বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
ভয়াল নাইন-ইলেভেনের ১৯ বছর
টুইন টাওয়ারে হামলা। ছবি: সংগৃহীত
বছর ঘুরে আবারও এলো ১১ সেপ্টেম্বর। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সন্ত্রাসী হামলার ১৯ বছর পার হলো, যে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রসহ আরো ৭৮টি দেশের সর্বমোট প্রায় তিন হাজার নিরীহ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছিলেন। হামলার এই দিনটি সারা বিশ্বে ‘নাইন-ইলেভেন’ নামে পরিচিত।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত ১৯ জঙ্গি চারটি বিমান ছিনতাই করে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি স্থানে।
সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে আমেরিকান এয়ারলাইনসের ‘ফ্লাইট-১১’ বোস্টন থেকে উড়ে এসে হামলে পড়ে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর ভবনটিতে। জানা যায়, হামলা চালানোর আগে সকাল ৮টা ১৯ মিনিটে একজন ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট সতর্ক করেন, তাঁদের উড়োজাহাজ ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েছে। তিনি জানান, ককপিট থেকে কোনো উত্তর আসছে না এবং ছিনতাইকারীদের কাছে বিস্ফোরক রয়েছে।
এ হামলার বিষয়টি ঠিকমতো বুঝতে না বুঝতেই ১৭ মিনিট পর ৯টা ৩ মিনিটে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দক্ষিণ ভবনে আছড়ে পড়ে ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ফ্লাইট-১৭৫। সেটিও বোস্টন থেকে উড়ে এসে হামলা চালায়। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে এ দুই নারকীয় হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন দুই হাজার ৭৫৩ জন মানুষ। এ ছাড়া ভবনে আটকেপড়া অনেকেই বাঁচার জন্য ভবন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সে হামলায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের বয়স ছিল ২ থেকে ৮৫ বছরের মধ্যে।
ওই হামলার পরই তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা হয়। কিন্তু হামলার পর ভবন ধসে পড়ায় ভবনে থাকা অন্যদের সঙ্গে নিহত হন উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া নিউইয়র্ক ফায়ার সার্ভিসের ৩৪৩ কর্মী, নিউইয়র্ক সিটির ২৩ পুলিশ কর্মকর্তা ও বন্দর কর্তৃপক্ষের ৩৭ কর্মকর্তা। এ ছাড়া হাজারো মানুষকে আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয় বিভিন্ন হাসপাতালে।
এ দুই ভয়াবহ হামলার এক ঘণ্টার মধ্যে ৯টা ৩৭ মিনিটে ওয়াশিংটনে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর পেন্টাগনে হামলে পড়ে আরো একটি উড়োজাহাজ। ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের ডালাস থেকে উড়ে আসা আমেরিকান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট-৭৭-এর যাত্রীদের জিম্মি করে এ হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। ওই বিমানে তখন ছয়জন ক্রুসহ ৫৮ যাত্রী ছিলেন। এ হামলায় সামরিক কর্মকর্তা ও বেসামরিক নাগরিকসহ মোট ১২৫ জন নিহত হন। এ ছাড়া উড়োজাহাজে থাকা পাঁচ জঙ্গিসহ সব যাত্রীই নিহত হন।
একের পর এক হামলার মধ্যেই নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের নেওয়ার্ক থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার সানফ্রান্সিসকোর উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া ইউনাইটেড এয়ারলাইনসের ফ্লাইট-৯৩ ছিনতাই করে জঙ্গিরা। পরে বিমানটি বিধ্বস্ত হয় পশ্চিম পেনসিলভানিয়ার শ্যাংকসভিল এলাকার একটি মাঠে। এতে বিমানে থাকা ৪৪ জনের সবাই নিহত হন।
এদিকে, হামলার দিন ফ্লোরিডার একটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তিনি ৮টা ৫৫ মিনিটে জানতে পারেন, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর ৯টা ৫ মিনিটে বুশের চিফ অব স্টাফ জানান, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আবারও প্লেন হামলা হয়েছে এবং আক্রমণের মুখে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ধারণা করা হয়, ওসামা বিন লাদেনের সংগঠন আল-কায়েদা এ হামলায় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। ২০১১ সালের ২ মে বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন সময়ে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী।
এলএ বাংলা টাইমস/এমকে
শেয়ার করুন