধ হয়, আমাদের যদি বাণিজ্যের ভারসাম্য ঠিক হয় তাহলে অবশ্যই সেগুলোতে আমরা গুরুত্ব দেব। সেই সঙ্গে ভারতও তার স্বার্থ দেখবে।

“ঠিক একইভাবে পাকিস্তানের সাথে আমাদের ট্রেড বাড়ছে, সেটাকে আমরা ওয়েলকাম জানাই, আরও বাড়ুক সেটা আমরা ওয়েলকাম জানাই। আমেরিক ইন্টারেস্টেড হচ্ছে কিছু কিছু জায়গায় ইনভেস্ট করার জন্য, যদি ইনভেস্ট করে অত্যন্ত ভালো, চীন যদি ইনভেস্ট করে ভালো।”

তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্যটা হচ্ছে কী, এখানে বিভিন্ন দেশ বিনিয়োগ করুক, তাতে করে আমাদের কর্মসংস্থান বাড়ুক, আমার ইকোনমিটা আরও সমৃদ্ধ হোক, দেট ইজ মাই ইন্টারেস্ট। কিন্তু বিএনপিকে ভারতপন্থি হিসেবে চিহ্নিত করার পেছনে উদ্দেশ্য আছে।”

মির্জা ফখরুল দাবি করেন, “জন্মের পর থেকে বিএনপি যে অবস্থান নিয়েছে সেটা হচ্ছে দেশের পক্ষে অবস্থান। জিয়াউর রহমান সাহেব থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমাদের একটা পদক্ষেপ কি দেশের স্বার্থের বাইরে গেছে, যায়নি। যাবেও না।”

সামাজিক মাধ্যমে কিছু কিছু ব্যক্তির বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি তাদের কথার মধ্যে অ্যানার্কি খুঁজে পাই, নৈরাজ্য খুঁজে পাই।”

“এই কথাগুলো যারা বলছেন তারা আসলে কার পারপাস সার্ভ করছেন? এটা প্রশ্ন করা উচিত যে আপনি যে প্রশ্নগুলো করছেন, দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন, অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাচ্ছেন, এতে কার পারপাস সার্ভ হচ্ছে। যে বাংলাদেশের ক্ষতি করতে চায় তারই তো পারপাস সার্ভ করা হচ্ছে।”

‘সেনাবাহিনীকে যারা বিতর্কিত করে তারা দেশের পক্ষে নয়’

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি মনে করি যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা কোনো মতেই উচিত না। এটা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, এটা শুধু আমাদের কাছে স্বীকৃত না, আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। আমি জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেসের সঙ্গে মিটিংয়ে নিজে উপস্থিত ছিলাম। তিনি যে উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর, এতে আমি নিজেকে খুব গর্বিত বোধ করেছি।”

গত ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের দিনে সেনাবাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তারা প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হচ্ছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, জনগণের সঙ্গে সবসময় আছে। সুতরাং আমাদের সেনাবাহিনীকে নিয়ে যারা কথা-বার্তা বলে, তাদেরকে বিতর্কিত করতে চায় আমি মনে করি না যে তারা বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে থাকে।”

‘কতিপয় উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন’

সরকারি অর্থ বরাদ্দ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর হওয়ার কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় কয়েকজন উপদেষ্টা সম্পর্কে যে রিপোর্ট দেখেছি তাতে করে বলা যেতে পারে, আমরা আশাহত হয়েছি।

“যেমন সরকারের টাকা বিভিন্ন খাতে, সেই সমস্ত উপদেষ্টা যারা আপনার জড়িত, তারা ব্যয় করছেন। দলের সঙ্গে যারা জড়িত… এটা কখনো নিরপেক্ষতা বহন করতে পারে না।

“দলকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করা, এটাও আমরা শুনতে পারছি, বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে দেখতে পারছি। এগুলোতে আমরা মনে করি যে, সরকার নিরপেক্ষতা হারাচ্ছে।”

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে ‘সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা’ আশা করেন তুলে ধরে তিনি বলেন, “অধ্যাপক ইউনুস সাহেব যদি মনে করেন, কারো জন্য নিরপেক্ষতা ব্যাহত হচ্ছে তাকে কেবিনেট থেকে বের করে দেওয়া উচিত। তা যদি না হয়, তাহলে তো মানুষ মনে করবেই যে সরকার নিরপেক্ষ থাকতে পারছে না।”

এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, “সরকার নিরপেক্ষ না হলে আমরা কোনো মতেই সেটা মেনে নেব না। যদি এরকম কিছু দাঁড়ায় যে, নিরপেক্ষ না, তাহলে তো মেনে নেওয়ার প্রশ্ন উঠে না।”

তবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সরকার নিরপেক্ষা না, এখনই এরকম কোনো পরিস্থিতি আমরা দেখছি না। যদিও অনেকটা আমরা ওভারলুক করে যাচ্ছি। যেমন আপনার সরকারি টাকা বরাদ্দ করা, সুনির্দিষ্ট এলাকায় মসজিদের জন্য, মন্দিরের জন্য টাকা দেওয়া, উন্নয়নের জন্য কাজ দেওয়া, এগুলো তো হচ্ছে।”

সরকার যে সবাইকে সমান চোখে দেখছে না, এসব ঘটনা সেই বার্তাই দেয়, বলেন তিনি।

‘ওভারলুক’ বলতে কি বুঝিয়েছেন, জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, “আমরা যৌক্তিক সময় দিচ্ছি, দেখা যাক ইউনুস সাহেব কীভাবে রি-অ্যাকট করেন।”

শিক্ষার্থীর নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি কী রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে, এ প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, “এই মুহুর্তেই আমি এই বিষয়ে কমেন্টটা করব না। তবে আপনাদের পত্র-পত্রিকা, মিডিয়াতে এই ধরনের কিছু কিছু নিউজ বেরুচ্ছে সেগুলো আমরা অবজারভেশন করছি।”

‘তারেক কবে আসবেন’

সব মামলার ফয়সালা হওয়ার পরও তারেক রহমান কবে আসবেন সে বিষয়ে বিএনপির কাছ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “দেখুন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য একটা রাজনৈতিক দলের পক্ষে দেওয়া খুব কঠিন হয়। বিশেষ করে যখন আমাদের কৌশল এখনো নির্ধারিত হয়নি, আমরা আমাদের নির্বাচনের কৌশল এখনো নির্ধারণ করিনি।

“আমরা যখন এটা নির্ধারণ করতে পারব, তখন সুস্পষ্টভাবে এই বিষয়ে বলতে পারব।”

‘ইউনুসের চীন সফর ইতিবাচক’

মির্জা ফখরুল বলেন, “উনার (প্রধান উপদেষ্টার) চীন সফরকে আমি ভালোভাবে দেখি, ইতিবাচকভাবে দেখি। আমার মনে হয়েছে যে, পজেটিভ ম্যাসেজ আমরা পেয়েছি। কারণ ভূ-রাজনৈতিকভাবে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা এটা আমাদের খুব প্রয়োজন।”

বিএনপির ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের’ নীতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “চীন বলেন, আমেরিকার বলেন, যুক্তরাজ্য বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেন, ভারত বলেন, পাকিস্তান বলেন সকলের সঙ্গে আমরা একটা সুসম্পর্ক তৈরি করতে চাই।”

“কেননা আমরা ছোট দেশ। আমাদের সকলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই কাজ করতে হবে। আমরা তো সুপার পাওয়ার না যে, আমাদের কর্তৃত্ব দরকার।”

ফখরুল বলেন, আমাদের স্বার্থে যেটুকু দরকার, আমাদের অবশ্যই সম্পদশালী দেশসমূহ বিশেষ করে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি।”

‘সামাজিক মাধ্যমের কোনো জবাবদিহিতা নেই’

সামাজিক মাধ্যমে যা ইচ্ছে তাই বলার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, “মিডিয়ার, আপনাদের তো কিছুটা হলেও জবাবদিহিতা আছে। সোশ্যাল মিডিয়ার কোনো জবাবদিহিতা নেই। জঘন্য ভাষায় কথা-বার্তা বলা হচ্ছে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে এক ব্যক্তির বাজে মন্তব্য করার বিষয়টি তুলে ধরে দলের মহাসচিব নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্নও তোলেন।

তিনি বলেন, “আর একজন বিখ্যাত আছেন, তার নাম বলতে চাই না। তার মুখের ভাষা শুনলে তো আমার সন্দেহ হয়, আমরা কোনো সভ্য দেশে বাস করছি কি না। আমি জানি আমাকে নিয়ে গালিগালাজ শুনতে হবে।”

ইতোমধ্যে আপনার বিরুদ্ধেও অপপ্রচার শুরু হয়েছে, এক সাংবাদিকের এই বক্তব্যে ফখরুল বলেন, “আমরা যারা ইতিবাচক রাজনীতি করি, আমরা যারা গঠনমূলক রাজনীতি করি আমরা ভাঙতে চাই না, আমরা গড়তে চাই। আমরা যারা সৃজনশীলতার রাজনীতি করি, আমরা ভেঙে দিতে চাই না।”

“আজকে ভেঙে দিয়ে কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছে তারা? পেছনে, ব্যাকওয়ার্ডনেস। তাদের কথা-বার্তা শুনলে মনে হবে, তারা আমাদের প্রাগৈতিহাসিক যুগে, মধ্য যুগে নিয়ে যাচ্ছে।”

“একজন লোক, যেকোনো কারণেই হোক তার জনপ্রিয়তা বেশি হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়াতে, তিনি যা খুশি তাই বলছেন, জাতিকে সেটাই মেনে নিতে হবে? আমি তাদের কথায় অ্যানার্কি, নৈরাজ্য খুঁজে পাই।”

‘আই ডোন্ট কেয়ার’

ফখরুল বলেন, “আমি জানি ওরা আমাকে আরো বেশি গালিগালাজ করবে। আমি এটা নিয়ে চিন্তা করি না। আামি আমার পথে একনিষ্ঠ ছিলাম, নিষ্ঠাবান ছিলাম, নিষ্ঠাবান থাকব। আমার জায়গা থেকে আমি কখনো সরি নাই। আমি আছি, আমি এগুলো বলব।

“অনেকে বলেন যে, আপনি এগুলো না বললেই পারেন। না বললেই পারেন বলে আমি, আমরা দায়িত্ব পালন করবো না? আমি যেটা ভালো বলি, সেটাকে ভালো বলতে হবে, যেটাকে খারাপ বলি, সেটাকে খারাপ বলতে হবে, আমি এ ধরনের সো কলড পপুলিস্ট পলিটিক্স করতে চাই না।

“এতে যদি আমাকে রাজনীতি থেকে বের হয়ে যেতে হয়, বের হয়ে যাবো, আই ডোন্ট কেয়ার।”

 

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত