দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্রি হওয়া টিকিটে ৫ কোটি ডলারের জ্যাকপট
সম্পর্ক জোরদারে পারস্পরিক স্বার্থকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান
পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার তাঁর ঢাকা সফরের প্রথম দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে তিনি রাজনৈতিক পরিসরসহ নানা ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেছেন। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্বার্থের ভিত্তিতে এই সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে তিনি পাকিস্তানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
ইসহাক দার দুই দিনের সফরে শনিবার ঢাকায় পৌঁছান। বেলা দুইটার দিকে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তাঁকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম। ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনে বিকেল থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেন তিনি।
সম্পর্ক জোরদারের বার্তা
ইসহাক দারের সঙ্গে শনিবার বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (ফরিদপুর বিভাগ) শামা ওবায়েদ। তিনি গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যে জোর দিয়ে দুই দেশের নানা ক্ষেত্রে সম্পর্ক কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, তা নিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টিতে তিনি জোর দিয়েছেন। শামা ওবায়েদ বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে সরকার, রাজনৈতিক দল এবং জনগণের প্রেক্ষাপট থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি।’ আলোচনায় দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির নেতা শামা ওবায়েদ।
বৈঠকের পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডলে জানানো হয়, ইসহাক দার পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্বার্থের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে পাকিস্তানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। আলোচনায় আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রসঙ্গটি গুরুত্বের সঙ্গে এসেছে। বিশেষ করে আঞ্চলিক জোট সার্ক প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের মৌলিক ভূমিকার কথা স্মরণ করা হয়। বৈঠকে বিএনপির নেতারা পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে অতীতের উচ্চপর্যায়ের আলাপ-আলোচনার প্রসঙ্গ তোলেন।
পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের যে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো রয়েছে, তা দুই দেশের সরকারের বিষয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডল থেকে
শনিবার ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং কীভাবে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করা যায়—এসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গত প্রায় ১৫ বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি কিছুটা একপেশে ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ সরকার বা আমরা সবাই মনে করি যে এই অঞ্চলে সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেই আমাদের সুসম্পর্ক থাকা দরকার। সেটার ব্যাপারে দুই পক্ষই জোর দিয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে যেসব অমীমাংসিত বিষয় রয়েছে, সেগুলো অনুকূল পরিবেশে দ্রুত শেষ করা দরকার।
’৭১-এর অমীমাংসিত ইস্যুগুলো বৈঠকে আপনারা তুলেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘এসব বিষয় হচ্ছে দুই দেশের সরকারের আলোচনার বিষয়। আমরা আশা করি, সরকার সেগুলো আলোচনা করবে।’ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন কখন কীভাবে হবে, সেটা প্রাসঙ্গিকভাবে এসেছে। এটা নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক্স হ্যান্ডলে বলা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের সঙ্গে ইসহাক দারের বৈঠকে পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারের উপায় এবং এ অঞ্চলের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ছিল আলোচনার দুটি প্রধান বিষয়।
শেয়ার করুন