আপডেট :

        আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট উপলক্ষে ১৪১টি উপজেলায় ব্যাংক বন্ধ থাকবে

        ব্যারিস্টার সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি মুজিবুল হক চুন্নুর

        ভুড়িভোজের আয়োজন, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

        যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর এক সেনা সার্জেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়া

        জেলেনস্কিকে হত্যার ষড়যন্ত্র, দুই ইউক্রেনীয় কর্নেল আটক

        দক্ষিণ আফ্রিকায় বহুতল ভবনধস, এখনো নিখোঁজ ৪৮

        ভবিষ্যতে আদালতের নির্দেশ লঙ্ঘন করলে কারাদণ্ড হতে পারে ট্রাম্পের বিচারক

        পুলিৎজার পেল রয়টার্স, ওয়াশিংটন পোস্ট

        ছয় বছরের রাষ্ট্রপতির মেয়াদের জন্য পঞ্চমবারের মতো শপথ নিয়েছেন পুতিন

        গাজা থেকে মিসরে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাফাহ ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ

        মালদ্বীপ বয়কটের ডাক দেন ভারতীয়রা

        হাসপাতালেই স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করলেন এক ব্যক্তি

        হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল

        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল

        কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপ

        নিরপেক্ষভাবে সেবা প্রদানের জন্য নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা প্রদান করেছেন আইজিপি

        দেশের পশ্চিমাঞ্চলের চেয়ে পূর্বাঞ্চলে রেল দুর্ঘটনা বেশি ঘটছে

        সিরাজগঞ্জে মূলহোতাসহ ৫ প্রিজাইডিং অফিসার গ্রেপ্তার

        ভারতের লোকসভা নির্বাচনের তৃতীয় দফার ভোট আজ

        মাসজুড়ে টানা তাপপ্রবাহে নতুন রেকর্ড গড়েছে চলতি বছরের এপ্রিল মাস

ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনঃ

ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলনঃ

শুধু শাহবাগে নয়, প্রতিটি পরিবারে, পাড়ায়, মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলুন ধর্ষণ বিরোধী। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে জলাশয়- কোথায় হচ্ছে না ধর্ষণ? পাঁচ বছরের শিশু থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, কেউই এসব জানোয়ারদের ছোবল থেকে বাঁচতে পারছে না। কিছু দিন আগে মেয়ের ধর্ষণের বিচার না পেয়ে মেয়েকে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন একজন বাবা। আর বাকিরা যারা বেঁচে আছে, তারা না মরে বেঁচে আছে ঠিক যেমনটি বেঁচে আছে তনুর মতো কন্যাদের বাবারা ।
আমাদের অন্যায্য পুরুষ শাষিত সমাজে ধর্ষকরা নন্দিত, ধর্ষিতারা নিন্দিত। ধর্ষনের সমস্ত দায়ভার, সমস্ত লজ্জ্বা, সমস্ত অপমান আর উপহাসের ভারী পাহাড় সমাজ তুলে দেয় নারীর উপর, আর পশুর ন্যায় ধর্ষক পুরুষরা পৈশাচিক অত্যাচার করেও তাদের ক্ষমতা, উপর তালার মানুষদের সহযোগিতা আর অর্থের বলে পার পেয়ে যায় তাদের অপরাধ থেকে। সমাজে লজ্জিত, লাঞ্ছিত হয় ধর্ষিতা নারী, অত্যাচারিত হয়েও মুখ ঢেকে চলতে হয় সমাজের উপহাস এড়াতে- কারণ কলঙ্ক শুধু নারীর জন্য, পুরুষের জন্য নয়। সমাজের এই কলঙ্কজনক পরিস্থিতির মোকাবেলা সম্মিলিতভাবে না করা পর্যন্ত সমাজে, দেশে এসব অত্যাচার চলতে থাকবেই। সামাজিক অবহেলায় তিল তিল করে মরে যাওয়া ধর্ষিতা্দের অভিশাপগ্রস্ত দেশটির নাম বাংলাদেশ। মাঝে মাঝে ভয় হয়, ধর্ষকের অভয়ারণ্য কি হয়ে যাচ্ছে আমার আপনার প্রিয় বাংলাদেশ !
যারা আমাদের চারপাশের সমাজকে নারীর বসবাসের অযোগ্য করে যাচ্ছে, মানুষ নামের সেই সব হিংস্র পশুদের আর ছাড় দেবেন না- এই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞ। প্রতিটি মানুষ মেরুদন্ড সোজা করে এদের বিরুদ্ধে দাঁড়ান, যারা ভাবে ধর্ষণ করার লাইসেন্স তাদেরকে বিত্তবান পিতা বা বিচারহীন সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্র তাদেরকে দিয়েছে। যেহেতু রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থা চোখে ঠুলি আর মুখে কুলুপ দিয়ে বসে আছে তাই আমাদের সন্তানের দায়িত্ব আমাদেরকেই নিতে হবে ।
ধর্ষণ প্রতিটি নারীর মেধা, বল, আশা, স্বপ্ন, লক্ষ্য, ও সম্ভ্রমকে ধূলায় মিশিয়ে দেয়। ধর্ষিতা মায়ের সন্তানের বেদনা, ধর্ষিতা বোনের ভাইয়ের কষ্ট, ধর্ষিতা কন্যার পিতার শোক, নারীর সর্বস্ব হারানো অপরিমেয় মরম-জ্বালা উপলব্ধি করার চেষ্টা করুন । বর্বর ধর্ষকদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলাতেই হবে।
গত ২৮ মার্চ জন্মদিনের পার্টিতে নিয়ে দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের এই মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ দেশের শীর্ষস্থানীয় অলঙ্কারের ব্র্যান্ড ‘আপন জুয়েলার্স’র মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে। নারীর সম্মানে যারা হাত দিয়েছে তাদের প্রতি ঘৃণা জানিয়ে আসুন প্রতিজ্ঞা করি কোনো নারী আর নিজেকে সাজাবে না “আপন জুয়েলার্স' অলঙ্কারে”- যদি সেই অলংকার বিনামূল্যেও হয় , তবুও না।ঠিক তেমনি ভাবে ধর্ষক ও ধর্ষক পরিবারকেও সামাজিকভাবে প্রত্যাখ্যান করুন| পৃথিবীর যেই প্রান্তেই তারা পালাক না কেন তাঁদেরকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করুন|
আমরা যদি একটু পিছনের দিকে দেখি একটা সময় নারীর প্রতি “এসিড সন্ত্রাস” একটা মারাত্মক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছিল| তথ্য উপাত্ত অনুসারে বাংলাদেশে প্রথম এসিড সন্ত্রাস ঘটনা ঘটে ১৯৬৭ সালে। এর পর আবার এসিড সন্ত্রাস আলোচনায় আসে ১৯৯৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বরে শামিমার নামক এক ১৪ বছর বয়সীর প্রতি এসিড নিক্ষেপ করায়। এসিড সারভাইভাল ফাউন্ডেশনের হিসাবে ১৯৯৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ৩ হাজারেরও বেশি এসিড হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল ২০০২ সাল। ওই বছর ৫০০টি এসিড হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকেই হামলার ঘটনা কমতে থাকে। ২০১১ সালে ৯১টি ও ২০১২ সালে ৭১টি হামলা হয়েছে। ২০০২ সালে বাংলাদেশ সরকার এসিড সন্ত্রাস দমনে কঠোর আইন প্রণয়ন করে। অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের পাশাপাশি এসিডের ব্যবহার, মজুত ও বিক্রির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এসিড নিক্ষেপকারীর জামিন নামঞ্জুর ও এক বছরের মধ্যে তাদের বিচার শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়, আগে যেখানে বছরের পর বছর লেগে যেত। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তি দেয়ায় বিধান করা হয়েছে। বাংলাদেশের দণ্ডবিধি অনুযায়ী এসিড ছোড়ার শাস্তি হিসেবে রয়েছে সর্বনিন্ম ৭-১২বছরের জেল বা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
এই পরিসংখ্যানে দেখলে বুঝা যায় বাংলাদেশের এসিড নিক্ষেপের ঘটনা যেভাবে কঠোর হাতে দমন করা হয়েছ দেরিতে হলেও, তাহলে ধর্ষনের ক্ষেত্রে কেন হচ্ছে না ? নাকি আরো কিছু নারীর অভিশাপে অভিশপ্ত হতে হবে আমাদের? আমি এটাও স্বীকার করছি, আইন বিদ্যমান থাকলেও অনেক সময় আইনের অপর্যাপ্ত প্রয়োগ না করার কারনে এসিড নিক্ষেপকারী দিব্যি ঘুরে বেড়ায়। তার পরেও এসিড সন্ত্রাস শূন্যের কোঠাতে না নামলে ও অনেক মাত্রায় নিবারণ করা হয়েছে । যে হারে ধর্ষনের মাত্রা বাড়ছে এটা একটা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়ে গিয়েছে । নারীকে ঘরে বসিয়ে রাখলে বা ছালার বস্তা পড়িয়ে রাখলেও যারা শকুন তাদের চোখ ঠিক খুঁজে বের করবেই। এদের প্রতিহত করতে পারে শুধু মাত্র মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে । এই সব ধর্ষিতারা আমার আপনার সন্তান নয়, কিন্তু তাতে কি? কাল যে এই বিষাক্ত সাপের ছোবল থেকে আপনার সন্তানকে বাঁচাতে পারবেন তার কি কোন নিশ্চয়তা আছে? এবার যদি এই বিত্তশালী পিতার কুপুত্ররা রেহাই পেয়ে যায়, তবে বলবো সামনের দিন আরো ভয়াভয়! তাই আর দেরি নয়, আসুন আমাদের সমাজের নারীদের সম্মান, তাদের স্বপ্নের সূর্য্য স্নাত দিন আর চন্দ্রিমার আলোয় স্নাত নিরাপদ রাত আমরা ফিরিয়ে আনবোই।
ধন্যবাদ সমস্ত সংবাদ মাধ্যম কে/সংবাদ কর্মীকে যারা ধর্ষিতার ছবি প্রকাশ করেননি ।

ভার্জিনিয়া

শেয়ার করুন

পাঠকের মতামত