হাসপাতাল থেকে ফের রিমান্ডে এসআই আকবর
সিলেটের বন্দর বাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদের মৃত্যুর ঘটনার মামলায় সাতদিনের রিমান্ডের চতুর্থ দিনে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রধান অভিযুক্ত সাময়িক বহিস্কিৃত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়া।
রিমান্ডে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফের তাকে হেফাজতে নিয়েছে।
পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ উজ জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রিমান্ডে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অসুস্থবোধ করায় আকবরকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ফের তাকে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।’
এর আগে গত সোমবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ভারত সীমান্তে আকবর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিন বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে কানাইঘাট থানা থেকে কড়া নিরাপত্তায় পুলিশের একটি দল তাকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হয়।
সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিংফিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিস্তারিত জানান জেলা পুলিশ সুপার। ব্রিফিং শেষে রাতেই আকবরকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক আওলাদ হোসেন পরদিন মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) সিলেট চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের বিচারক মো. আবুল কাশেমের আদালতে তাকে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে টাকার জন্য রায়হানকে (৩৩) নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। পরে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সিলেট কোতয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলায় ফাঁড়ির পুলিশের বিরুদ্ধে তার স্বামীকে নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ করেন তিনি। এরপর থেকে এসআই আকবর গা-ঢাকা দেন।
পরে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যু ও নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতা পায় কমিটি। এ ঘটনায় সাময়িক বহিস্কৃতরা হচ্ছেন- ফাঁড়ি ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) তৌহিদ মিয়া, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশীদ। আর প্রত্যাহার করা ৩ জন হলেন সহকারী উপ-দর্শক (এএসআই) আশীক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজীব হোসেন।
এছাড়া ফাঁড়ি ইনচার্জ সাময়িক বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবরকে পালাতে সহায়তা এবং তথ্য গোপনের অভিযোগ গত বুধবার (২০ অক্টোবর) ফাঁড়ির এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এখন পর্যন্ত এসআই আকবরসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে চারজনকে। আর অন্যরা পুলিশের হেফাজতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে আছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
শেয়ার করুন