আপডেট :

        ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অনুমোদন

        ট্রাম্পের অভিষেক কেমন হবে

        মাস্কের স্টারশিপ রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ ব্যর্থ, মাঝ আকাশে বিস্ফোরণ

        কক্ষপথে পৌঁছেছে ব্লু অরিজিনের রকেট

        বাতাসের তীব্রতা কমায় দাবানলও কমে আসছে

        যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরেও ইসরায়েলের হামলা, ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত

        জাতির উদ্দেশে বিদায়ী ভাষণে কী কী বললেন বাইডেন

        গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির কৃতিত্ব নিয়ে ট্রাম্প ও বাইডেনের টানাটানি

        খাদ্য ও ওষুধে রঞ্জক পদার্থ ‘রেড ডাই ৩’ ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র

        টিউলিপের পদত্যাগ নিয়ে ইলন মাস্কের পোস্ট

        উত্তর কোরিয়া স্টাইলে শুক্রবার চুক্তি

        প্রতিবেদন থেকে হবে নতুন বাংলাদেশ, তার ভিত্তিতেই সবকিছু: প্রধান উপদেষ্টা

        ফ্রান্সের উপকূল থেকে ৭৬ অভিবাসনপ্রত্যাশী উদ্ধার

        টিউলিপকে নিয়ে পার্লামেন্টে প্রশ্নের মুখে স্টারমার

        ট্রাম্পের অভিষেক উপলক্ষে ওয়াশিংটনজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা

        ‘আগুনে টর্নেডো’র আশঙ্কা, বড় আকারের নতুন দাবানলের সতর্কবার্তা

        সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন

        ট্রাম্প ও পুতিনের দ্রুত বৈঠকের ঘোষণা

        দারুণ একটি ইনিংস খেলেছে লিটনঃ কার্টলি অ্যামব্রোস

        দাবানলে পুড়ছে হলিউড

কানাডার ‘সিজোফ্রেনিক পররাষ্ট্র নীতি’

কানাডার ‘সিজোফ্রেনিক পররাষ্ট্র নীতি’

গাজায় বোমাবর্ষণের এক মাসের বেশি সময় পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী একটি সতর্কতা জারি করে বলেছে, স্থল সেনারা ফিলিস্তিনি ছিটমহলের বৃহত্তম হাসপাতাল আল-শিফাকে ঘিরে রেখেছে। ‘মুহুর্তের মধ্যে’ অভিযান চালানো হবে। ঘোষণার পর গাজা শহরের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আসন্ন অবরোধের কারণে সেখানে আশ্রয় নেওয়া হাজার হাজার আহত রোগী, চিকিৎসা কর্মী ও বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

 

কিন্তু গাজার হাসপাতালগুলোকে বাঁচাতে আন্তর্জাতিক মহলের জরুরি আবেদনের মধ্যে বেশিরভাগ নজর ছিল কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর কঠিন সুরে। আল-শিফা অভিযান শুরু হওয়ার সময় ১৪ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেছিলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলছি, ন্যায়বিচারের নামে সকল ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের দুর্ভোগ পোহানোর কোনো মানে হতে পারে না। যুদ্ধেরও নিয়ম আছে। আমি ইসরায়েল সরকারকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর অনুরোধ করছি।’

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে সবচেয়ে কঠোর মন্তব্য করেছেন ট্রুডো। কয়েক সপ্তাহ ধরে ফোনকল ধরছেন না তিনি। এমনকি স্মরণকালে কানাডার সবচেয়ে বড় বিক্ষোভগুলোর মধ্যে ছিল গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভ।

নিজের বক্তব্যের তাৎক্ষণি প্রতিক্রিয়াও পেয়েছেন ট্রুডো। তেল আবিব থেকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার বক্তৃতার প্রকাশ্য প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক মাধ্যমে বলেছিলেন, যেকোনও বেসামরিক হতাহতের জন্য দায়ী হামাস, ইসরায়েল নয়।

কানাডায় ইসরায়েলপন্থী লবি গোষ্ঠীরাও নেতানিয়াহুর সুরে তাল মিলিয়েছে। তারা বলেছিল, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি শিশুদের রক্তের জন্য হামাস দায়ী। ট্রুডোকে ইহুদি-বিদ্বেষকে ইন্ধন দেওয়ার জন্যও অভিযুক্ত করেছে তারা।

কানাডার মন্ত্রীরা ট্রুডোর মন্তব্যে সুর মেলাতে চেষ্টা করেছিলেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিল ব্লেয়ার কানাডিয়ান নেটওয়ার্ক সিটিভিকে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিচক্ষণভাবে সীমান্তের উভয় পাশের নিরীহ মানুষের জীবন নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরাও স্পষ্ট বলেছি, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে।’

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের ক্ষেত্রে কানাডার এই আচরণকে ‘সিজোফ্রেনিক’ বৈদেশিক নীতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন পর্যবেক্ষকরা।

জাতিসংঘের সাবেক বিশেষ প্রতিবেদক মাইকেল লিংক অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলের মানবাধিকার বিষয়ে আল জাজিরাকে বলেন, ‘যখনই (ট্রুডো) এই বিষয়ে কোনো বুদ্ধিমত্তা দেখান, তখন কানাডায় ইসরায়েলের লবি বা ইসরায়েলি নেতাদের কাছ থেকে যেকোনো ধরনের সমালোচনা আসার পর তিনি যা বলেছেন তা থেকে সরে আসেন।’

শক্তিশালী প্রতিবেশী ও ইসরায়েলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপরীতে কানাডা বলেছে, তারা ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সংঘাতের বিষয়ে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করার চেষ্টা করে থাকে। দেশটি দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে, অধিকৃত অঞ্চলে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের বিরোধী ও আন্তর্জাতিক আইনকে উভয় পক্ষকে সম্মান জানানোর নীতিতে বিশ্বাসী।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছে, সংঘাতের ক্ষেত্রে কানাডার দুটি নীতি রয়েছে, প্রথমটি কাগজে-কলমে ও দ্বিতীয়টি বাস্তবে। তারা লক্ষ্য করেছেন, কানাডা তার নিজস্ব বিবৃত অবস্থানের বিরুদ্ধে গিয়ে জাতিসংঘে ভোট দিয়েছে ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে প্রতিকার চাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনি প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছে। উল্টো যুক্তি দিয়েছে তারা কট্টরপন্থী ইসরায়েলি নীতি সমর্থন করেছে ও অধিকার লঙ্ঘনের জন্য দেশটির দায়বদ্ধতা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর কানাডার পরিচালক ফরিদা দেইফ বলেছেন, ‘এই সরকারের পাশাপাশি পূর্ববর্তী কানাডিয়ান সরকারগুলো দুর্ভাগ্যবশত ইসরায়েলের প্রতি অন্ধ অবস্থান নিয়েছে। গাজায় প্রায় দুই মাসব্যাপী সামরিক অভিযান সত্ত্বেও কানাডার অবস্থান পরিবর্তন হয়নি, যেখানে হাসপাতাল, শরণার্থী শিবির ও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা স্কুলগুলিতে বোমা হামলা হয়েছে। নিহত হয়েছে ১৫ হাজার ২০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি।

তিনি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের বিষয়ে কানাডার নীতির ক্ষেত্রে আমরা যা দেখেছি তাতে সত্যিই সুসংহততার অভাব রয়েছে, বিভ্রান্তিমূলক ও বাস্তবতার সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক। ফিলিস্তিনি ভূমিতে আমরা যা নথিভুক্ত হতে দেখেছি তা হল বর্ণবাদ ও নিপীড়নের বাস্তবতা।’

তাহলে কানাডার অবস্থান কী প্রমাণ করে

আল জাজিরা প্রায় এক ডজন মানবাধিকার আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, সাবেক কর্মকর্তা ও অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলেছে যে কীভাবে বিদেশি এবং অভ্যন্তরীণ সমীকরণ অটোয়ার অবস্থানকে প্রভাবিত করে এবং জনগণের ক্ষোভ দেশটির কৌশল পরিবর্তন করতে পারে কিনা।

যে কারণে দু্ই দেশের মিত্রতা

ইসরায়েলের সঙ্গে বহু বছর ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে কানাডার। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় কানাডা। এমনকি দূতাবাসও প্রতিষ্ঠা করে দেশটি। দুই দেশের মধ্যে ১৯৯৭ সাল থেকে মুক্ত-বাণিজ্য চুক্তি রয়েছে। ২০২১ সালে দুই দেশের বাণিজ্য ছিল ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের। গত বছর কানাডাও ইসরায়েলের কাছে ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র রপ্তানি করেছে।

কিছু পর্যবেক্ষক মনে করছেন দেশ দুটির মধ্যে প্রাকৃতিকভাবেই বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে কারণ উভয়েরই সৃষ্টি একইভাবে। ইসরায়েলের মতো কানাডারও জন্ম হয়েছে আদিবাসীদের তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ ও জোরপূর্বক অপসারণের মাধ্যমে।

তবে কানাডার কনজারভেটিভ প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হার্পারের আমলে মূলত ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পূর্ণ বিকাশ লাভ করে। ২০১৪ সালে ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটে একটি বক্তৃতায় হার্পার বলেছিলেন, ‘কানাডা ও ইসরায়েল সবচেয়ে বড় বন্ধু এবং সবচেয়ে স্বাভাবিক মিত্র।’ ‍এর এক বছর পর কনজারভেটিভরা ফেডারেল নির্বাচনে ট্রুডোর লিবারেল পার্টির কাছে হেরে যাবে ও হার্পারের শাসনের অবসান ঘটে।

যদিও ইসরায়েলের প্রতি হার্পারের সমর্থন মূলত ডানপন্থী, খ্রিস্টান মতাদর্শ থেকে অনুপ্রাণিত হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কিন্তু ট্রুডো ও তার সরকার রাজনৈতিক বাস্তববাদ দ্বারা চালিত বলে বিবেচিত।

ইসরায়েল/ফিলিস্তিনের অলাভজনক অটোয়া ফোরামের চেয়ার পিটার লারসনের মতে, সেই বাস্তববাদের অংশটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য কানাডার প্রয়োজনীয়তা থেকে উদ্ভূত।

লারসন বলেন, ‘কানাডিয়ান নীতিনির্ধারকদের রাজনৈতিক সমীকরণ অনুসারে, ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা বা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করলে হয়তো আমেরিকানরা তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হতে পারে।’

কানাডিয়ান ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিস ইন মিডল ইস্টের (সিজেপিএমই) অ্যাডভোকেসি গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইকেল বুয়েকার্ট বলেন, কানাডার নীতিগত অবস্থানের ইঙ্গিত পেলে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র যা বলছে তাই ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করছে তারা। গাজা যুদ্ধের সময় মার্কিন অবস্থানের প্রতিফলন অব্যাহত রেখেছে অটোয়া।

অভ্যন্তরীণ রাজনীতির ভূমিকা

তারপরও সরকারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর মত, কানাডার অবস্থানের পেছনে ঘরোয়া রাজনীতিই প্রধান চালিকাশক্তি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণের মধ্যে অন্যতম হলো ইসরায়েলপন্থী লবি গ্রুপ।

লবি গ্রুপগুলোর রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের প্রভাবিত করার অতুলনীয় ক্ষমতা রয়েছে। তারা একইসঙ্গে সম্পদশালী ও প্রভাবশালী।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জাতিসংঘে ভোটের নির্দেশনা আসে

গাজা যুদ্ধের সময় কানাডার অবস্থান জাতিসংঘের চেয়ে স্পষ্টভাবে কোথাও দেখা যায়নি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পরিস্থিতি মোকাবিলায় রেজুলেশন পাস করতে ব্যর্থ হওয়ার পর অক্টোবরের শেষদিকে সাধারণ পরিষদের দিকে নজর সরে যায়। সেখানে মানবিক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানানোর জন্য নাম মাত্র প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু কানাডা এই প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত ছিল। এমনকি প্রস্তাবে যেন হামাসের নিন্দা জানিয়ে সংশোধনী পাস করা হয় সেই দাবি পেশ করেছিল অটোয়া।

অটোয়া-ভিত্তিক রিডো ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট পেগি ম্যাসন বলেন, যেখানে কানাডাকে আগে বন্ধন স্থাপনকারী দেশ হিসেবে দেখা হতো, সেখানে তাদের সংশোধনীটি ছিল বন্ধন দুর্বলকরার চর্চা।

জাতিসংঘ মিশনে ৯ নভেম্বর ‘অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকে বেআইনি’ শীর্ষক খসড়া প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেয় কানাডা। কিন্তু অটোয়া সরকার অতীতে বলে আসছিল বসতিগুলো আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন৷

বিরুদ্ধে ভোটের ব্যাখ্যায় বিবৃতিতে কানাডা বলেছিল, প্রতি বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ‘অন্যায়ভাবে ইসরায়েলের ওপর একপাক্ষিক’ প্রস্তাব পেশ করা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। কানাডা জাতিসংঘে একটি ন্যায্য-মননের দৃষ্টিভঙ্গির গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে ও সমস্যার জটিলতার সমাধান করবে না এমন প্রস্তাবগুলোতে ‘না’ ভোট দিতে থাকবে।

বৈদেশিক নীতি ফাইলগুলো কানাডার বৈদেশিক বিষয়ক বিভাগের মাধ্যমে পরিচালিত হয় যা গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা নামে পরিচিত। গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের নেওয়া সিদ্ধান্তে খুব কমই প্রধানমন্ত্রীর অফিসে হ্যাঁ বা না করে। কিন্তু ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সংক্রান্ত বিষয় ভিন্ন। এগুলোর নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেই দেওয়া হয়।

কানাডার জাতিসংঘ মিশন ইসরায়েলপন্থী লবিস্টদের সরাসরি চাপের সম্মুখীন হয়েছে বলে এক সূত্র আল-জাজিরাকে জানিয়েছে। ট্রুডোর কার্যালয় কানাডার জাতিসংঘের ভোটগুলি গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডায় পরিচালনা করে কিনা সে প্রশ্নের উত্তর দেয়নি গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতে কানাডিয়ান সরকারের অবস্থান জনসংখ্যার পরিবর্তনের মুখে পরিবর্তিত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে লিবারেল পার্টির রাজনীতিবিদদের মধ্যেও বিভক্তি দেখা দিয়েছে যারা ইসরায়েলকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে ও যারা ট্রুডোর নিজের অলসতা সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়।

৭ নভেম্বর অ্যাঙ্গাস রিড ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, ৩০ শতাংশ কানাডিয়ান অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি চান, যেখানে ১৯ শতাংশ চান না। লিবারেল পার্টির ভোটারদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ যুদ্ধবিরতিকে সমর্থন করেছেন আর ১২ শতাংশ বিরোধিতা করেছেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর দেইফের মতে, কানাডার উচিত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করা। কে দায়ী ও কারা শিকার, নির্বিশেষে যুদ্ধাপরাধের নিন্দা করা। তাদের উচিত ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি স্থগিত করা যতক্ষণ না ইসরায়েলি বাহিনী দায়মুক্তিসহ ফিলিস্তিনি নাগরিকদের বিরুদ্ধে এসব ব্যবহার করা বন্ধ না করছে। আমরা যা দেখতে চাই তা হল কানাডা ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের বিষয়ে ঠিক সেভাবেই যুক্ত থাকুক যেভাবে মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা সঙ্কটে ভূমিকা রেখে ছিলেন রাষ্ট্রদূত বব রে, যেভাবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানিয়া জোলি। নিষ্ক্রিয়তার পরিণতি বিধ্বংসী হতে পারে।

এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত