মানবতার নজির: রুমেনা-মনিরের কোলে ‘পাগলির’ সন্তান
সিলেটের বিশ্বনাথে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর (পাগলি) সন্তান জন্ম দেয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (১ মে) সকালে পৌরসভার নতুন বাজারস্থ প্রবাসী চত্বরের পাশে থাকা যাত্রী ছাউনিতে সন্তান প্রসব করেন ওই নারী। জন্ম নেওয়া কন্যা সন্তানের বাবার কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি।
জানা যায়, যাত্রী ছাউনিতে পাগলির প্রসব বেদনার চিৎকার শুনে দৌড়ে এগিয়ে আসেন টিঅ্যান্ডটি রোডে বসবাসকারী কমরুন বেগম (৪২)। তাৎক্ষণিকভাবে তার ব্যবস্থাপনায় যাত্রী ছাউনিতেই পর্দার আড়ালে এক ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই পাগলি। পরবর্তীতে কমরুন বেগম বিশ্বনাথ থানায় গিয়ে খবর দিলে পুলিশ উপজেলা সমাজসেবা অফিসের ব্যবস্থাপনায় ওই নারী ও শিশুকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির ব্যবস্থা করে।
সন্তান প্রসবে সহায়তাকারী কমরুন বেগমের মেয়ে রুমেনা বেগম ও জামাতা মনির হোসেন পাগলির ওই ফুটফুটে সন্তানকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর রুমেনা ও মনির দম্পতি পাগলি ও তার কন্যা সন্তানের দেখাশোনা করছেন। এদিকে যাত্রী ছাউনিতে মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর (পাগলির) কন্যা সন্তানের মা হওয়ার খবর পেয়ে আইনি শর্তসাপেক্ষে দত্তক নেওয়ার জন্য ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুনন্দা রায়।
তিনি তার স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন,‘বিশ্বনাথ উপজেলায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা একটা মেয়ে বাচ্চা প্রসব করেছে, যার কোনো বৈধ অভিভাবক নেই। যদি কোনো নিঃসন্তান দম্পতি বাচ্চাটির অভিভাবকত্ব নিতে চান তাহলে নিম্নের ডকুমেন্টসসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার/উপজেলা সমাজসেবা অফিসার বরাবর আজই আবেদন দাখিল করুন।’ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো হচ্ছে- ‘আগ্রহী নিঃসন্তান দম্পতি মহিলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের প্রত্যয়ন নিবেন এই মর্মে যে তাদের ভবিষ্যতে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা নাই, ভোটার আইডির ফটোকপি ও মোবাইল নাম্বার, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়ন, দুইজন সাক্ষীর এনআইডি ও মোবাইল নাম্বার, আর্থিক সচ্ছলতার প্রত্যয়ন ও দম্পতির সম্মতিপত্র।’ এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, কেউ যদি এই সন্তানকে দত্তক নিতে চায় তাহলে আইনি প্রক্রিয়া মেনে নিতে পারবেন।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন