মিনা রহমান সিলেট থেকেই নির্বাচনী প্রচারনা শুরু করলেন ব্রিটিশ এমপি প্রার্থী
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে যত নির্বাচন হয়েছে সব নির্বাচনেই সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন রাজনৈতিক দলগুলো। এই রীতি শুধু বাংলাদেশের রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনীতিতে সক্রিয় বাংলাদেশীরাও নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতে সিলেটে ছুটে আসেন। আর সিলেটী বংশোদ্ভূত রাজনীতিবীদ হলে তো কথাই নেই। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে কনজারভেটিব পার্টির একমাত্র বাঙালী এমপি প্রার্থী মিনা রহমান সিলেট থেকেই তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার সিলেট নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে তার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।
কেনো সিলেট থেকে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে তার ব্যাখ্যাও সংবাদ সম্মেলনে দিয়েছে। তিনি বলেন, হযরত শাহ জালাল (র.) পূণ্যভূমি, কলি যুগের অবতার শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর পিতৃভূমি দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশে সিলেট আমার জন্মস্থান। যে মাটিতে জন্ম দিয়েছেন মরমী কবি হাছন রাজা, রাধারমন,, দৃর্বিনশাহ, বাউল আব্দুল করিম সাধকেরা। তাই আউল-বাউলের দেশ পবিত্রভূমি সিলেট থেকে আপনাদের দোয়া নিয়ে নির্বচানী প্রচারণা শুরু করতে চাই। আর এ কারণেই সিলেট আসা বলে জানালেন মিনা। তিনি সকলের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, আমি যে আসন থেকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছি এখানে আট হাজারেরও বেশী বাঙ্গালী ভোটার রয়েছেন। আর বেশি অংশই বৃহত্তর সিলেটের মানুষ। বাংলাদেশ থেকে আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিতরা তাদের অনুরোধ করলে তারা আমাকে ভোট দিবে।
সংবাদ সম্মেলনে মিনা বলেন, ২০১৫ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিতব্য ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিব পার্টি আমাকে গ্রেটার লন্ডনের বার্কিং আসন থেকে মনোনয়ন দিয়েছে। অন্যান্য দল থেকে আরো কয়েকজন বাঙ্গালী মনোনিত হলে কনজারভেটিব পার্টি থেকে একমাত্র বাঙ্গালী হিসেবে আমি মনোনয়ন পেয়েছি। আমি আপনাদের সন্তান তাই আমার নির্বাচনী আসনে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করার আগেই আপনাদের পরামর্শ ও দোয়া নিতে সিলেট এসেছে। আর পূণ্যভূমি সিলেট থেকেই আমি আমার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করলাম।
তিনি বলেন, আমি মাত্র ২১ দিন বয়সে ইল্যান্ডে পাড়ি জমাই। ইল্যান্ডে বেড়ে উঠলেও আমি শেকর থেকে বিচ্যুত হয়নি। নিজেকে একজন বাঙ্গালী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। ছাত্রজীবন থেকে ব্রিটিশ রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হলেও বৃটেনের বহুজাতিক সমাজে বাঙ্গালী কৃষ্ট ক্যালচার ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরতে কাজ করছি। চাকুরির পাশাপাশি লন্ডনবাংলা উইম্যান নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্রিটিশ বাঙ্গালী মহিলাদের নিয়ে বাংলা বিকাশে কাজ করছি। ২৯ বছর যাবত বৃটেনে নিজেকে কমিউনিটির সেবায় নিয়োজিত রেখেছি।একজন আউটরিচ ওয়ার্কার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে বলে জানান মিনা। আউটরিচ ওয়ার্কার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও তিনি এখন হাউজিং এসোসিয়েশনের হাউজিং ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি কনজারভেটিব পার্টির প্রশংসা করে বলেন, কনজারভেটিব পার্টি বাঙ্গালী ভ্যালুতে বিশ্বাসী। মাইগ্রেন্ট কমিউনিটি বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের কল্যাণে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে আমার পার্টি কনজারভেটিব। বৃটেনে অর্থনৈতিক মন্দার সময় লেবার পার্টি সকল সুযোগ-সুবিদাকে সংকুচিত করতে চাইলে উলেখ করে তিনি বলেন, কনজারভেটিব পার্টি জনগনের চাকুরিসহ জনকল্যানে সব ধরনের সুযোগকে আরো প্রসারিত করেছে। আগামীতে কনজারভেটিব পার্টি আবার ক্ষমতায় গেলে সাড়ে বার হাজার পাউন্ড পর্যন্ত যাদের আয় তাদেরও কোন টেক্স পরিশোদ করতে হবে না বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি নির্বাচনে বিজয়ী হলে শুধু বাঙ্গালী কমিউনিটর এমপি হব না। আমি আমার নির্বাচনী এলাকায় বসবাসরত সকল নাগরিকের এমপি হব। সকলের সহযোগতায় এগিয়ে যাব। আমার নির্বাচনী এলাকার জনগনকে নিয়ে কর্মসংস্থান সৃস্টি করব। যাতে কোন নাগরিকই বেকার না থাকতে পারে।সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- প্রবাসী গীতিকার ও সঙ্গীত শিল্পী হিমাংশু গোস্বামী, ভাতগাও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ প্রমুখ।
শেয়ার করুন