শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে সংবাদ , পত্রিকা অফিসে আগুন
দূর্গা পূজা, সম্প্রীতি ও আবহমান বাংলার ঐতিহ্য
সব ধরনের বিপদ থেকে যিনি জীবকে রক্ষা করেন, জগতের কল্যাণ সাধন করেন ও মানুষের দুঃখকষ্ট দূর করেন, তিনিই হচ্ছেন দেবী দুর্গা। তিনি আদ্যাশক্তি, মহামায়া, শিবানী, ভবানী, দশভুজা, চণ্ডী, নারায়ণী প্রভৃতি নামে ও বিশেষণে অভিহিত হন। পুরাণে কথিত আছে, আদ্যাশক্তি মহামায়া দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের লক্ষ্যে ও সমগ্র জীবের কল্যাণার্থে যুগে যুগে ও কালে কালে বিভিন্ন রূপে ভিন্ন ভিন্ন নামে আবির্ভূত হয়েছেন। দেবী দুর্গা তাঁরই বিশেষ সময়ের, বিশেষ যুগের এক বিশেষ রূপ।
শারদীয়ার আবহগুলো দেখলে বা এর অনুষঙ্গের দিকে তাকালেই বুঝা যায় এর পরতে পরতে আবহমান বাংলা এবং বাঙালির রূপ। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্য কোনো রাজ্যে দুর্গা এভাবে বন্দিত হন না। এক এক জায়গায় একেকরকম ভাবে অর্চনা করা হলে ও বাংলায় দুর্গার ধারণাই ভিন্ন। এখানে তিনি অসুররূপী অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে নারী শক্তির প্রতীক। তার ভেতর দিয়ে প্রকাশিত হয় নারীর জাগরণ। তিনি কালক্রমে হয়ে উঠেছেন বিজয়া। যার সাথে আনন্দ আর জয়ের যোগ অভিন্ন। ওই দুর্গা দশভুজা। যেমন দশভুজা ঘরে ঘরে বাংলার মায়েরা। তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অদৃশ্য দশহাতে ঘর সংসার সামলান। সামলান সব সমস্যা।
শারদীয় দুর্গোৎসব বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সব বাঙালির কাছে এ পূজা চিরায়ত ঐতিহ্য ও ধর্মীয় সংস্কৃতির মেলবন্ধনে এক অনুপম প্রীতিময় আনন্দ উৎসব। অশুভ ও অপশক্তির পরাজয় ও শুভশক্তির জয়, সত্য ও সুন্দরের আরাধনায় সর্বজীবের মঙ্গলসাধন শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রধান বৈশিষ্ট্য। অশুভ ও আসুরিক শক্তি দমনের মাধ্যমে সমাজে ন্যায়বিচার, সত্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা, সব মানুষের সমধিকার নিশ্চিতকরণ, মানুষের মধ্যকার সব ধরনের বৈষম্য বা ভেদাভেদ ও অন্যায়, অবিচার দূরীকরণ ও অসত্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, হানাহানিমুক্ত অসাম্প্রদায়িক মানবপ্রেমে উদ্বুদ্ধ সমাজ গঠন করার শিক্ষালাভই দুর্গোৎসবের প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
শারদীয় দুর্গোৎসব সমাজকে অসহিষ্ণুতা, হিংসা, বিদ্বেষ ও দ্বন্দ্ব-সংঘাতের অশুভ প্রভাব থেকে মুক্ত করে মানুষের মধ্যে ঐক্য, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহমর্মিতা প্রতিষ্ঠা করে। ঐক্যবদ্ধ করে সমগ্র বাঙালিকে। এক মায়াবী বন্ধনে জড়িয়ে রাখে সব বাঙালিকে। উদ্বুদ্ধ করে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সম্প্রীতি চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হতে। সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও ঐক্যের বন্ধন সুদৃঢ় করে। দুর্গোৎসবের শুভ্র ও আনন্দজাগানিয়া পরশ শুধু বাঙালি হিন্দু ধর্মানুসারীদেরই নয়, এর চিরায়ত ঐকতান স্পর্শ করে প্রত্যেক বাঙালির হৃদয়কে। দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে যে অনাবিল আনন্দ সবার মনের মধ্যে জেগে ওঠে, তা বাঙালির প্রতিটি গৃহ আলোকিত করে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার মঙ্গল ও হিতকামনায়।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, ঈদে মিলাদুন্নবী, জন্মাষ্টমী, শারদীয় দুর্গোৎসব, বুদ্ধপূর্ণিমা, বড়দিন প্রভৃতি ধর্মীয় অনুষ্ঠান কোনো বিশেষ ধর্মের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ থাকে না, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী-নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ ও উপস্থিতিতে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে উদ্্যাপিত হয়। জাতীয় চেতনায় ও শান্তি প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’—এই স্লোগান সামনে রেখে সব ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠীর মানুষ সাড়ম্বরে পালন করে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব।
সব ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে সৃষ্টির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করা, সমগ্র জীবের কল্যাণসাধনই ধর্মের মূল লক্ষ্য, কোনো বিশেষ সম্প্রদায়ের কল্যাণসাধন নয়। এই চেতনা মনে-প্রাণে ধারণ করেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সব মানুষের সুখ-শান্তি কামনায় ও সর্বজীবের মঙ্গলার্থে আবহমানকাল ধরে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে নানা উপাচার ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করে শারদীয় দুর্গোৎসব, আরাধনা করে দেবী দুর্গার। উৎসবমুখরতার মধ্য দিয়ে সব ধরনের হীনতা, সংকীর্ণতা ও ধর্মান্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’—এই চেতনা ধারণ করে জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী-নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ শারদীয় দুর্গোৎসব উদ্্যাপন করে এবং আনন্দ উৎসবে অংশগ্রহণ করে। সব বাঙালি মিলিত হয় অভিন্ন মোহনায়, অভিন্ন চেতনায়। পূজার ধর্মীয় অংশটুকু হিন্দুদের; কিন্তু মেলা, উৎসব ও আপ্যায়নে অংশগ্রহণ ও ও উপস্থিতিতে শারদীয় দুর্গাপূজা পরিণত হয় সর্বজনীন উৎসবে, পরিণত হয় সর্বস্তরের মানুষের মিলনমেলায়, পরিণত হয় অন্যতম জাতীয় উৎসবে। ঐক্য ও সমন্বয়ের প্রতীক হিসেবে এ উৎসব পরিণত হয় সম্প্রীতিময় আনন্দযজ্ঞে। সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের আবহ এবং ঐক্যসূত্রে গ্রথিত হয় সব মানুষের হৃদয়; দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। পূজা থেকে উৎসবে রূপান্তরের এই যে প্রক্রিয়া, এটি বাঙালি জাতির অসাম্প্রদায়িক সত্তার চিরন্তন বহিঃপ্রকাশ।
অতীত থেকেই দুর্গাপূজা উৎসবাকারে পালিত হয়ে আসছে সবার সম্মিলিত প্রয়াসে। সবার মঙ্গল ও হিতকামনায় এমন বৃহত্তম আয়োজন খুবই গুরুত্ব বহন করে। পূজার সময় মন্দিরে মন্দিরে ভক্তিমূলক গান, চণ্ডীপাঠ, অর্চনা, আরতি, ভক্তদের শ্রদ্ধার্ঘ্য, সেই সঙ্গে কোলাকুলি, প্রণাম, আশীর্বাদ, মেলা ইত্যাদি দুর্গোৎসবকে ধর্মীয় আবেশে আনন্দঘন করে তোলে। দুর্গোৎসব মানুষে মানুষে মেলবন্ধন সৃষ্টি করে। সৃষ্টি করে মানুষের সঙ্গে মানুষের প্রীতিময় ও কল্যাণময় সম্পর্ক। ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি দুর্গাপূজা সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও ঐক্য সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুর্গাপূজা সর্বজনীন উৎসব—এটা শুধু কথার কথা নয়। পূজাবিধিতেও তা লক্ষ করা যায়। দেবী দুর্গা মৃণ্ময়ী প্রতিমায় সপরিবারে পূজ্যপাদ। দুর্গার সঙ্গে সিদ্ধিদাতা গণেশ, মহাবীর দেবসেনা কার্তিক, ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী ও বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজিত হন। দেবাদিদেব মহাদেবের স্থান থাকে সবার ওপরে। দুর্গা দেবীর সঙ্গে তাঁর বাহন সিংহ, গণেশের বাহন ইঁদুর, কার্তিকের বাহন ময়ূর, লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা, সরস্বতীর বাহন হংস, এমনকি মহিষাসুরও পূজিত হন। উঁচু-নিচু-স্পৃশ্য-অস্পৃশ্য সবাই একত্রে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করে। পূজার পর শুভ বিজয়া। বিজয়ায় অবাধ মিলন। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সব মানুষ একত্রে বিজয়ার উৎসব পালন করে। সব বাধা ও মনের সংকীর্ণতা দূর করে অনৈক্য-বিভেদ, হিংসা-বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িক মনোভাব দূরে ঠেলে মানুষে মানুষে সমাবেশ ঘটে পূজার উৎসবস্থলে। সবার সহাবস্থান আর ঐক্যের মেলায় পরিণত হয় পূজার মন্দির। প্রকাশিত হয় বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনা। এ জন্যই শারদীয় দুর্গাপূজা সামাজিক সম্প্রীতি, মহামিলন ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার চিরন্তন উৎসব। সম্প্রীতিবিধ্বংসী কোনো চেষ্টা দুর্গাপূজার সর্বজনীনতাকে বিনষ্ট করতে পারবে না। বাঙালি জাতিসত্তার মর্মমূলে গ্রথিত ঐকতানের কাছে তা পরাভূত হবেই। আপামর জনতা দুর্গোৎসবে শামিল হয়ে উৎসবের আমেজে যে ঐক্যচেতনায় বাঁধা পড়েছে তা ছিন্ন করার ক্ষমতা কারো নেই। কোনো ঠুনকো আঘাতে এ বন্ধন কোনো দিন ছিন্ন হবে না।
দুর্গাপূজা যদিও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হিন্দুদের, কিন্তু মূলবাণী সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে নিবেদিত। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক চেতনা। দুর্গোৎসবে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে এক সামাজিক বন্ধন ও অসাম্প্রদায়িক পরিচয় ফুটে ওঠে, ভ্রাতৃত্ববোধের এক নতুন আবহ তৈরি হয়। দেবীর যুদ্ধরত রূপ লোকশিক্ষার একটি দৃষ্টান্ত। এটি হচ্ছে অশুভশক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির যুদ্ধ; অন্যায়, অসত্য ও অনাচারের বিরুদ্ধে ন্যায়, সত্য ও সদাচারের সংগ্রাম। দেবীর বন্দনার প্রেক্ষাপট হলো অন্তরের আসুরিক শক্তির বিনাশ। দুর্গাপূজা হচ্ছে শক্তি অথবা ঐশ্বরিক শক্তির আরাধনা। দেবীর ‘১০ হাত’ ঐক্য বা সম্মিলিত শক্তির প্রতীক। ঐক্যবদ্ধভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর, অন্যায়কে প্রতিহত করার শিক্ষাই দেবীর প্রতিমা থেকে শিক্ষণীয়। সুতরাং দুর্গাপূজা শক্তি, সংহতি বা ঐক্যের প্রতীক।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানো, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা সর্বোপরি সকলের উদার মানষিকতায় প্রতিবছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বাড়ছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজায়। যদিও কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা, মানুষরূপী কতিপয় অমানুষের হীন মানষিকতায় মন খারাপের খবর আমাদের বিচলিত করে। মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতে এই অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির বিজয়ে মা দুর্গার মর্ত্যে আবির্ভাব।
সমাজ প্রগতির নানা অনুষঙ্গের মধ্যে ধর্ম কিংবা ধর্মীয় আচার অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। ধর্মীয় আচার যখন কোনো একটি জাতির জীবনে উৎসবের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয় তখন তা ধর্মীয় চেতনার মধ্যে আবদ্ধ না থেকে হয়ে ওঠে অগ্রবর্তী সমাজ কাঠামোর ভিত্তিমূলের চলমান সোপান। বাঙালির জীবনে শারদীয় দুর্গোৎসব তেমনি এক বহমান অসাম্প্রদায়িক চেতনসত্তার প্রতিরূপ; যেখানে থাকে না কোনো জাতপাতের বাছবিচার, থাকে না কোনো ভেদাভেদ, থাকে না সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প। বাঙালি যে অসাম্প্রদায়িক জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে তা প্রতিবছরই প্রমাণিত হয় দুর্গোৎসবের মধ্য দিয়ে। এ কারণেই দুর্গোৎসব হচ্ছে সম্প্রীতির আর বাঙালির আনন্দ-উচ্ছ্বাস উদযাপনের উৎসব—এক মহামিলনধর্মী সত্যিকার অসাম্প্রদায়িক উৎসব।
শারদীয়া দুর্গাপূজা আমাদের অতীত আর ইতিহাসের এক অনিবার্য অংশ। তার সাথে বর্তমান, আর তার সাথেই জড়িয়ে আছে অনাগত ভবিষ্যত। এই কারণে তার নিরাপত্তা আর যথাযথ মর্যাদা বিধান করা জরুরি। হঠাৎ করে বাংলাদেশে এমন কিছু ঘটনার জন্ম দেয়া হয়েছে যাতে এই বিশ্বাস টাল খাচ্ছে রীতিমতো। যা কারো কাম্য না। এই সমাজে এই জাতিতে দীঘর্কাল ধরে পাশাপাশি বসবাস করা হিন্দু-মুসলমান বা অন্যদের বিশ্বাস ও ধর্ম আচরণে বাধা দেবার মানেই হলো সম্প্রীতি বিনাশ। এই অপচেষ্টা রুখতে হবে সবাই মিলে। নয়তো আমাদের বিপর্যয় ও সর্বনাশ ঠেকানো যাবে না।
সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে পূজার উৎসবে কোনো ঘাটতি ছিল না সহযোগিতা, সহানুভূতি, সৌহার্দ্য ও সৌজন্যবোধ প্রকাশে। এরই নাম বাংলাদেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই বন্ধন অটুট থাক অনন্তকাল। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভশক্তির সব বিবেকবান মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাক যুগ থেকে যুগান্তরে- শারদীয় দুর্গোৎসবে এমন প্রত্যাশা দেশবাসীর। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরকালীন ঐতিহ্য। সম্মিলিতভাবে এ ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিতে আমাদের আরও বেশি উদ্যোগী হতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত এই সোনার বাংলায় যেকোন ধর্মীয় উৎসব সমগ্র দেশ ও জাতিকে এক অপূর্ব মেলবন্ধনে আবদ্ধ করে এবং তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে সকল ধর্মের বিভিন্ন উৎসবে।
বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব ধর্মের মধ্যে যে সম্প্রীতি তা কি আজ ফিকে হয়ে আসছে? আমরা কি আবারো পারি না ভালোবাসা দিয়ে একে অপরকে সম্প্রীতির বাঁধনে বাঁধতে। মোরা একই বৃন্তে দু'টি কুসুম, হিন্দু মুসলমান – আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই গানটির সাথে সুর মিলিয়ে সম্প্রীতির বাঁধনকে করতে হবে আরো বেশি মজবুত।
গ্রামের নওজাওয়ান হিন্দু-মুসলমান মিলিয়া বাংলা গান আর মুর্শিদী গাইতাম....আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম৷
সত্যিই দিন দিন বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান এবং উপজাতিরা যেভাবে হামলার শিকার হচ্ছে, তাতে এই গানটিই সবার আগে মনে পড়ে৷ পূজা এলেই কোথাও না কোথাও প্রতিমা ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়৷ এখনও কিছু কিছু এলাকায় পূজার সময় মুসলমানরা মণ্ডপ পাহারা দেন৷ কিন্তু আগের সেই আনন্দ যেন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে৷ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে যেন একটা ফাটল ধরেছে৷ একটা দেশ তখনই বেশি সুন্দর, যখন তাতে বৈচিত্র বেশি৷ নূতন প্রজন্ম যেনো ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে গড়ে তোলে, স্থাপন করে সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত৷
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন