প্রবাসী আয় বাড়ায় প্রায় দুই মাস পর বাংলাদেশের রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন
প্রবাসী আয় বাড়ায় প্রায় দুই মাস পর বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতিতে বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। এক সপ্তাহ আগেও রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১৯ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার।
তথ্য বলছে, গত মাসের শুরুর দিকে অর্থাৎ ২ অক্টোবর গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৪ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন এবং বিপিএম-৬ ছিল ১৯ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন। গত ৬ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ বেড়ে ২ হাজার ৫৭৩ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৫ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার দাঁড়ায়। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২ হাজার কোটি ডলার (২০ বিলিয়ন)।
গ্রস রিজার্ভ ও বিপিএম-৬-এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেয়, প্রকাশ করে না। চলতি বছর ৬ নভেম্বর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ (এনআইআর) আছে ১ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের মতো। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম তিন মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। একটি দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক হলো বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ বা রিজার্ভ।
চলতি মাসে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি দায় বাবদ ১৫০ কোটি ডলার পরিশোধ করা হবে। ফলে রিজার্ভ কিছুটা কমে যাবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানান, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বাড়ছে এটা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক দিক। আশা করছি রেমিট্যান্স বাড়ার এ প্রবাহ আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
আকু দায় পরিশোধ প্রসঙ্গে তিনি জানান, এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। প্রতি দুই মাস অন্তর আমাদের এ দায় পরিশোধ করতে হয়। যখন বিলটি পরিশোধ করা হয়, তখন রিজার্ভ কমবে এটা স্বাভাবিক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে ১৯০ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা ছিল গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এরপর নতুন সরকার গঠনের পর আবার দেশ গঠনে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি। এর ফলে আবারও প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করে। আগস্ট মাসে দেশে প্রবাসী আয় বেড়ে দাঁড়ায় ২২২ কোটি মার্কিন ডলারে (২ দশমিক ২২ বিলিয়ন)।
গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ (২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৮ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২০ টাকা ধরে)। কোনো একক মাসে এত প্রবাসী আয় গত চার বছরে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে গত জুন মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৫৪ কোটি ডলার এবং তারও আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন