আপডেট :

        সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ঋষি সুনাকের

        ছোট ভাইয়ের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি

        ছোট ভাইয়ের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় সঙ্গে ছিলেন পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি

        আরও ৪৮ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট ঘোষণা করলো আবহাওয়া অধিদপ্তর

        যুদ্ধবিমানসহ জ্বালানি স্থাপনা ধ্বংস

        যুদ্ধবিমানসহ জ্বালানি স্থাপনা ধ্বংস

        প্রধান শিক্ষককে কিল-ঘুষি ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

        প্রধান শিক্ষককে কিল-ঘুষি ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

        দুই শতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র

        প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ৪৪তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

        সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন প্রার্থীরা

        দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী

        উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আরও চার নেতাকে বহিষ্কার

        এআই কি প্রতারণায় দক্ষ হয়ে উঠছে

        নিউইয়র্কে বাংলা বইমেলা শুরু ২৪ মে, থাকছে দশ হাজার নতুন বই

        ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন বিক্ষোভকারীদের দখলে, ক্লাস বাতিল

        দেশের ৬৪ জেলায় তাপপ্রবাহ বেড়েছে,হচ্ছে মৃত্যু

        ইন্টারনেট বন্ধে ষষ্ঠবারের মতো শীর্ষে ভারত

        দুই দফায় বিতর্কে মুখোমুখি হচ্ছেন বাইডেন ও ট্রাম্প

        পুতিন এবং শি’র একে অপরকে পুরনো বন্ধু বলে অভিহিত করলেন

বিদেশই ভরসা বিএনপির!

বিদেশই ভরসা বিএনপির!

আবারও বিদেশিদের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে দাবি আদায়ের কৌশল গ্রহণ করেছে বিএনপি। সারাদেশে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ, দাতা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সমর্থন আদায় করতে মরিয়া তারা। দেশে ও বিদেশে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সংশ্লিষ্ট দেশের ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী শীর্ষ নেতা এবং দাতা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক ও যোগাযোগ রক্ষার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানে নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হওয়ার পর থেকে বেশি তৎপর হয়ে ওঠেন দলের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিদেশই এখন তাদের ভরসা। এ ব্যাপারে লন্ডনে বসে কলকাঠি নাড়ছেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। খালেদা জিয়াকে বিজেপি সভাপতির ফোনের বানোয়াট তথ্য প্রচার ও যুক্তরাষ্ট্রের ৬ কংগ্রেসম্যানের ভুয়া বিবৃতির নেপথ্যে তারেক রহমানই।

সাবেক একাধিক কূটনীতিক মনে করেন, বিএনপির আন্দোলনের প্রতি বিদেশিদের সহানুভূতি রয়েছে- এমন ভুল বার্তা জনগণের কাছে পেঁৗছে দেওয়ার কৌশল হিসেবেই এই মিথ্যাচার করা হয়েছে। এর ফলে বিএনপির আন্দোলনের দেউলিয়াত্ব প্রকটভাবে ধরা পড়েছে। হিতে বিপরীত হয়েছে।

গত বছর ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের আগেও রাজপথে আন্দোলনের পাশাপাশি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ে জাতিসংঘসহ বিদেশিদের দ্বারস্থ হলেও বিএনপির লাভ হয়নি।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সিএম শফি সামি সমকালকে বলেন, নিজেদের জনসমর্থনের প্রতি আস্থা না রেখে বাইরের দেশ থেকে সার্টিফিকেট জোগাড় করার এই চেষ্টা রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ছাড়া আর কিছুই নয়, এটা হতাশাজনক।

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর সমকালকে বলেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে বন্ধু রাষ্ট্রগুলো বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে খুবই নেতিবাচক বার্তা পেল। দেশের ভাবমূর্তির চেয়েও বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভাবমূর্তি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো।

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার মোহাম্মদ জমির সমকালকে বলেন, খালেদা জিয়ার পক্ষে যে ধরনের তথ্য প্রচার করা হয়েছিল, তা সবই অসত্য প্রমাণ হয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর নামে মিথ্যা বিবৃতি প্রচারের ঘটনা খুবই লজ্জাজনক। এ ধরনের নজির আর আছে বলে জানা নেই।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত সাবিহউদ্দিন আহমদের সঙ্গে গতকাল মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সূত্র জানায়, প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক উইংয়ের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাদের মধ্যে রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, ড. ওসমান ফারুক, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবিহউদ্দিন আহমদ, আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রমুখ। অবশ্য তাদের মধ্যে শমসের মবিন চৌধুরীকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

সূত্র জানায়, শমসের মবিন চৌধুরীকে গ্রেফতার করলেও থেমে নেই বিএনপির কূটনৈতিক তৎপরতা। শুক্রবার ঢাকাস্থ কুয়েত দূতাবাসে মধ্যপ্রাচ্যের ৪-৫টি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেন বিএনপির দু'জন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। বৈঠকে কূটনীতিকরা চলমান সংকট, সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএনপি নেতাদের কাছ থেকে অবহিত হন। এ সময় খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা, নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও নির্যাতন করার অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা।

একইসঙ্গে তারা অভিযোগ করেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচনের কথা বলে সরকার গত বছর ৫ জানুয়ারি সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় 'একতরফা' নির্বাচন করেছে। এখন সরকার সে অবস্থান থেকে সরে এসে জোর-জবরদস্তি করে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। তারা অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি আদায়ের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির তাগিদ দেন। জবাবে কূটনীতিকরা জানান, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে তারা উদ্বিগ্ন। তারা সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন। এর অতিরিক্ত কিছু বলছেন না তারা।

সূত্র জানায়, গ্রেফতারের আগে ৬-৭টি দেশের ঢাকাস্থ কূটনীতিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে পৃথকভাবে বৈঠক করেন শমসের মবিন চৌধুরী। বিএনপির পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষার গুরত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে আসছেন সাবেক এ কূটনীতিক। ওই কূটনীতিকদেরও বর্তমান রাজনৈতিক সংকট সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন শমসের মবিন।

বিএনপির একজন নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, বিদেশিদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতেই সরকার মূলত শমসের মবিন চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে। শমসের মবিন চৌধুরীকে গ্রেফতারে বিএনপির বিদেশি যোগাযোগ রক্ষায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে।

সূত্র জানায়, সম্প্রতি গোপনে সপ্তাহব্যাপী ভারত সফর করে এসেছেন ওসমান ফারুক ও আবদুল আউয়াল মিন্টু। এ সফরের মূল লক্ষ্য ছিল ভারতের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন। ভারতে অবস্থানকালে তারা বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। সফর শেষে দেশে ফিরে খালেদা জিয়াকে বিস্তারিত অবহিত করেন তারা।

বিজেপি প্রধানের খালেদা জিয়াকে ফোন এবং মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের বিবৃতির তথ্য ভুয়া প্রমাণ হয়েছে এরই মধ্যে। বিজেপি প্রধান অমিত শাহ নিজেই গতকাল গণমাধ্যমে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে তার ফোন করার তথ্য সঠিক নয় এবং এটি নিছকই গুজব। খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ রাখার জন্য উদ্বেগ প্রকাশে বিএনপির তরফে ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের প্রচার করা বিবৃতিটিও ভুয়া ছিল ।

দশম সংসদ নির্বাচনের আগেও জাতিসংঘসহ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের রাজনীতিবিদ ও কূটনীতিকদের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। একপর্যায়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসনকে টেলিফোন ও চিঠি দেন। বিবদমান দুই দলের সঙ্গে বৈঠক করে সমঝোতার মাধ্যমে সব দলের অংশগ্রহণে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোকে পাঠিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার সফরও ব্যর্থ হয়।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত