‘শতবর্ষে সুলতান’: নাসির আলী মামুনের আলোকচিত্রে ইতিহাসের ছোঁয়া
ঢাকার বেঙ্গল শিল্পালয়ে শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে নাসির আলী মামুনের ৬৫তম একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘শতবর্ষে সুলতান’। এতে নাসির আলী মামুনের তোলা চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ১০৮টি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ও এইচএসবিসি বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এতে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী মনিরুল ইসলাম, দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুব উর রহমান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশের প্রথম সারির শিল্পীদের নাম ধরলে এস. এম. সুলতান অবশ্যই প্রথম কাতারেই থাকবেন। তার ক্যানভাসে গ্রামীণ জীবন, পরিশ্রমী মানুষ ও প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য যে গভীরতা পেয়েছে, তা এক কথায় অনবদ্য। সুলতান খেটে খাওয়া মানুষের প্রাণশক্তিকে যেভাবে চিত্রায়িত করেছেন, তাতে আমি গভীরভাবে মুগ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ‘সংস্কৃতিচর্চায় পৃষ্ঠপোষকতার বড় প্রয়োজন আছে। বেঙ্গলের মতো আরও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলে ভবিষ্যতের সুলতান, জয়নুলদের জন্ম হবে। চিত্রশিল্পের প্রতি আমার গভীর অনুরাগ রয়েছে, এই প্রয়াসে সামিল হতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।’
এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী মো. মাহবুব উর রহমান বলেন, এস এম সুলতানের বেশ কিছু কাজ দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে সুযোগ হলো ব্যক্তি সুলতানকে আরও কাছ থেকে জানার ও বোঝার। এজন্য আমি নাসির আলী মামুনকে ধন্যবাদ জানাই। আমি মনে করি, সুকুমারবৃত্তির চর্চা মানুষের মনন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেজন্যই এই ধরনের প্রয়াসে যুক্ত হতে পেরে এইচএসবিসি পরিবার গর্বিত।’
আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন বলেন, ‘মাটি ও প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়া মহিমান্বিত শিল্পী এস. এম. সুলতান। আমি ও আমার ক্যামেরা তাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করেছি। কাজটি সহজ ছিল না; তবে তার শিল্পকর্ম ও জীবনযাপনের যৌথ দৃশ্য ধরে রাখার জন্য এটি ছিল আমার প্রণোদিত চেষ্টা। তার জীবনের রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা করে একাত্ব হওয়ার চেষ্টা করেছি।’
দৈনিক প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান সুলতানের একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে বলেন, ‘নাসির আলী মামুন জীবনের একটি বড় সময় সুলতানকে উৎসর্গ করেছেন, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই প্রদর্শনী আমাদের সুলতানের জীবন সম্পর্কে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করবে।’
চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ একটি বিশেষ দিন। আমি মামুনকে চিনি ৪০ বছর ধরে। তিনি সুলতানকে অত্যন্ত কাছ থেকে দেখেছেন, চিনেছেন ও বুঝেছেন। মামুনের লেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে সুলতানকে মানুষ চিনবে শতবছর ধরে।’
প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে একটি বিশেষ স্মারক ক্যাটালগ– ‘সিডিং দ্য সোল’, যা সুলতানের জীবন ও শিল্পভাবনার ওপর আলোকপাত করে। প্রদর্শনীটি সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত; প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন