দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্রি হওয়া টিকিটে ৫ কোটি ডলারের জ্যাকপট
যার যার মতো করে বৈশাখ উদযাপন করুন বললেন ইউনূস
নতুন বছরের উৎসব পহেলা বৈশাখকে সবাই যেন নিজেদের ধর্ম, বিশ্বাস ও সংস্কৃতির আলোকে উদযাপন করেন—এই আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, 'আমাদের সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের জয় হোক।'
আজ রোববার সকালে ঢাকার মেরুল বাড্ডায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে ‘সম্প্রীতি ভবন’ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এই বক্তব্য দেন ইউনূস।
তিনি আরও বলেন, 'আমি সবসময়ই বলে আসছি, এই দেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, পাহাড় ও সমতলের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষ মিলেমিশে একটি বড় পরিবারের মতোই বসবাস করেন। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে রয়েছে বৈচিত্র্য ও সহাবস্থানের সৌন্দর্য।'
'আগামীকাল পহেলা বৈশাখ—এটি শুধু একটি বর্ষবরণ উৎসব নয়, বরং আমাদের জাতীয় সম্প্রীতির প্রতীক। সবাইকে নিজ নিজ রীতি ও বিশ্বাস অনুসারে এই দিনটি উদযাপন করার জন্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।'
অনুষ্ঠানে ইউনূস বলেন, 'বৈশাখের প্রাক্কালে এই ‘সম্প্রীতি ভবন’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ায় আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার ও বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে সবাইকে জানাই বাংলা নববর্ষের অগ্রিম শুভেচ্ছা।'
আরও বলেন, 'এই আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের ধর্মীয় সহাবস্থানের এক উজ্জ্বল নিদর্শন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি শুধু ধর্মচর্চার কেন্দ্র নয়, বরং জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উদ্যোগেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।'
তিনি বলেন, 'গৌতম বুদ্ধের অহিংসা ও সাম্যের বাণী মেনে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায় দীর্ঘদিন ধরে ধর্মীয়, সামাজিক ও শিক্ষামূলক নানা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ‘সম্প্রীতি ভবন’ আমাদের এই ঐতিহ্যকে আরও প্রসারিত করবে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের মানবিক মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করবে।'
ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, 'এই অঞ্চলের প্রাচীন শিক্ষাকেন্দ্রগুলোর মধ্যে বৌদ্ধ বিহারগুলো অন্যতম। একসময় পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে জ্ঞান অন্বেষণে ভিক্ষু ও ছাত্ররা এখানে আসতেন। এখান থেকেই গৌতম বুদ্ধের শান্তি ও মানবিকতার বাণী ছড়িয়ে পড়ত বিশ্বজুড়ে।'
তিনি আরও বলেন, 'বৌদ্ধ ধর্ম কেবল আচার-অনুষ্ঠান নয়, এটি জনকল্যাণের দর্শনও বহন করে। মহামানব গৌতম বুদ্ধ সবাইকে শান্তি ও সুখে বাঁচতে শিখিয়েছেন। তিনি বলেন, কাউকে শান্তি থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়— এমনকি ক্ষুদ্র প্রাণীকেও না।'
বাঙালি বৌদ্ধপণ্ডিত অতীশ দীপঙ্করের অবদান স্মরণ করে ইউনূস বলেন, 'তিনিও ছিলেন শান্তি ও জ্ঞানের দূত। তিনি তিব্বতসহ নানা অঞ্চলে মহামানব বুদ্ধের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন। আজও চীনে তাকে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জানানো হয়।'
সম্প্রীতি, শান্তি ও মানবিকতাই হোক নতুন বছরের বার্তা—এমন আশাই ব্যক্ত করেছেন নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন