শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েই বিমান হামলা চালালো জান্তা
শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দেওয়ার মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের রাজধানী লাশিওতে বিমান হামলা চালিয়েছে দেশটির জান্তা সরকার। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ভোর হওয়ার আগেই লাশিওর বাজার এবং আবাসিক এলাকায় ৫০০ এবং ২০০ পাউন্ড বোমাসহ অন্তত ১৫টি বোমা ফেলে দেশটির বিমানবাহিনী। খবর ইরাবতীর।
দীর্ঘ একমাস লড়াইয়ের পর মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) আগস্টে শহরটি মুক্ত করেছিল।
লাশিও রিকনস্ট্রাকসহন গ্রুপ জানিয়েছে, বিমান হামলায় দুই বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং এক গর্ভবতী নারীসহ আরও ছয়জন আহত হয়েছে। শহরের বাজারের অনেক দোকান এবং বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে এই হামলায়।
আগের দিন বৃহস্পতিবার অস্ত্র ত্যাগ করে সংলাপে বসার জন্য বিদ্রোহীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল জান্তা সরকার।
জান্তার ওই সংলাপের আহ্বানকে একটি কৌশল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তারা মনে করেন, প্রতিবেশী চীনকে শান্ত করতে এবং আগামী বছর নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণার প্রতি মানুষের আস্থা তৈরি করতেই সামরিক শাসক সংলাপের ঘোষণা দিয়েছিল জান্তা। অবশ্য, জান্তাবিরোধী দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠী ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই সংলাপের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
জান্তার গতকালের সংলাপপ্রস্তাব সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের রিচার্ড হরসি বলেন, সামরিক অভ্যুত্থানের পর জান্তার এটাই প্রথম কোনো সংলাপের প্রস্তাব। এর আগপর্যন্ত তাঁরা সংলাপের কোনো আগ্রহ দেখায়নি।
কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে ‘ধ্বংস’ করার কথা বলছেন বলেও উল্লেখ করেন রিচার্ড হরসি।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর পরপরই জান্তার (সামরিক শাসন) বিরুদ্ধে দেশটিতে সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু হয়। গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে জান্তাবিরোধী বিদ্রোহীরা দেশটির কয়েকটি রাজ্যে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে।
গত অক্টোবর থেকে বিদ্রোহীদের ব্যাপক হামলায় দিশেহারা হয়ে পড়ে জান্তা সরকার। দেশটির সংখ্যালঘু বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপন্থী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)’ এসব হামলার নেতৃত্ব দিচ্ছে।
চলতি মাসে জান্তামুক্ত অঞ্চলে প্রায় ৪০টি বিমান হামলা চালিয়েছে বিমানবাহিনী। এতে অন্তত ১৫ শিশুসহ প্রায় ১৮০ জন নিহত হয়েছেন।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন