দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্রি হওয়া টিকিটে ৫ কোটি ডলারের জ্যাকপট
"বালুবাহী বাল্কহেডে চাঁদা কালচার?: চাঁদপুরে নতুন অভিযোগ তদন্ত দাবি"
চাঁদপুরে নদীপথে নির্দিষ্ট সীমানার বাহিরে গিয়ে অবৈধ উপায়ে বালুবাহী বাল্কহেড থেকে ইজারার চাঁদা আদায়ের অভিযোগ করেছেন জেলা বালুবাহী নৌ-যান মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের নেতারা। বিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে ইজারা সীমানার বাহিরে গিয়ে এবং সরকারি চাঁদার থেকে দ্বিগুণ, কখনো তিনগুণও চাঁদা আদায় করছেন বলেও জানান এই সংগঠনের নেতারা। জেলা প্রশাসন বলছে অতিরিক্ত টোল আদায় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্প্রতি সরজমিনে জেলা বালুবাহী নৌ-যান মালিক সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব অভিযোগের তথ্য জানা যায়।
জেলা বালুবাহী নৌ-যান মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ জানায়, সম্প্রতি ইয়াছিন আরাফাত নামে জেলা প্রশাসন হতে লঞ্চঘাট/টেম্পু ঘাট/ বোটমহল এর তথ্যে ইজারা নেন। ইজারায় উল্লেখ রয়েছে ৮৩ নং মকিমাবাদ মৌজার ডাকাতিয়া নদীর উত্তরপাড় মকিমাবাদ মৌজায় রনি সিনেমা হল হইতে পৌর হকার্স মার্কেট ঘাটলা পর্যন্ত এবং নদীর দক্ষিণপাড় ডাকাতিয়ারচর মৌজায় হাজীগঞ্জ ও রামগঞ্জ ব্রিজের দক্ষিণ অংশ পর্যন্ত। উক্ত সীমানায় মালামাল খালাস করলে সরকারি তালিকা অনুসারে টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও তারা এর বাহিরে গিয়ে চাঁদা আদায় করছে, এমনকি নদীপথে বাল্কহেড থাকা অবস্থায়ও চাঁদা করছেন। কিন্তু তারা সরকার কর্তৃক যে ইজারার জন্যে যে সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছে তারা সেই সীমার বাহিরে গিয়েও অবৈধভাবে আমাদের বাল্কহেড থেকে চাঁদা আদায় করছে।
হারুনুর রশিদ জানান, সরকারি তালিকা অনুযায়ী ৪০০-৮০০ টাকা চাঁদা আদায় করার কথা থাকলেও তারা ৮০০-৫০০০ টাকা চাঁদা আদায় করছে। এক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন কৌশল অনুকরণ করছে। তারা প্রশাসনকে দেখাতে একটি অরিজিনাল রশিদ ব্যবহার করলেও সাথে আরেকটি রশিদ দিচ্ছে, যেখানে তারা অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করছে। অনেকসময় এ অবৈধ উপায়ে চাঁদা আদায় করতে গিয়ে বাল্কহেডে থাকা আমাদের স্টাফদেরও মারধর করেন। এতে করে এই ব্যবসার সীমানায় বাহিরের অনেক বাল্কহেড আসতে চায় না। যার কারণে আমাদের ব্যবসা করতেও প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে।
তিনি জানান, সম্প্রতি এর প্রতিকার চেয়ে আমরা মানববন্ধন করি, যেখানে চাঁদপুর জেলার সাধারণ মানুষও সমর্থন করেন অবৈধভাবে চাঁদা বন্ধের জন্যে। এছাড়াও আমরা জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড বরাবার আমরা স্মারকলিপি প্রদান করি। স্মারকলিপি জমা দিলে তাঁরা আমাদের অবৈধ চাঁদা আদায় বন্ধে আশ্বাস দিলেও তার কোন প্রতিকার আমরা পাচ্ছি না। আমরা প্রশাসনের সকল বিভাগকে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় বন্ধের জন্যে দ্রুত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
এ প্রসঙ্গে ইজারার ডাক নেয়া ইয়াছিন আরাফাত অনিক বলেন, প্রথমত ইজারা আমরা অনেকেই মিলে নিয়ে থাকি। আমাদেরকে প্রশাসন ডেকে ছিলো আমরা ওনাদের সাথে কথা বলে আমাদের সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছি। সম্ভবত এ ব্যাপারে তারা আমাদের সাথে আবারও কথা বলতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, বেশি করে টোল আদায় বা স্টাফদের মারধররে যে ব্যাপারটি বালুবাহী নৌ-যান মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের নেতারা দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ ব্যাপারে আমরা চ্যালেঞ্জ করেছি। আমরা আমাদের ইজারার সকল কাজ আইনের মধ্যে থেকেই করছি।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে আমাদের কাছে তারা স্মারকলিপি দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট ইজারাদারদের আমরা ডেকেছি এবং বলেছি তারা যেন নির্ধারিত ইজারা থেকে বেশি টোল আদায় না করে। এছাড়াও আমরা অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধে সেনাবাহিনী, নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ডদের বলেছি এসব জায়গায় অভিযান চালাতে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলে দেয়া হয়েছে যেন অতিরিক্ত টোল আদায় না করে সেখানো অভিযান পরিচালনা করতে। অতিরিক্ত টোল আদায় করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান প্রশাসনের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন