তৃতীয় স্টিমুলাস চ্যাক কারা পাচ্ছে? কবে পাচ্ছে?
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
১ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারের তৃতীয় প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে জো বাইডে। ইতোমধ্যে সিনেটের নিম্নকক্ষে পাশ হয়েছে বাইডেন প্রস্তাবিত প্রণোদনা প্যাকেজ।
শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) আইনপ্রণেতারা প্রণোদনা প্যাকেজের বাজেট আউটলাইন অনুমোদন করেন। আগামী সপ্তাহে রিপাবলিকানদের ভেটো ছাড়াই প্রণোদনা প্যাকেজ বিষয়ে অগ্রগতির কাজ শুরু করা যাবে।
এই প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ভাতার জন্য যোগ্য নাগরিকেরা ১ হাজার ৪০০ ডলার পাবেন। তবে রিপাবলিকানদের আপত্তির মুখে স্টিমুলাস চ্যাক আরো 'টার্গেটেড' হয়ে যাচ্ছে।
টার্গেটেড স্টিমুলাস চ্যাক কী?
বাইডেন ঘোষিত ১৪০০ ডলারের স্টিমুলাস চ্যাক বিষয়ে আপত্তি তুলেছিলো রিপাবলিকানরা। তাঁরা জানান, ১৪০০ ডলার স্টিমুলাস চ্যাকে অনেক বেশি পরিমাণ অর্থ খরচ হয়ে যায়।
তবে পরবর্তীতে বাইডেন জানান, ভাতার পরিমাণ ১৪০০ ডলার থেকে কমানো হবে না। বরং এবারের ভাতা আরো 'টার্গেটেড' হবে।
অর্থাৎ, এবারে ইনকামের উপর ভিত্তি করে এই ভাতা আরো দেওয়া হবে। উচ্চ আয়ের ও ট্যাক্স প্রদানকারী ব্যক্তিরা এবারের ভাতার জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। তবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের বাসিন্দারা ভাতার জন্য যোগ্য হবেন এবং মূলত তাদেরকে টার্গেট করে ভাতা প্রদান করা হবে।
গত দুইবার একক ভাবে বছরে ৭৫ হাজার ডলারের কম এবং পারিবারিকভাবে যাদের আয় ১ লাখ ৫০ হাজারের কম, তাদেরকে ভাতার জন্য বিবেচিত করা হয়েছিলো।
এবারে যাদের ইনকাম বছরে ৩ লাখ ডলারের বেশি, তারা ভাতার জন্য বিবেচ্য হবে না।
স্টিমুলাস চ্যাক হতে পারে 'ফাস্ট ট্র্যাকড'
মধ্য-মার্চের এক সপ্তাহ আগেই স্টিমুলাস চ্যাক বিল পাশ হতে পারে৷ তবে তৎক্ষনাৎ এই অর্থ পাওয়া যাবে না।
এর জন্য বেশ কিছু জিনিসের উপর নির্ভর করতে হবে। বিশেষ করে ট্যাক্স সেশন ২০২০ এর উপর ভাতার অর্থ কবে নাগাদ পাওয়া যাবে- সেটি নির্ভর করবে।
কবে নাগাদ অর্থ পাওয়া যাবে?
দ্বিতীয় ভাতার অর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় পাশ করেছিলেন। খুব দ্রুত বিলটি পাশ হওয়ার জন্য তাগাদা থাকায় অর্থ খুব দ্রুত পাঠিয়েছিলো অর্থ মন্ত্রণালয়।
তবে যেহেতু এবারে ট্যাক্স সেশন ২০২০ রয়েছে, তাই তৃতীয় স্টিমুলাস চ্যাক খুব দ্রুত পাওয়া যাবে বলে সম্ভাবনা নেই।
ঘোষিত ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারের এই প্যাকেজে কর্মহীনদের জন্য বেকারভাতা, করোনায় গৃহহীন হওয়া বাসিন্দাদের সহায়তা ও খাদ্য সহায়তার পরিমাণ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় সরকার এবং ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের জন্য আরও বেশি সহায়তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবে।
বর্তমানে বেকারভাতা হিসেবে সপ্তাহে ৩০০ ডলার করে দেওয়া হয়। জো বাইডেনের প্রস্তাবে এর পরিমাণ বাড়িয়ে ৪০০ ডলার করার কথা বলা হয়েছে।
কী আছে এবারের প্রণোদনা প্যাকেজে?
দ্বিতীয় প্রণোদনা প্যাকেজে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের মাত্র ১১ সপ্তাহের সহায়তা দেওয়ার মতো তহবিল পাস করা হয়, যা আগামী মার্চেই শেষ হয়ে যাবে। ফলে একটা অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছিল কাজ হারানো মানুষদের। বাইডেনের প্রস্তাব নিঃসন্দেহে তাদের আশ্বস্ত করবে। এ ছাড়া ঘণ্টাপ্রতি মজুরি হার ১৫ ডলারে উন্নীত করতে কংগ্রেসকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাইডেন।
এছাড়া মহামারির সময়ে কাজ হারানো নিম্ন ও মধ্য আয়ের পরিবারগুলোকে বাড়িভাড়ায় সহায়তা দিতে ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের তহবিল রাখার কথা বলা হয়েছে। গত ডিসেম্বরে দ্বিতীয় প্রণোদনায় ঘোষিত আড়াই হাজার কোটি ডলারের তহবিলের সঙ্গে এটি যোগ হবে।
এর বাইরে বাড়ির বিপদগ্রস্ত বাড়ির মালিকদের বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ বাবদ ৫০০ কোটি ডলারের একটি তহবিল রাখা হয়েছে। এ ছাড়া গৃহহীন হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য উদ্যোগ নিতে অঙ্গরাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা দিতে আরো ৫০০ কোটি ডলার রাখার কথাও বলেছেন বাইডেন।
পাশাপাশি ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় উচ্ছেদের আশঙ্কায় থাকা পরিবারগুলোকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উচ্ছেদ না হওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। ফেডারেল সরকারের পক্ষ থেকে এই নিশ্চয়তা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন