সিলেটে হিন্দু-মুসলিম সংঘর্ষ, আহত ১০
সিলেটের নগরীর কাজলশাহ যুগলটিলায় মুসল্লিদের সাথে ইসকন ভক্তদের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে যাদের নাম জানা গেছে তারা হলেন সাবেক কাউন্সিলর জেবুন্নাহার শিরীন (৫৮), সাজু আক্তার (২৮), বাবুল আহমেদ (৪৩), সাঈদ (২৪), আরিফ (২২), সুমন (১৭) ও রাজেন্দ্র দাশ। এসময় অন্তত ২০ জনকে আটক করা হয় বলে জানা গেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের ভাষ্য- জুমার নামাজের সময় ইসকন মন্দিরে পূজা-অর্চ্চনার অনুষ্ঠান চলছিল। এ সময় তারা মাইকে গান-বাজনা বাজাতে থাকলে তা বন্ধ করতে বেশ কয়েকবার তাদের অনুরোধ জানান স্থানীয় মসজিদের মুসল্লিরা। এরপরেও তারা মাইকে গান বাজানো বন্ধ না করলে নামাজের পর ক্ষুব্ধ মুসল্লিরা ইসকনে গিয়ে তাদের বক্তব্য জানতে চান। এসময় ইসকনের লোকজনের সাথে বাকবিতন্ডা শুরু হলে মুসল্লিদের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এদিকে, সংঘর্ষের সময় ইট-পাটকেলের আঘাতে প্রায় ১০জন পথচারী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এস এম রোকন উদ্দিন জানান, শুক্রবার জুমার দিনে কাজলশাহ মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে সমবেত হন মুসল্লিরা। এ সময় পার্শ্ববর্তী ইসকন মন্দিরে কীর্তন উপলক্ষে গান-বাজনা চলছিল। মসজিদ থেকে মুসল্লীরা নামাজের সময় গান-বাজনা বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু, গান বাজনা বন্ধ না করায় জামাতের পর বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা ইসকন মন্দিরে যান এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হন। এক পর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। উভয় পক্ষ পরস্পরের প্রতি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।
খবর পেয়ে এসএমপি’র ডিসি(উত্তর) ফয়সল মাহমুদের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। দু’পক্ষের সংঘর্ষের কারণে রিকাবীবাজার টু মেডিকেল রোড পর্যন্ত রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
সিলেট মহানগর পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ) ফয়সল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কি কারণে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে বলে জানান তিনি।
বর্তমানে এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কামরুল আহসান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
শেয়ার করুন