অবৈধ অভিবাসন দমনে হন্ডুরাস ও উগান্ডার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফেরত চুক্তি
সুপ্রিম কোর্টে ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের আদেশ নিয়ে শুনানি শুরু
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব (birthright citizenship) বাতিলের উদ্যোগ এখন সুপ্রিম কোর্টে শুনানির মুখোমুখি। এই মামলাটি ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে।
হোয়াইট হাউজে ফেরার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন যেখানে বলা হয়, অবৈধ অভিবাসীদের সন্তানরা যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেও তারা নাগরিক হিসেবে গণ্য হবে না।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ফেডারেল আদালত – মেরিল্যান্ড, ম্যাসাচুসেটস ও ওয়াশিংটন – এই আদেশ কার্যকর হওয়ার আগে তাতে বাধা দেয়। আদালতের এমন সার্বজনীন নিষেধাজ্ঞা (nationwide injunction) নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন আপত্তি জানায় এবং সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন তোলে যে, নিম্ন আদালতগুলো কি সারা দেশের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে?
যদি সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের পক্ষে রায় দেয়, তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাহী আদেশ দিয়ে আরও স্বাধীনভাবে নীতি নির্ধারণ করতে পারবেন, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই। এতে আদালতের নিয়ন্ত্রণ সীমিত হয়ে পড়বে।
আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী অনুযায়ী, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব একটি সাংবিধানিক অধিকার।
মোট ২২টি অঙ্গরাজ্য ও অভিবাসন অধিকারকর্মীরা তিনটি মামলা করেছে এই আদেশের বিরুদ্ধে। তারা বলছে, আদেশটি কার্যকর হলে হাজার হাজার শিশু দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে পড়বে, এমনকি কেউ কেউ রাষ্ট্রবিহীন (stateless) অবস্থায় চলে যেতে পারে।
কেস ওয়েস্টার্ন রিজার্ভ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অভিবাসন আইনজীবী অ্যালেক্স কুইচ বলেন, "যদি নাগরিকত্ব বাতিল হয়, অনেক শিশুর কোনও দেশ থাকবে না। এমনকি তাদের পিতামাতার দেশও হয়তো তাদের গ্রহণ করবে না। তখন এই শিশুদের কোথায় পাঠানো হবে, সেটাও স্পষ্ট নয়।"
ন্যায়বিভাগ বলছে, একের পর এক সার্বজনীন নিষেধাজ্ঞা প্রেসিডেন্টের নীতি বাস্তবায়নে বড় বাধা তৈরি করছে। তারা বলেছে, “এই নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যত প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার ওপর সরাসরি আঘাত।”
একটি আলাদা মামলায়, সুপ্রিম কোর্ট ইতোমধ্যে ট্রাম্পের সামরিক বাহিনীতে ট্রান্সজেন্ডার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার অনুমতি দিয়েছিল, যা নিচের আদালত বন্ধ করে দিয়েছিল।
এই মামলার রায় শুধু জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা এবং নির্বাহী ক্ষমতার সীমা নিয়ে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। সুপ্রিম কোর্টের রায় এখন শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বিশ্ব রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন