আপডেট :

        ধর্ষণ মামলায় হার্ভকে দোষী সাব্যস্ত করে ২০২০ সালে দেওয়া রায় বাতিল

        ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের জেরে স্নাতক অনুষ্ঠান বাতিল করল সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

        ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট

        যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ দমনে মারমুখী পুলিশ

        ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র, গ্রেফতার শতাধিক

        পশ্চিম ভারত মহাসাগর অঞ্চলে মাদক পাচার এবং মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে

        গাজা উপকূলে অস্থায়ী বন্দর যুক্তরাষ্ট্রের !

        রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করার নির্দেশ

        জাতীয় নেতা শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের অবদান কখনোই ভুলবার নয়

        ৮৮ আসনে দুপুর পর্যন্ত কত ভোট পড়লো

        ২৬ জেলার ওপর তাপপ্রবাহ

        চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা

        চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪২.৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা

        কেন্দ্রীয় কি ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করছে, প্রশ্ন টিআইবির

        ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার

        বিমান হামলায় নিহত এক নারীর গর্ভ থেকে প্রসব হওয়া সন্তানটি মারা গেছে

        ফেনীতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে কিশোর গ্যাং গ্রেফতার

        তাপ্প্রবাহে ভাঙল ৭৬ বছরের রেকর্ড

        তিন দিনের সফরে বর্তমানে চীনে রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন

        ভারতীয় দলে হার্দিক পাণ্ডিয়া ও বিরাট কোহলি নেই

পথ নির্দেশ : পর্দাহীনতাই ইভটিজিংয়ের মূল কারণ

পথ নির্দেশ : পর্দাহীনতাই ইভটিজিংয়ের মূল কারণ

আমরা মানুষ, সৃষ্টির সেরা জীব। তাই সমাজে সামাজবদ্ধভাবে বসবাস করে থাকি। সমাজে বসবাস করতে গিয়ে সমাজিক বিধি-বিধান ও ইসলামী নীতিমালাসহ অনেক আইন-কানুন ও নিয়ম-নীতি মেনে চলার চেষ্টা করি। কিন্তু বর্তমান আমাদের সমাজে, আধুনিক সভ্যতার দোহাই দিয়ে নানা রকম অপসংস্কৃতি, কুসংস্কার এবং অসামাজিক কার্যকলাপ বিরামহীনভাবে চলছে। সে সব অপসংস্কৃতির মধ্যে অন্যতম মূল কারণ হলো ইভটিজিং। ইভটিজিং এটি সামাজিক মরণ ব্যাধি। সমাজ জীবনে এটি একটি জঘন্যতম অপরাধ। এই মরণ ব্যাধি থেকে আমরা মুক্তি পেতে চাই। পরিত্রাণ পেতে চাই।
পাশ্চাত্যের অপ-সংস্কৃতির কোরাল গ্রাস থেকে ইভটিজিং নামক এই মরণ ব্যাধিটির উৎপত্তি। এই মরণ ব্যাধির দ্বারা মুসলিম জাতিকে ধ্বংস করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সারা বিশ্বে যত ইসলামবিরোধী শক্তি রয়েছে, তারা সবাই ইভটিজিং নামক এই মরণ ব্যাধিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। আমাদের দেশ একটি মুসলিম দেশে। এখানে ইভটিজিং নামক এই অপ-সংস্কৃতিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশে ইভটিজিং ছেড়ে দেয়ার মূল কারণ একটাই, আমরা মুসলিম। তারা মনে করেন, মুসলিম নারী সমাজকে যদি ইসলামে সুশীতল ছায়া এবং ইসলামের সুমহান জীবনাদর্শ থেকে বের করে আনা, চরিত্রহীনভাবে গড়ে তুলে যদি নস্ট ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করা যায়, তাহলে নারীকে ধ্বংস করা খুবই সহজ হবে। নারীর চরিত্র ধ্বংস মানে সব কিছু ধ্বংস করা অতি সহজ। নারীদের ইসলামী বিধি-বিধান পালন করা থেকে বিরত রাখতে পারলেই হলো। তাই ইসলামবিরোধী শক্তিরা ইভটিজিং নামক মরণ ব্যাধিকে শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে এবং সেই আলোকে তারা সব ধরনের কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইভটিজিং নামক অপ-সংস্কৃতি শুধু পশ্চাতের গণ্ডির মধ্যে নয়, এর ভয়াবহ পরিণাম বর্তমানে সারা বিশ্বে ছড়িযে পড়েছে। এর মাধ্যমে স্কুল-কলেজের ছাত্রী, শিক্ষিকা এবং ঘরের মা-বোনেরা বখাটেদের হাতে নিত্য দিনে নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে। এ জঘন্য ব্যাধির কারণে সামাজিক বিশৃঙ্খলা, পারিবারিক কলহ- বিবাদ এমনকি আত্মহত্যার মতো মর্মঘাতী ঘটনা নিয়মিত ঘটে যাচ্ছে। এসব অঘটন ঘটার মূল কারণ হচ্ছে, বর্তমানে নারীরা পর্দাহীনভাবে চলাফেরা করছে। পর্দা প্রথা লঙ্ঘন করছে। প্রিন্ট মিডিয়া এবং ইলেকট্রনিক ম্যাডিয়ায় নিয়মিতভাবে এসব খবর প্রচার করা হচ্ছে। প্রতি জেলায় মাঝে মাঝে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ইভটিজিংকারীদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে। ভোগ করছে ছয় থেকে এক বছরের জেল-জরিমানা । আবার অনেক অপরাধকারী রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মুক্তি পাচ্ছে।এভাবে অনেক নারীর জীবন শেষ হচ্ছে। কিন্তু ইভটিজিং কি বন্ধ হচ্ছে? বন্ধ হচ্ছে না। তবে সরকারিভাবে যদি ইভটিজিংকারীকে দৃষ্টান্তমূলক ও লজ্জাজনকভাবে শাস্তি দেয়ার ব্যবস্থা করা হতো, তবেই সমাজ জীবন থেকে এ ব্যাধি চিরদিনের জন্য বিদায় নিতো। একজনের কঠোর শাস্তি দেখে অন্য দশজন এমনি ইভটিজিং ছেড়ে ভালো পথে চলার চেষ্টা করত। ইসলাম ধর্মে পর্দা পালন করা ফরজ। বর্তমানে নারী সমাজ পর্দা লঙ্ঘন করার কারণে ইভটিজিং নামক মরণ ব্যাধির স্বীকার হচ্ছে। ইসলামের পূর্বে অর্থাৎ জাহেলি যুগে নারীদের পারিবারিক ও সামাজিকভাবে কোনো প্রকার মূল্য বা সম্মান ছিল না। ইসলাম আবির্ভাবের পর থেকে ইসলামী নীতিমালা অনুযায়ী নারীদের যথাযথ মর্যাদা ও মূল্য দেয়া হচ্ছে। বিশ্বনবী (সা.) নারীকে জীবন্ত কবর দেয়া থেকে রক্ষা করেছেন। সম্পতিতে মেয়ের অধিকার, বিবাহে মহর প্রদানসহ অসংখ্য সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে দিয়েছেন। ‘বিশ্বনবী (সা.) তাদের প্রাপ্য অধিকার প্রদান এবং সম্পত্তি ও মীরাসে অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’ তিনি (সা.) বলেছেন, ‘মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত।’ যেনা-ব্যভিচার এবং সামাজিক অবক্ষয় থেকে মুক্ত থাকার জন্য আল্লাহ বলেন, ‘আর ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ ও মন্দ কাজ।’ বিশ্বনবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা অপব্যয় করো না, চুরি করো না এবং ব্যভিচার করো না।’ ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। ইসলাম বিশৃঙ্খলা পছন্দ করে না। তাই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য, পুরুষের দৃষ্টি বা কু-মন্ত্রণা থেকে রক্ষার জন্য ইসলাম পর্দা বা হিজাবের ব্যবস্থা করেছেন। পর্দার ব্যাপারে কোরআন মজিদে এরশাদ হচ্ছে- ‘হে নবী! আপনার স্ত্রী-কন্যা এবং মুমিন মহিলাদের বলে দিন, তারা যেন নিজেদের চাদরের কিয়দাংশ নিজের (বুকের) ওপর ঝুলিয়ে রাখে। এতে তাদের (সম্ভ্রান্ত হিসেবে) চিনতে সহজ হবে। ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা যাবে না। আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ (সূরা : আহযাব)। ইসলামের নীতিমালা হচ্ছে, পুরুষ নিজের দৃষ্টি শক্তিকে সংরক্ষণ করবে, আর নারীরা নিজের রূপ বা সৌন্দর্য গোপন রাখবে। নারী-পুরুষ যখন ইসলামের নীতিমালা যথাযথভাবে মেনে চলবে তখন ইভটিজিং নামক জঘন্যতম ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা মোটেও থাকবে না। কেননা, মহান আল্লাহ তাআলা নারীদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশের ব্যাপার কঠিন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এরশাদ হচ্ছে- ‘তারা (নারী) যেন প্রকাশমান (অঙ্গ) ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে এবং তাদের মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে।’ (নুর)। পর্দা করা শুধু নারীর ওপর নয়, পুরুষের ওপরও ফরজ। বিশ্বনবী (সা.) পুরুষের দৃষ্টিশক্তি নারীর ওপর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন। এই বিধানটি যদি সমাজ জীবনে সত্যিকারভাবে বাস্তবায়ন হতো তাহলে ইভটিজিং নামক মরণ ব্যাধি থেকে নারীরা রক্ষা পেত। সমাজ জীবনে প্রশান্তির ঝর্ণা ধারা প্রবাহিত হতো। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি বিশ্বনবী (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলাম, হঠাৎ করে যদি কোনো নারী বা মহিলার প্রতি আমার দৃষ্টি পড়ে যায়, তাহলে আমাকে কি করতে হবে? বিশ্বনবী (সা.) বললেন, তুমি তোমার দৃষ্টিশক্তি বিলম্ব না করে ফিরিয়ে নিবে।’ (মুসলিম)। তাছাড়া নারীদের দেখলে বলতে হয়, ‘হে আল্লাহ তুমি আমাকে শয়তানের ধোঁকা থেকে মুক্তি দাও।’বর্তমানে নারীদের প্রতি ইভটিজিং নামক মরণ ব্যাধিটি সংঘটিত হওয়ার মূল কারণ হলো নারীরা কোনো ধর্মীয় বিধি-বিধান মেনে চলাফেরা করেন না। ইসলামের বিধান হচ্ছে, মহিলারা সর্বদা ঢিলাঢালা পোশাক পরিধান করবে। মহিলাদের আকর্ষণীয় অঙ্গ-প্রতঙ্গ কাপড় দ্বারা ঢেকে রাখবে। কেননা, লজ্জা ও শালীনতা নারীদের ভূষন। কিন্তু বর্তমান যুগ আধুনিক যুগ। আধুনিকতার স্রোতে নারীরা ঢিলাঢালা কাপড়ের পরিবর্তে স্কিনটাইট প্যান্ট শার্ট, কাটা হাতা জামা পরছে ও শর্ট পোশাক পরিধান করে চলেছে। এসব শটকাট পোশাক-আশাক পরিধানের কারণে তাদের অঙ্গ-প্রতঙ্গ দেখা যাচ্ছে। অথচ ইসলাম ধর্ম নারীদের জন্য এ ধরনের পোশাক পরিধান করা হারাম ঘোষণা করেছে। বেহায়াপনা, বস্ত্রহীন এবং বেমানান পোশাক নারীদের শরীরে একেবারে বেমানান। তাই নারীদের জন্য সর্বদা ঢিলাঢালা পোশাক পরিধান করা উচিত। বিশ্বনবী (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর অভিশাপ ঐ সকল নারীর ওপর, যারা কাপড় পরেও উলঙ্গ থাকে।’ বিশ্বনবী (সা.) কি সুন্দর কথা বলেছেন। ইসলামী বিধান ও পর্দা প্রথার মাধ্যমে ইভটিজিংসহ নারীর সকল প্রকার মঙ্গল রক্ষা করা সম্ভব।

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত