বাহামাসের একই রিসোর্টে ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই মার্কিন নাগরিকের মৃত্যু
চ্যাম্পিয়নদের সামনে উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট দল
বাংলাদেশ বনাম ভারত
নতুন উচ্চতায় ওঠার পথে এবার মাশরাফি বিন
মুর্তজাদের সামনে দাঁড়িয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নভারত। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেরসবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের আগে নির্ভারআছেন সাকিব আল হাসানরা।বৃহস্পতিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে(এমসিজি) সকাল সাড়ে নয়টায় সেমি-ফাইনালেওঠার লড়াইটা শুরু করবে মাশরাফি বিনমুর্তজারা। এমসিজিতে নিজেদের আগের ম্যাচেদক্ষিণ আফ্রিকাকে বিধ্বস্ত করেছিল ভারত।অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার কাছে বড় ব্যবধানেহেরেছিল মাশরাফির দল।এমসিজির সঙ্গে সেটাই ছিল বাংলাদেশ দলেরপ্রথম পরিচয়। বিশাল মাঠে টাইগারদেরফিল্ডিং ছিল এলোমেলো। ফিল্ডিং সাজানোতেওসমস্যা হচ্ছিল। সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতেএবার দারুণ খেটেছে বাংলাদেশ। কারণ ফ্ল্যাটব্যাটিং উইকেটে বল করার সময় ফিল্ডারদেরযথেষ্ট সহায়তা না পেলে বোলারদের জন্যকাজটা বহুগুণ কঠিন হতে পারে।বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনিদেরউপস্থিতিতে ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ বিশ্বেরঅন্যতম সেরা। মাশরাফি মানছেন, ভারত ম্যাচেসবচেয়ে বড় পরীক্ষাটা দিতে হবে তার দলেরবোলারদেরই।“উইকেট ফ্ল্যাট হবে। আমাদের ভালো বল করতেহবে। ভারতের ব্যাটসম্যানদের বল করাবোলারদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। যেধরনের উইকেটে খেলা হবে, তা বোলারদের জন্যকঠিন হবে।”দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাশরাফি।পেস বোলিংয়ে ভালো করছেন রুবেল হোসেন ওতাসকিন আহমেদ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণম্যাচে অসাধারণ বল করা রুবেলের কাছেপ্রত্যাশা আরও বেশি থাকবে বাংলাদেশের।গত বছর ভারতের বিপক্ষেই ওয়ানডে অভিষেক হয়তাসকিনের। সেই ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়েইতিহাস গড়েছিলেন তিনি। ভারতের সুরেশরায়নাও মানছেন বাংলাদেশ পেস ত্রয়ী বড়একটা পরীক্ষাই হবেন তাদের জন্য।একটি করে ম্যাচ খেললেও খুব একটা ভালো করতেপারেননি দুই বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি ওতাইজুল ইসলাম। ভারতের বিপক্ষে একমাত্রবিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে খেলতে পারেনসাকিব।নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেননি মাশরাফি।তিনি দলে এলে একটি স্থানের জন্য লড়াই হবেতাইজুল, আরাফাত ও নাসির হোসেনের মধ্যে।ব্যাটিং গভীরতা বাড়াতে খেলতে পারেননাসিরই। অফস্পিনে দুই ম্যাচে চার উইকেটনিয়ে সফলও তিনি।ভারত লক্ষ্য তাড়া করতে পছন্দ করে। তাই আগেব্যাট করতে হলে যত সম্ভব লক্ষ্য দিতে চানমাশরাফি।“আমাদের ভালো স্কোর করতে হবে। আবার জিততেচাইলে ওরা ভালো স্কোর করলে সেটা টপকাতেহবে।”বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপে একমাত্রদুর্ভাবনা উদ্বোধনী জুটি নিয়ে। আফগানিস্তানম্যাচের পর থেকে টানা চার ম্যাচে এক অঙ্কেইভাঙে উদ্বোধনী জুটি।তিনে সৌম্য সরকার ও চারে মাহমুদুল্লাহ দারুণখেলছেন। তাই ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন নাএনে উদ্বোধনী জুটিতে তামিম ইকবাল ও ইমরুলকায়েসকে আরেকটি সুযোগ দিতে পারেবাংলাদেশ। তবে পাঁচ জন বিশেষজ্ঞ বোলারনিয়ে খেলতে চাইলে বাদ পড়তে পারেন ইমরুল।টানা দুই ম্যাচে শতক করা মাহমুদুল্লাহ এখনবাংলাদেশের অন্যতম ব্যাটিং ভরসা। তাকেঘিরেই নিজেদের ইনিংস এগিয়ে নিতে চাইবেতারা। মাহমুদুল্লাহর হিসেবী ব্যাটিংয়ের সঙ্গেসাকিব ও মুশফিকুর রহিম আর সাব্বির রহমানেরআক্রমণাত্মক ব্যাটিং লড়াইয়ের পুঁজি এনে দিতেপারে দলকে।তিন মাস ধরে অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে ভারত।বিশ্বকাপ শুরুর আগে ভুগলেও বিশ্বকাপেশিরোপাধারীরা যেন অন্য চেহারা। টানা ছয়ম্যাচ জিতে ‘বি’ গ্রুপের সেরা দল হিসেবে শেষআটে পৌঁছায় তারা।অপরাজেয় ভারতের মুখোমুখি হতে ভয় পাচ্ছে নাবাংলাদেশ। সীমিত ওভারের ম্যাচে নিজেদেরদিনে যে কোনো কিছু করতে পারে তারা। এর আগেকোচ চন্দিকা হাথুরসিংহে, সহ-অধিনায়ক সাকিববলেছিলেন। একই কথা শোনা গেল মাশরাফিরমুখেও। তার বিশ্বাস, ভালো ক্রিকেট খেলতেপারলে বাংলাদেশের সুযোগ থাকবেই।বাংলাদেশের হারানোর কিছু নেই। তার সমস্তচাপ থাকবে ভারতের ওপরই। প্রতিপক্ষের এইভীষণ চাপের ম্যাচে সতীর্থদের উপভোগের মন্ত্রশুনিয়েছেন সাকিব। শিষ্যদের একই কথা বলেনকোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহেও।ভারতের ব্যাটিং বরাবরই শক্তিশালী। রোহিতশর্মা, শিখর ধাওয়ান, কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে,রায়না, ধোনিরা যে কোনো দলকে গুড়িয়ে দিতেপারেন।শিরোপাধীদের ব্যাটিং নয় এবারের আসরের বড়চমক তাদের বোলিং। প্রথমবারের মতো টানা ছয়ম্যাচে প্রতিপক্ষকে অলআউট করার কৃতিত্বদেখিয়েছেন তারা। মোহাম্মদ সামি, উমেশযাদব, মোহিত শর্মা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনরা দারুণছন্দে আছেন।ভারতের বোলারদের মোকাবেলার আগে প্রস্তুতিটাভালোই হয়েছে বাংলাদেশের। ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ডের ভালো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষেনিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন মাহমুদুল্লাহ-মুশফিকরা।ভারত ম্যাচে হবে বাংলাদেশের তিনশ'তমওয়ানডে। এর আগে ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষেশততম ও ২০০৭ সালে দেড়শ'তম ম্যাচে প্রতিবেশীদেশটির সঙ্গে খেলেছিল বাংলাদেশ। সেই দুইম্যাচেই জিতেছিল তারা।
শেয়ার করুন