যুক্তরাষ্ট্রে শিপিং জালিয়াতি মামলায় ক্যালিফোর্নিয়ার এক ব্যক্তির কারাদণ্ড
প্রথম বিতর্কে ধরাশায়ী ট্রাম্প
ছবি: এলএবাংলাটাইমস
মুষ্টিযুদ্ধের সঙ্গে যদি তুলনা করি, তাহলে বলা যায়, তাঁদের প্রথম এবং সম্ভবত একমাত্র প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে কমলা হ্যারিস সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নকআউটে ধরাশায়ী করেছেন। ৯০ মিনিটের বিতর্কে কামালা দক্ষ মৎস্যশিকারির মতো টোপ ছেড়েছিলেন। ক্রুদ্ধ ও অসহায় ট্রাম্প সহজেই সে টোপে ধরা দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্ক নাটকীয়তার জন্য যতটা পরিচিত, গুরুত্বপূর্ণ নীতি (পলিসি) প্রশ্নে অর্থপূর্ণ আলোচনার জন্য ততটা নয়। বিতর্ক আদৌ এই নিয়মের ব্যতিক্রম ছিল না। কামালা দক্ষ কৌঁসুলি। অন্যদিকে ট্রাম্প ঝানু ‘শো ম্যান,’ টেলিভিশন মাধ্যমটা তিনি খুব ভালো জানেন। কিন্তু নিজের মেজাজ সামলে প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়া তাঁর জন্য কঠিন। কমলার লক্ষ্য ছিল ট্রাম্প তাঁর মেজাজ হারান, এমন মন্তব্য ছুড়ে দেওয়া। ঠিক সে কাজটিই করেছেন তিনি।
অর্থনীতি, অভিবাসন, গর্ভপাত, বর্ণবাদ ও গণতন্ত্রের ওপর হামলা—মোটের ওপর পাঁচটি বিষয়েই বিতর্ক আবর্তিত হয়। সঙ্গে ইউক্রেন ও গাজা যুদ্ধ এবং স্বাস্থ্যবিমা প্রসঙ্গ বিতর্কে ঝাঁজ ও রস দুটিই সরবরাহ করে।
বিতর্কের প্রথম ১৫ মিনিট ট্রাম্প মোটের ওপর নিজেকে সামলে ছিলেন। অর্থনীতি প্রশ্নে অধিকাংশ মার্কিন ভোটার তাঁর নেতৃত্বের ওপর অধিক আস্থাবান। সে কথা মাথায় রেখে ট্রাম্প কামালা ভালোই ঠুকেছিলেন। তাঁর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ এখনকার চেয়ে অনেক ভালো ছিল। কিন্তু অভিবাসন নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই খেই হারিয়ে ফেলেন ট্রাম্প। তাঁর প্রচারশিবিরের অন্যতম কেন্দ্রীয় বিষয় অভিবাসন। নির্বাচিত হলে তিনি এক কোটির বেশিরভাগ বহিরাগতকে জোর করে বহিষ্কার করবেন বলে ঘোষণাও দিয়েছেন। এত লোককে কীভাবে বহিষ্কার করবেন, এমন একটি প্রশ্নের কোনো উত্তরই তাঁর কাছে ছিল না। উল্টো ওহাইওতে অবৈধ বহিরাগতরা স্থানীয়দের কুকুর-বিড়াল চুরি করে খাচ্ছে, এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলেন। বিতর্কের সঞ্চালকদের একজন তাঁকে স্মরণ করিয়ে দেন, তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন কথাটা মিথ্যা।
কমলা ও তাঁর প্রচারশিবির বিতর্কের ফলাফলে দারুণ খুশি। এতটাই খুশি যে তারা আরেক দফা বিতর্কের প্রস্তাব করেছে। ট্রাম্প দাবি করেছেন, কমলা নয়, তিনিই জিতেছেন। কমলার হার হয়েছে বলেই তিনি এখন আরেক দফা বিতর্কের দাবি তুলেছেন।
এই বিতর্কের আগে অধিকাংশ জনমত জরিপে ট্রাম্প ও কামালার অবস্থান ছিল সমানে সমান। সে কারণেই সবাই এই বিতর্কের অপেক্ষায় ছিল। যে ১৫ শতাংশ ভোটার এখনো মনস্থির করে ওঠেননি, তাঁরা হয়তো এই বিতর্কের পর সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। তাঁরা কোন দিকে ঝুঁকছেন, কামালা না ট্রাম্প? সে জরিপ জানার জন্য আমাদের অবশ্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
এলএবাংলাটাইমস/এজেড
শেয়ার করুন