গাজা নিয়ে সিনেট বিক্ষোভে গ্রেপ্তার হলেন Ben & Jerry’s-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বেন কোহেন
ছবিঃ এলএবাংলাটাইমস
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় আইসক্রিম ব্র্যান্ড Ben & Jerry’s-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বেন কোহেন (Ben Cohen) যুক্তরাষ্ট্র সিনেটে গাজা সংকট ও ইসরায়েলকে সামরিক সহায়তার প্রতিবাদে এক বিক্ষোভে অংশ নিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বুধবার ওয়াশিংটনে স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের সচিব রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র এর শুনানির সময় বিক্ষোভকারীরা হঠাৎ করে অধিবেশন বিঘ্নিত করে।
এসময় বেন কোহেনসহ আরও ৬ জনকে পুলিশ আটক করে। বেন কোহেনের বিরুদ্ধে ‘Crowding, Obstructing, or Incommoding’ (অবস্থান দখল, বাধা প্রদান বা জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগ) এনে মামুলি অপরাধ হিসেবে চার্জ গঠন করা হয়, যা সাধারণত শান্তিপূর্ণ অসহযোগ আন্দোলনে ব্যবহৃত হয়।
তবে বাকি ৬ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তাকে আক্রমণ ও গ্রেপ্তারের সময় বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউএস ক্যাপিটল পুলিশ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কোহেনকে হাত বাঁধা অবস্থায় পুলিশ ভবন থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে তিনি বলেন, ‘’কংগ্রেস গাজায় শিশুদের বোমা মেরে হত্যা করে, আর আমেরিকায় মেডিকেইড থেকে শিশুদের সরিয়ে সে অর্থ দিয়ে যুদ্ধ চালায়।”
Ben & Jerry's ১৯৭৮ সালে বেন কোহেন এবং জেরি গ্রিনফিল্ডের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং শুরু থেকেই সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে তাদের সোচ্চার ভূমিকা ছিল।
তারা LGBTQ+ অধিকার, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিভিন্ন মানবিক ইস্যুতে দীর্ঘদিন ধরে কথা বলেছে।
২০০০ সালে Ben & Jerry’s-কে অধিগ্রহণ করে বহুজাতিক কোম্পানি Unilever। তবে শর্ত ছিল, ব্র্যান্ডের নিজস্ব আদর্শ ও মূল্যবোধ রক্ষা করার জন্য একটি স্বাধীন বোর্ড থাকবে।
২০১৯ সালের পর থেকে Unilever ও Ben & Jerry's-এর সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। ২০২১ সালে যখন Ben & Jerry's ওয়েস্ট ব্যাংকে আইসক্রিম বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করে, তখন দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে এবং বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
সম্প্রতি Ben & Jerry's দাবি করেছে, রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে তাদের সিইও ডেভিড স্টিভারকে বরখাস্ত করেছে Unilever।
BBC-কে দেওয়া এক বিবৃতিতে Unilever বলেছে, ‘’বেন কোহেন একজন নাগরিক হিসেবে নিজের মতপ্রকাশের অধিকার প্রয়োগ করেছেন। এটি তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, Ben & Jerry’s বা Unilever-এর পক্ষ থেকে নয়।”
গাজার চলমান মানবিক সংকট নিয়ে Ben & Jerry's একাধিকবার যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায়ই এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন কোহেন।
এই ঘটনাটি শুধু একজন উদ্যোক্তার নাগরিক প্রতিবাদের দৃষ্টান্তই নয়, বরং একটি কর্পোরেট ব্র্যান্ডের রাজনৈতিক অবস্থান ও মালিকানার টানাপড়েনকেও সামনে নিয়ে এসেছে।
এলএবাংলাটাইমস/ওএম
শেয়ার করুন