নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন
নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে তাদের উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পরেও তিনি চুপ নেই। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেশ সংস্কারের কথা বলছেন। চলমান নানা ইস্যু নিয়ে নিয়মিত নিজের মতামত ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
নির্মাতার এসব পোস্ট নিয়ে সংবাদমাধ্যমে নিউজ করা নিয়েও ফারুকীকে মন্তব্য প্রকাশ করে পোস্ট করতে দেখা গেছে। এবার তিনি নিজেই তার পোস্ট করা একটি স্ট্যাটাসকে নিউজ করার অনুমতি দিয়ে হেডলাইন ঠিক করে দিলেন।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফারুকী তার সাম্প্রতিক একটি পোস্ট রিপোস্ট করেন। এসময় তিনি লেখেন, ‘পত্রিকারগুলার উদ্দেশ্যে এই লেখাটা উন্মুক্ত করে দিলাম। এটা ছাপতে পারেন।
শিরোনাম দিবেন প্লিজঃ “বিএনপি ঠেকানোর নামে যেভাবে আমরা হাসিনাকে মনস্টার বানালাম”।’
এর আগে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিজের ফেসবুকে দীর্ঘ একটি পোস্ট করেছিলেন ফারুকী।
সে পোস্টের লেখার শুরুতে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে এই নির্মাতা বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে আমরা কীভাবে মনস্টার হয়ে উঠতে সাহায্য করলাম? কারা তাকে মনস্টার বানাল? সহজ উত্তর- বাংলাদেশের সো কলড নাগরিক সমাজ। ‘বিএনপি ঠেকাও’ (যদিও তারা মুখে বলতো বিএনপি-জামাত, কিন্তু ভেতরে ভেতরে তারা জানতো ভোটে জেতার সক্ষমতা বিএনপির বেশি, তাই বিটুইন দ্য লাইন ছিল বিএনপিই) মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ নাগরিক সমাজ হাসিনাকে যা ইচ্ছা তা করার লাইসেন্স দিয়েছে। এই আত্মসমালোচনাটা বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ যদি না করে তাহলে ভবিষ্যতেও আমরা এইরকম মনস্টার জন্ম দিতেই থাকব। আমরা মুখে গণতন্ত্র বলি, কিন্তু আমাদের বগল মে ‘ঠেকাঠেকি’!’
ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মাধ্যমে, কাউকে ঠেকানোটা আদি পাপ বলে মনে করেন ফারুকী।
তার ভাষায়, ‘দেখেন, যে কেউ যে কাউকে ঠেকাতে চাইতেই পারে।
এটা তার গণতান্ত্রিক অধিকার। এর জন্য সে প্রচার চালাতে পারে, জনমত গঠন করতে পারে। কিন্তু গোলমাল দেখা দেয় যখন এই ঠেকাঠেকিটা করা হয় ভোট ডাকাতি বা ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মাধ্যমে।
আমাদের আদি পাপ এখানে। এই ঠেকাঠেকি অধিদপ্তর থেকেই গুম-খুন-ব্যাংক লুট-লক্ষ কোটি টাকা পাচার-রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করার লাইসেন্স বা সম্মতি দেয়া হইছিল শেখ হাসিনাকে।’
উদাহরণ টেনে ফারুকী আরও বলেন, ‘সময় আসছে বোঝার বাংলাদেশের মানুষ জানে কখন কাকে ঠেকাতে হবে। ৯৬ সালে সে বিএনপিকে ঠেকায় নাই? ২০০১ সালে আওয়ামী লীগকে ঠেকায় নাই?
২০০৮ সালে আবার বিএনপিকে ঠেকায় নাই? তারপরতো আর জনগণকে সুযোগই দেয়া হয় নাই। ফলে সময় এসেছে ঠেকাঠেকির দায়িত্ব জনগণের হাতে তুলে দিয়ে এই আদিপাপ থেকে বের হয়ে আসার।’
প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে প্রশ্নের উত্তর ব্যাখ্যা করেছেন ফারুকী। তার মতে, ‘প্রশ্ন আসতে পারে, জনগণ যদি ভুল লোককে নির্বাচিত করে? ভুল শক্তি সরকারে আসে?
গরিষ্ঠের শাসন মানলে আপনাকে এটা মেনে নিতেই হবে। মেনে নিয়ে আপনি ভুল লোকের ভুল কাজের তীব্র সমালোচনা করবেন, প্রতিবাদ করবেন, আদালতে যাবেন! তাকে লাইনে রাখার জন্য যা যা করা দরকার সবই করবেন এবং পরের ভোটে ঠেকিয়ে দিবেন। এটার নামই গণতন্ত্র।’
‘আর তা না করে আপনি যদি মনে করেন আমরা আর আমার কতিপয় অনুসারীই দেশের ভালো কিসে হবে সেটা সবচেয়ে ভালো বুঝি, তাহলে আপনি আরেকটা হাসিনা হয়ে উঠার প্রক্রিয়ায় আছেন। কানে বাজে এখনো তার কথা, ‘আমার চেয়ে এই দেশের ভালো কে বেশি বোঝে?’ বলেন ফারুকী।
এলএবাংলাটাইমস/আইটিএলএস
শেয়ার করুন