নরওয়াকে পালশালার বাইরে গুলি বর্ষণের ঘটনায় দুইজন আহত, বন্দুকধারীকে খুঁজছে পুলিশ
জঙ্গিদের লাশ নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে বিড়ম্বনা
কল্যাণপুর, নারায়ণগঞ্জ ও রূপনগরে নিহত ১৩ জঙ্গির লাশ নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গ সংশ্লিষ্টরা বিপাকে পড়েছেন। তারা বলছেন, এসব লাশের কারণে অন্য লাশ সংরক্ষণ করতে পারছেন না তারা।
অন্যদিকে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্তের স্বার্থেই লাশগুলো ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
সোমবার সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওই চিঠি পুলিশের কাছে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। নয়টি লাশ অনেকদিন ধরে মর্গে পড়ে আছে। এতে মর্গে অন্য লাশ রাখা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এ কারণে অনেক সময় নানা সমস্যায়ও পড়তে হচ্ছে।’
সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনাগুলো অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর। মামলার তদন্তের স্বার্থেই আরো কিছু বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া অত্যন্ত জরুরি। লাশগুলোর ব্যাপারে এ কারণেই এখন কোনো সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না। এসব লাশ থেকে সংগ্রহ করা নমুনা ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তারা পরীক্ষা সম্পন্ন করে একটি প্রতিবেদন দেবেন। তারপরই তদন্ত কর্মকর্তা একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারবেন। তাদের (নিহত) সবার নাম-পরিচয় জানা গেছে। কিন্তু পরিবাগুলো লাশগুলো নিচ্ছে না।’
মর্গের সিনিয়র অফিস সহকারী সেকান্দার আলী জানান, মর্গে পাঁচটি ফ্রিজ আছে। পাঁচটি ফ্রিজে ২০টি লাশ রাখা যায়। কিন্তু এগুলোর মধ্যে দুটি অনেকদিন ধরে নষ্ট হয়ে রয়েছে। তিনটি দিয়ে কোনোমতে চলছিল মর্গের কাজ। ৪০ দিন আগে নয় জঙ্গির লাশ আসার পর সেগুলো এসব ফ্রিজে রাখা হয়। পরে আরো চার জঙ্গির লাশ এখানে আনা হয়। তিনটি ফ্রিজে সেসব লাশ রাখা হয়েছে। এখনো এখানে প্রতিদিন পাঁচ-ছয়টি লাশ আসে। অনেক লাশের পরিচয় পাওয়া যায় না। এ কারণে লাশগুলো ফ্রিজে রাখতে হয়। ফ্রিজগুলো জঙ্গিদের লাশে পূর্ণ থাকায় বাধ্য হয়েই নতুন লাশ বাইরে রাখতে হচ্ছে। এতে অনেক সময় লাশে পচন ধরে। এ অবস্থা চলতে থাকলে মর্গের কার্যক্রম একসময় অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে। অন্যদিকে মর্গের লাশকাটা ঘরের এসিও প্রায় তিন মাস ধরে নষ্ট হয়ে আছে। এসি ঠিক থাকলেও ফ্লোরে লাশগুলো রাখা যেত। কিন্তু তাও করা যাচ্ছে না।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল খানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘লাশ নিয়ে বিপদে আছি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বারবার বলা হলেও তারা লাশগুলোর কোনো ব্যবস্থা করছে না।’
২৬ জুলাই কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অপারেশন স্টর্ম-২৬ নামে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় নয় জঙ্গি নিহত হয়। ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে অপর একটি জঙ্গি আস্তানায় অপারেশন হিট স্ট্রং-২৭ নামের অভিযানে নিহত হয় গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার মাস্টার মাইন্ড তামিম চৌধুরী ও তার দুই সহযোগী মানিক এবং ইকবাল। গত ২ সেপ্টেম্বর মিরপুরে আরেক অভিযানে মেজর মুরাদ ওরফে জাহিদ নামের আরেক জঙ্গি নিহত হয়। এদের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে সেগুলো ঢামেক হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
শেয়ার করুন