চীনের আধিপত্য রুখতে বিরল খনিজ সরবরাহে যুক্তরাষ্ট্র–অস্ট্রেলিয়া ঐতিহাসিক চুক্তি
কানাডার দাবানলে নিউইয়র্কে বায়ুদূষণ, সতর্কতা জারি
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
কানাডার ভয়াবহ দাবানলের ধোঁয়ার কারণে নিউইয়র্ক সিটি এবং আশপাশের অঞ্চলে বায়ুদূষণ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার নিউইয়র্ক রাজ্যের পরিবেশ সংরক্ষণ বিভাগ (DEC) এবং স্বাস্থ্য বিভাগ (DOH) এক যৌথ ঘোষণায় জানিয়েছে, এই সতর্কতা লং আইল্যান্ড, নিউইয়র্ক সিটি মেট্রো, লোয়ার হাডসন ভ্যালি, আপার হাডসন ভ্যালি এবং অ্যাডিরনড্যাকস অঞ্চলের জন্য কার্যকর থাকবে।
সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, এই অঞ্চলের বাতাসের মান সংবেদনশীল ব্যক্তিদের জন্য অস্বাস্থ্যকর। বিশেষ করে শিশুরা, প্রবীণরা এবং শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের জন্য পরিস্থিতি উদ্বেগজনক।
কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে চলমান দাবানলের কারণে দশ সহস্রাধিক মানুষকে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হয়েছে। এই ধোঁয়া যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ায় নিউইয়র্কসহ অনেক স্থানে বায়ুমান দ্রুত খারাপ হয়ে পড়েছে।
শনিবার নিউইয়র্কের অনেক এলাকায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) ১০০-এর উপরে পৌঁছাতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, কিছু অঞ্চলে এই মান ১৩৫ পর্যন্ত উঠতে পারে। একই ধরনের সতর্কতা নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চলের কিছু অংশেও জারি করা হয়েছে।
AQI বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বাতাসে দূষণের মাত্রা পরিমাপ করে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকি নির্ধারণ করে। স্কোর যত বেশি, স্বাস্থ্যঝুঁকিও তত বেশি।
এটি প্রথমবার নয় যে কানাডার দাবানলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এমন সতর্কতা জারি হয়েছে। জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে শিকাগোতেও একই ধরনের সতর্কতা দেওয়া হয়েছিল, যেখানে শিশু এবং বয়স্কদের জন্য বাড়তি সতর্কতা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই ধোঁয়া রাজনৈতিক অঙ্গনেও প্রভাব ফেলেছে। জুলাইয়ের শুরুতে, যুক্তরাষ্ট্রের ছয়জন কংগ্রেস সদস্য কানাডার রাষ্ট্রদূতের কাছে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ করেন যে, দাবানলের ধোঁয়া আমেরিকানদের গ্রীষ্ম উপভোগের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।
কানাডায় বর্তমানে ৫৫০টির বেশি সক্রিয় দাবানল রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যার বেশিরভাগ ম্যানিটোবা প্রদেশে কেন্দ্রীভূত। গত এক বছরে দেশজুড়ে প্রায় ৬.১ মিলিয়ন হেক্টর (১৫ মিলিয়ন একর) জমি পুড়ে গেছে।
বিশেষ করে মে ও জুন মাসে সাসকাচোয়ান ও ম্যানিটোবা প্রদেশে দাবানলের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি ছিল, যেখানে প্রায় ৩০,০০০ মানুষকে সরিয়ে নিতে হয় এবং জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
বিজ্ঞানীরা বারবার এই ক্রমবর্ধমান দাবানলের কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, কানাডা বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় দ্বিগুণ হারে উষ্ণ হচ্ছে, এবং এর আর্কটিক অঞ্চলগুলো তিনগুণ হারে গরম হচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন