আমি নিষ্কর্মা, কোনো নির্বাহী ক্ষমতা নেই : রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ
ইচ্ছা থাকলেও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার ঘেরাটোপের
কারণে মন খুলে সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিকসহকর্মী ও বন্ধদের সাথে কথা বলতে পারেন নাবলে আফসোস করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুলহামিদ। এ সময় এলাকার মানুষের দাবি-দাওয়াবাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নিজের কোনো ক্ষমতা নেইবলেও হাস্যরসের মাধ্যমে মন্তব্য করেন তিনি।কিশোরগঞ্জ জেলা সার্কিট হাউস মিলানায়তনে আজশনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের সাথে একমতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি মো.আব্দুল হামিদ। তিনি বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ আমারজন্মভূমি, তাই এখানকার সাধারণ মানুষ,রাজনৈতিক সহকর্মী ও বন্ধুদের সাথে দেখা করতেমন চায়। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও আগের মতো যখনযেভাবে ইচ্ছা ঘুরতে পারি না। তবে যখনই সুযোগপাই আপনাদের কাছে ছুটে আসি। এলেও সে ক্ষেত্রেতেমন লাভ হয় না, কারণ সরকারের বিভিন্নবাহিনী আমাকে এমনভাবে ঘিরে রাখে যে,আপনাদের সবার সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারিনা। প্রাণ খুলে কথা বলতে পারি না।’‘আমাকে বহনকারী গাড়িও এমন দ্রুত গতিতে চলে যেগাড়িতে বসেও খুব একটা কিছু দেখতে পাই না।যারা বাইরে থেকে আমাকে দেখতে চান, তাঁরাওতা পারেন না। কারণ গাড়ির কাঁচ এমন ধরনের যে,বাইরে থেকে কিছু দেখা যায় না। আমাকে যেনবাইরে থেকে কেউ গুলি করতে না পারে তাই এইব্যবস্থা করা হয়েছে।’এ সময় শোলাকিয়া ঈদগাহ সেতু, কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ বাইপাস নির্মাণসহ স্থানীয় বিভিন্নদাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি হাস্যরসেরমাধ্যমে বলেন, ‘আমি নিষ্কর্মা, আমার কোনোনির্বাহী ক্ষমতা নেই। আমার আদেশে কোনো কাজওহয় না। আমি বড়জোর অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখতেপারি।’দেশের বৃহত্তম ঈদগাহ ময়দান শোলাকিয়ামাঠসংলগ্ন সেতু নির্মাণের কাজ দীর্ঘদিনেও শুরুনা হওয়ায় রাষ্ট্রপতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,‘পৌর মেয়রের এত ক্ষমতা থাকার পরও কেন কাজ শুরুহচ্ছে না। আমি যদি পারতাম তবে নিজে দাঁড়িয়েথেকে সেতুটি নির্মাণ করে দিতাম।’প্রস্তাবিত ময়মনসিংহ বিভাগ প্রসঙ্গে আবদুলহামিদ বলেন, ‘আমি কিশোরগঞ্জকে ঢাকা বিভাগেইরাখার পক্ষে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ হলেআমি আমার এই অভিমত জানাব।’মতবিনিময় সভায় কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবেরসভাপতি এ কে নাছিম খান, জেলা প্রেসক্লাবসভাপতি মোস্তফা কামালসহ কয়েকজন সাংবাদিকবক্তব্য রাখেন। এ সময় সংসদ সদস্য সোহরাবউদ্দিন, আফজল হোসেন ও দিলারা আসমা, জেলাপরিষদের প্রশাসক, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র,জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপার (এসপি)উপস্থিত ছিলেন।পরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জেলা আইনজীবীসমিতি, পূজা উদযাপন পরিষদ, ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ,সুশীলসমাজের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশারলোকজনের সাথে মতবিনিময় করেন।এর আগে বিকেলে তিনি করিমগঞ্জে রাষ্ট্রপতিআবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করেন।সেখানে কলেজ মিলনায়তনে তিনি সংক্ষিপ্তবক্তৃতায় বলেন, শুধু ব্যবসায়িক মনোবৃত্তি নিয়েযেন কোনো হাসপাতাল পরিচালিত না হয়, পীড়িতমানুষকে সেবা দেওয়াই যেন মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যহয়। মানুষ এখানে এসে যেন যথাযথ সেবা পায়।চারদিনের সফরে রাষ্ট্রপতি গত ৯ এপ্রিল প্রথমইটনা উপজেলা সফরে আসেন। পরে রাতে তিনিমিঠামইন উপজেলা সদরের কামালপুরে নিজবাড়িতে রাত্রিযাপন করেন। শনিবার দুপুরে তিনিমিটামইন থেকে কিশোরগঞ্জে আসেন। রোববারবিকেলে রাষ্ট্রপতি হেলিকপ্টারে করে কিশোরগঞ্জথেকে ঢাকা ফিরে যাবেন।
শেয়ার করুন